ঘরের চালায় ঢিল দিতে বাধা দেওয়ার জের, টেঁটাবিদ্ধ হয়ে নারীর মৃত্যু
Published: 6th, April 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে রোকেয়া বেগম নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ওই নারী। রোকেয়া বেগম (৫০) উপজেলার ধরমণ্ডল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কলমদর পাড়ার রইছ মিয়ার স্ত্রী। ওই নারীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধরমণ্ডল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.
ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, ঘরে চালায় ঢিল ছুড়তে বাধা দেওয়ায় ১ এপ্রিল রাতে বদরুল ইসলাম নামে এক যুবক রোকেয়া বেগমকে টেঁটা দিয়ে আঘাত করে। বদরুল একই এলাকার ছিপত আলীর ছেলে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ধরমণ্ডল ইউনিয়নের কলমদর পাড়ার যুবক বদরুল প্রায়ই রোকেয়ার ঘরে ইট দিয়ে ঢিল ছুড়ত। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার বিচার সালিশও হয়েছে। গত ১ এপ্রিল রাতে ঘরের চালে ঢিল মারে। এতে ঘরে থাকা শিশুরা আতঙ্কিত হয়ে পড়লে রোকেয়ার ছেলে সেলিম মিয়া বের হয়ে প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু বদরুল কোনো কথায় কর্ণপাত না করে আবারো ঢিল ছুড়তে চাইলে দু’জনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে বদরুলের হাতে থাকা টেঁটা দিয়ে সেলিমকে আঘাত করতে আসে। এ সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা রোকেয়া বেগম ছেলের সামনে চলে এলে তাঁর বুকে টেঁটাবিদ্ধ হয়। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল নেওয়া হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শনিবার রাতে মারা যান।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঘটনার পর বদরুলকে আটক করে গ্রাম পুলিশ ফরিদ মিয়ার জিম্মায় দেওয়া হয়। কিন্তু বদরুল কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে গ্রাম পুলিশ ফরিদ মিয়ার ভাষ্য, চেয়ারম্যানের নির্দেশে স্থানীয়রা বদরুলকে তাঁর কাছে ধরে এনেছিলেন। এর পর তিনি বদরুলকে চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের সামনে গিয়ে কথা বলার এক ফাঁকে বদরুল পালিয়ে যায়।
নাসিরনগর থানা ওসি মো. খায়রুল আলম বলেন, তিনি ঘটনা সম্পর্কে শুনেছেন। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ দিতে আসেনি। অভিযোগ পেলে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় বদর ল
এছাড়াও পড়ুন:
এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো: আনু মুহাম্মদ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো। আইএমএফের প্রভাবে বাজেটে স্থানীয় শিল্পে ভ্যাট অব্যাহতি হ্রাস পেয়েছে। ট্রাম্প সাহেবকে খুশি করার চেষ্টা ছিলো এই বাজেটে।
আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত ‘বাজেট: দেড় দশকের অভিজ্ঞতা ও অর্থনীতির গতিপথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আনু মুহাম্মদ বলেন, বাজেটে আয়ের জন্য ভ্যাট ট্যাক্স বাড়ানোর কথা বলা হয়। কিন্তু মার্কিন কোম্পানির কাছে আমাদের যে ক্ষতিপূরণ তা আদায় করতে হবে। মাগুরছড়া ও টেংরাটিলায় গ্যাস বিস্ফোরণে সম্পদ ও প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংসে যে ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ আদায়ের কোন সরকারই চেষ্টা করেনি। এই ক্ষতিপূরণ আদায় অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর ডিপি ওয়ার্লডের কাছে ছেড়ে দেওয়া তো শেখ হাসিনার প্রকল্প ছিল। ড. ইউনুস কেন তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাইছেন?
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য আনু মুহাম্মদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানে পরিবর্তনের যে আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছে, বর্তমান সরকারের বাজেটে সেই পরিবর্তনের সূচনা ঘটানোর কথা নেই। সম্পদ সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের কাছ থেকে গিয়ে কিছু মানুষের কাছে পুঞ্জীভূত হয়। এবারের বাজেটেও সেই প্রবণতা দেখা গেছে।
তিনি আরও বলেন, এবারের বাজেটে প্রতারণা ও অস্বচ্ছতার যে চিত্র ফুটে উঠেছে, সেটা অব্যাহত থাকুক আমরা চাই না। আগামী ২২ জুন বাজেট অনুমোদনের আগে এর ত্রুটিগুলো দূর করতে হবে। বাজেটে জাতীয় সক্ষমতা সৃষ্টির ন্যূনতম উদ্যোগ নিতে হবে।
সভায় আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ার ড. গোলাম রসুল বলেন, সত্যিকার অর্থে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এই বাজেটে তেমন কিছু নেই। কৃষিক্ষেত্রে বৈষম্য দিন দিন বাড়ছে। কৃষিকে আমরা নানাভাবে আন্ডার ভ্যালু করে দিচ্ছি। স্বাস্থ্যখাতে এবার জনপ্রতি বাজেট বেড়েছে ২২ টাকা।
ট্রাম্পের পালটা শুল্ক বিষয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার বুঝেও না বুঝার ভান করছে। এটা আমাদের বিশাল বিপদে ফেলবে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহা মির্জা, চিকিৎসক ডা. হারুণ অর রশীদ, লেখক-গবেষক প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা ও মাহতাব উদ্দীন আহমেদ।