স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার জামিন চেয়ে জেলহাজতে বাদী
Published: 24th, March 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামির জামিন চাওয়ায় বাদীকে হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ ঘটনা ঘটেছে। পাঁচ ঘণ্টা হাজতবাসের পর মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পান মামলার বাদী, হাটহাজারী থানার চন্দ্রপুর গ্রামের তসলিমা বেগম। গত বছরের ৩১ আগস্ট হাটহাজারী থানায় মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলায় ৬৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৬০ জনকে আসামি করা হয়। গত ৫ আগস্ট তাঁর স্বামী জামাল মোল্লাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে।
আদালত সূত্র জানায়, তসলিমার মামলায় আবুল মনসুর ও হাসান নামে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। আবুল মনসুর হাটহাজারীর ধলই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। তাঁকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে হামলারও শিকার হয় পুলিশ। সোমবার তাদের জামিন শুনানির সময় আসামিদের জামিনে আপত্তি নেই বলে জানান বাদী তসলিমা বেগম। এর আগে আবুল মনসুর ও হাসানসহ আরও ৩১ আসামি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় বলে আদালতে হলফনামা জমা দেন তিনি।
শুনানির সময় বিচারক বাদীর কাছে জানতে চান, মামলা করলেন কেন? আবার ৩১ আসামির নামে হলফনামা দিলেন কেন? এখন জানালেন জামিনে আপত্তি নেই। বাদী কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে বিচারক বাদীকে হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পাঁচ ঘণ্টা হাজতবাসের পর ভবিষ্যতে আর এই ধরনের কাজ করবেন না বলে আদালতে লিখিত মুচলেকা দেন বাদী। পরে আদালত তাকে ছেড়ে দেন।
চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক বলেন, হাটহাজারীর একটি মামলায় গ্রেপ্তার আসামি আবুল মনসুর ও হাসানের জামিনের আবেদন করা হয় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। কয়েক মাস আগে এই দুইজনসহ ৩১ জন আসামি ঘটনায় জড়িত নন দাবি করে হলফনামা দেন বাদী তসলিমা আক্তার। পরে বিচারক বাদীকে হাজতে পাঠানো আদেশ দেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব চ ছ স বক ল গ তসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই আন্দোলনে হামলা মামলার আসামিও হলেন বাদী
গত বছরের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে হামলার অভিযোগে করা একটি মামলায় আসামি করা হয়েছে তাঁকে। তিনিই আবার ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। তাঁর নাম কফিল উদ্দিন। পুলিশ জানায়, অস্ত্র, মাদক আইনে তিনটি মামলা রয়েছে কফিলের বিরুদ্ধে।
শুধু কফিল নন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হামলার অভিযোগে করা মামলার অন্তত ২০ জন বাদীর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। নানা ত্রুটিতে ভরা তাঁদের দায়ের করা মামলার এজাহার। অনেক আসামিকে চেনেন না স্বয়ং বাদী। মামলা থেকে বাদ যাননি চিকিৎসার জন্য বিদেশে থাকা লোকজনও।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় চট্টগ্রামে মামলা হয়েছে ১৪৮টি। এসব মামলায় ঢালাও আসামি করার অভিযোগ ওঠে শুরু থেকেই। তদন্ত চলা অবস্থায় একের পর এক আসামির নাম বাদ দিতে বাদীরা আদালতে আবেদন শুরু করেন। হলফনামা দিয়ে বাদীরা বলছেন ‘ভুলবশত’ আসামি করা হয়েছে। আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ৪০ মামলা থেকে ৬৭৫ জন আসামির নাম বাদ দিতে আদালতে গেছেন বাদীরা। এ জন্য তাঁরা ৩৫৪টি আবেদন ও হলফনামা দিয়েছেন।
কফিল উদ্দিন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক উপঅর্থবিষয়ক সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরীর অনুসারী। গত বছরের ১০ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় ২৭৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন মো. রাইয়ান নামের এক ছাত্র। সেখানে কফিলকে ২৩ নম্বর আসামি করা হয়।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রামে হামলা, হামলার পরিকল্পনা ও হামলার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ এনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ১৮৭ জনের বিরুদ্ধে ১৯ নভেম্বর মামলা করেন সেই কফিল উদ্দিন। সেখানে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী রাইয়ানকে আসামি করেন। কফিল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সরকারের অত্যাচারের প্রতিবাদ করেছেন। কোনো সুবিধার জন্য মামলা করেননি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত বছরের ১৮ জুলাই নগরের বহদ্দারহাট এলাকায় গুলিতে আহত হওয়ার পর মারা যান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়া। ওই ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ ৭০০ জনের বিরুদ্ধে ২০ সেপ্টেম্বর মামলা হয়েছে। তবে যিনি এই মামলার বাদী তাঁর নিজের বিরুদ্ধেই মাদক, মারামারি, এবং পরিবেশ আইনে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে কমপক্ষে পাঁচটি মামলা রয়েছে। নিহত হৃদয় চন্দ্র ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না বাদী আজিজুল হকের। হৃদয় পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ঘটকের আন্দুয়া গ্রামের রতন চন্দ্র তরুয়া ও অর্চনা রানীর ছেলে।
জুলাই আন্দোলনের সময় অস্ত্র হাতে হামলাকারীরা। চট্টগ্রামের আসকারদীঘির পাড়ে