বরগুনায় কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করার পর বাবাকে হত্যার ঘটনায় শোকে স্তব্ধ পরিবারটির সঙ্গে কথা বলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সময় তিনি ভুক্তভোগী পরিবারটিকে ন্যায়বিচার পেতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এ ছাড়া পরিবারটিকে সার্বিক সহায়তা দিয়ে বিএনপি সব সময় পাশে থাকবে বলেও জানান তিনি।

বরগুনা পৌর এলাকার ওই পরিবারটি বলছে, ৪ মার্চ বিকেলে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে সপ্তম শ্রেণিতে পড়া কিশোরীকে (১৪) এক বখাটের নেতৃত্বে কয়েকজন অপহরণ করে। এরপর তাকে ধর্ষণ করা হয়। পরের দিন সকালে ওই কিশোরীকে স্থানীয় পার্কে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা (৩৭) ওই দিন রাতেই বরগুনা সদর থানায় সিজিত রায়সহ দুজনের নামে ধর্ষণের মামলা করেন। এরপর ১১ মার্চ কর্মস্থলে গিয়ে নিখোঁজ হন কিশোরীর বাবা। ওই দিন রাত সোয়া ১২টার দিকে বাড়ির পাশের ঝোপে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ভুক্তভোগী পরিবারটির বাড়িতে উপস্থিত হন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান। এরপর মুঠোফোনে ওই কিশোরীর মায়ের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আরও পড়ুন‘পোলারে মাইর‍্যা ফালাইছে, নাতনিডার জীবনও শ্যাষ করলো’৭ ঘণ্টা আগে

প্রায় চার মিনিটের কথোপকথনে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনারা এই বাংলাদেশেরই মানুষ। আপনাদের সাথে যে অন্যায় হয়েছে, আমাদের দল আপনার পরিবার এবং আপনার পাশে থাকবে। যতটুকু সম্ভব আপনারা যাতে ন্যায়বিচার পান, আমাদের দিক থেকে আমরা সেই সর্বোচ্চ চেষ্টাটুকু করব। আমরা চেষ্টা করব আমাদের অবস্থান থেকে আপনাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আপনি ভয় পাবেন না। দেশের মানুষ আপনার পাশে আছে, বিএনপি আপনার পাশে আছে। ভয় পাবেন না আপনি।’

মেয়েকে ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে স্বামী নিহত হয়েছেন, নিরাপত্তা নেই, তিনটি সন্তান নিয়ে এখন কী করবেন—ভুক্তভোগী কিশোরীর মায়ের এমন প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের দলের আরও সিনিয়র নেতাদের আমরা বলেছি আপনার ওখানে যাবে, কথা বলবে এবং আপনার কী কী সহযোগিতা প্রয়োজন আমাদের বলবেন। কতটুকু পারব জানি না, তবে আমরা অবশ্যই চেষ্টা করব আপনার পাশে দাঁড়াতে। আপনি যাতে আপনার আইনের শাসন পান, ন্যায়বিচার পান সে জন্য আমার দলের যাঁরা উকিল আছেন তাঁদের আমরা সেভাবেই নির্দেশনা দেব। যাতে আইনগতভাবেও আপনাকে সহযোগিতা করা যায়।’

নিহতের ঘটনার ছয় দিন পার হলেও কোনো আসামি ধরা পড়েনি—এমন কথার জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনি টেনশন কইরেন না, আমরা দেখি আপনার জন্য কী ব্যবস্থা করতে পারি। বাচ্চাদের নিয়ে যে টেনশনে আছেন, ইনশা আল্লাহ আমরা একটা ব্যবস্থা করব আপনার জন্য।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন আপন র প শ আম দ র পর ব র বরগ ন ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে

মাদারীপুরে মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে মাদারীপুরে শশুরবাড়িতে আছেন। ভিনদেশি যুবককে দেখার জন্য ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছেন।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়। মেঝ সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট বোন আরিফা (৬)। 

চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং এর ছেলে শি তিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় শি তিয়ান জিং। তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে। 

আরো পড়ুন:

‘একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল’

এক বিয়ের বরযাত্রী খেয়ে ফেলল অন্য বিয়ের খাবার

শি তিয়ান জিংকে টিকটকে দেখেন সুমাইয়া। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান- প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন। 

সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে মানুষ ভিড় করতে থাকে।  

সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসছি। আমি বিশ্বাস করিনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি।’’ 

সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন, ‘‘ও ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। তারাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন।’’ 

সুমাইয়া বলেন, ‘‘এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। শি তিয়ান জিং এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এর মধ্যে আমার কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’ 

শি তিয়ান জিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।’’ 

সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘শি তিয়ান জিং আমাদের এখানে আছে। ও খুব ভালো ছেলে। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। আমরা খুব খুশি।’’ 

পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল হাওলাদার জানান, প্রথমে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাবে। 

ঢাকা/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও হতাশায় ডুবিয়ে এগিয়ে গেল পাকিস্তান
  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল
  • হেনরির ৬ উইকেটের পর দুই ওপেনারে নিউজিল্যান্ডের দিন
  • অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
  • নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
  • যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
  • প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে