কুমিল্লায় কিশোরীকে ডেকে নিয়ে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত ২৭ মার্চের এ ঘটনায় রোববার রিয়াজুল হক হামীম নামে এক তরুণকে প্রধান আসামি করে বুড়িচং থানায় মামলা করেছে ভুক্তভোগী।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, হামীমের সঙ্গে ওই কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই সূত্রে ২৭ মার্চ রাতে মোবাইল ফোনে কল করে তাকে দেখা করতে বলে হামীম। তার কথামতো ওই কিশোরী ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির পাশে যায়। সেখানে কথা বলার একপর্যায়ে তাকে কৌশলে পাশের মাছের খামার পাহারার ঘরে নিয়ে যায় হামীম এবং পানির সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে খাওয়ানোর পর তাকে ধর্ষণ করে।

ভুক্তভোগীর পরিবার জানান, মেয়ের কাছে বিস্তারিত শুনে হামীমের পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়। তারা হামীমের সঙ্গে ওই কিশোরীর বিয়ের আশ্বাস দেয়। ঈদুল ফিতরের পর বিষয়টি সমাধানের কথা ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে হামীম ও তার পরিবারের লোকজন এলাকা ছেড়ে গেছে।

বুড়িচং থানার ওসি আজিজুল হক জানান, হামীম ও তার পরিবারের তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

এদিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় এক শিশু ও এক পোশাককর্মী ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বোর্ডঘর এলাকায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন পোশাককর্মী। এ ঘটনায় তিনি শনিবার রাতে তিনজনের বিরুদ্ধে কালিয়াকৈর থানায় মামলা করেন। 

আসামিরা হলো– আলতাব, শাহিনুর ও স্বাক্ষর হোসেন। অপরদিকে পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সিয়াম হোসেন নামে এক তরুণকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। রোববার কালিয়াকৈর উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের জামালপুর চৌরাস্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় দশম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ইয়াকুব পারভেজ নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার উপজেলার হরগজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

ভুক্তভোগীর পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, হরগজ বাজারে একটি স্টুডিও রয়েছে ইয়াকুবের। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ওই ছাত্রী ছবি তোলার জন্য সেখানে যায়। এরপর পারভেজ কৌশলে কোমল পানীয়তে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে তাকে বিবস্ত্র করে মোবাইল ফোনে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। এরপর থেকে ছবি-ভিডিও ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে ইয়াকুব। এ ঘটনায় রোববার সকালে ইয়াকুবের বিরুদ্ধে সাটুরিয়া থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীর বাবা। এরপর দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

নেত্রকোনায় গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে আনোয়ার হোসেন নামে এক বাসামালিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার শহরের পারলা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে ভুক্তভোগীর করা মামলা তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় দোকানে ব্যাগ কিনতে যাওয়া কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। পরে অভিযোগ পেয়ে ওই দোকানে কাজ করা এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় শনিবার রাতেই দেবীগঞ্জ থানায় মামলা হয়। 

রাজবাড়ীর পাংশা থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, এসআই হিমাদ্রি হাওলাদারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার মামলা করেছেন এক নারী। রোববার রাজবাড়ী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি হয়। মামলার অপর আসামি পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের কাছারীপাড়া গ্রামের আরিফ হোসেন। আদালতের বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। 

পাংশা থানার ওসির দাবি, মামলার বাদী ও তার স্বামী অপহরণ মামলার আসামি। মামলা থেকে বাঁচতে কারও ইন্ধনে এই অভিযোগ করেছেন তিনি।

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি)

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর র পর ব র এ ঘটন য় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে ব্যবসায়ী জাকিরকে হত্যা করা হয়

রাজধানীর সবুজবাগের প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জাকির হোসেনের সঙ্গে থাকা আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতেই ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁকে ছয় টুকরা করে লাশ বস্তায় ঢুকিয়ে কাছের একটি ঝোপের ভেতরে পুঁতে রাখা হয়। এর আগে আজহারুল ইসলাম (গ্রেপ্তার) মুঠোফোনে সবুজবাগের ভাইগদিয়ায় তাঁর ভাড়া বাসায় জাকিরকে (৫৫) ডেকে নেন।

গ্রেপ্তার আজহারুল ইসলাম (৩৯) আজ শুক্রবার আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা বলেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। আদালত তাঁর জবানবন্দি নিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ ছাড়া এ হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার শুক্কুর আলী (৪৪), মো. রাজীব (২৬) ও স্বপনকে (২৫) পাঁচ দিন করে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গ্রেপ্তার শুক্কুর আলী পেশায় রাজমিস্ত্রি এবং বাকিরা রংমিস্ত্রি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সবুজবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সামছুল আমিন আজ প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার আজহারুল, শুক্কুর আলী, রাজীব ও স্বপন জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় দুপুরে তাঁদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে আজহারুল আদালত জবানবন্দি দেন। অপর তিনজন জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। পরে তাঁদের সাত দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্ত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আজহারুল আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, জাকির হোসেনের সঙ্গে তাঁদের চারজনের (আজহারুল, শুক্কুর আলী, রাজীব ও স্বপন) বন্ধুত্ব ছিল। তাঁরা একসঙ্গে আড্ডা দিতেন। মাঝেমধ্যে জাকিরের সঙ্গে তাঁর ভাইগদিয়ার ভাড়া বাসায় তাঁরা একসঙ্গে মদ্যপান করতেন। ৪ জুন রাতে জাকির নন্দীপাড়ায় শেখের বাজারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় ফিরছিলেন। তখন আজহারুল মুঠোফোনে জাকিরকে তাঁর বাসায় ডেকে নেন। ওই বাসায় আজহার একা থাকতেন। আগেই জাকির তাঁদের জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা আছে এবং ডেমরার আমুলিয়া পশুরহাট থেকে কোরবানির জন্য গরু কিনবেন। জাকির তাঁর বাসায় পৌঁছানোর পর ওই টাকার ওপর তাঁদের সবার লোভ জাগে। তাঁরা টাকা ছিনিয়ে নিতে গেলে জাকির বাধা দেন। তখন ইস্পাতের পাইপ দিয়ে জাকিরের মাথায় সজোরে আঘাত করেন আজহারুল। এতে জাকির অচেতন হয়ে যান। এ সময় তাঁর কাছ থেকে এক হাজার টাকার দুটি বান্ডিল ছিনিয়ে নিয়ে সেই টাকা শুক্কুর আলীর কাছে জমা রাখেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, আজহারুল আদালতকে জানান, জাকিরকে বাঁচিয়ে রাখা হলে তাঁরা সবাই ফেঁসে যাবেন—এমন আশঙ্কায় জাকিরকে হত্যা করে লাশ গুম করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জাকিরের শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। এরপর শুক্কুর, রাজীব ও স্বপন তাঁর শরীর টুকরা টুকরা করেন। পরে লাশের ছয়টি টুকরা রঙের দুটি পাত্রে ভরে একটি অটোরিকশায় করে দক্ষিণ ভাইগদিয়ায় নিয়ে যান। শুক্কুর, রাজীব ও স্বপন অন্য পথ দিয়ে দক্ষিণ ভাইগদিয়ায় আসেন। তখন তাঁরা সবাই মিলে বালতিভর্তি লাশের টুকরাগুলো পাশের ঝোপে নিয়ে যান। এরপর সেখানে খুঁড়ে লাশের টুকরাগুলো পুঁতে রাখেন।

আজহারুল আদালতকে বলেন, জাকিরের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া টাকা ভাগাভাগি করার আগেই তাঁরা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।

পুলিশ কর্মকর্তা সামছুল আমিন বলেন, আজহারুলের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাহেরচরে। বাকি তিনজন ঢাকার সবুজবাগের ভাইগদিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা।

প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জাকির হোসেন সপরিবার সবুজবাগ থানার ভাইগদিয়া এলাকায় থাকতেন। ৪ জুন জাকির হোসেন নিখোঁজ হন। এরপর স্বজনেরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাঁর সন্ধান পাননি। পরদিন জাকির নিখোঁজ রয়েছেন বলে তাঁর স্ত্রী রেখা বেগম সবুজবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর মধ্যে জাকিরের খোঁজ না পাওয়ায় তিনি ১০ জুন আজহার আলীসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সবুজবাগ থানায় একটি অপহরণের মামলা করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা সামছুল আমিন বলেন, এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এলাকার ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত আজহারুলকে শনাক্ত করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আজহারের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যায় জড়িত অভিযোগে গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অপর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রাতে জাকির হোসেনকে ভাইগদিয়ায় দাফন করা হয়।

সবুজবাগ থানার ওসি ইয়াছিন আলী প্রথম আলোকে বলেন, জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে জাকিরকে হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করলেও তদন্তে এখন পর্যন্ত এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। জাকির হত্যায় আরও একজন জড়িত। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুরনো স্বাদের ঝুরা মাংসের
  • ভাত খাওয়ার সময় কেন ভাতটাই পরে খেতে বলেন চিকিৎসকেরা?
  • অ্যান্টার্কটিকায় বিরল স্কুইডের সন্ধান
  • পানিতে ভাসছিল ২২ দিনের শিশুর মৃতদেহ, ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা
  • বাঁধন কাঁদলেন, কিন্তু কেন...
  • মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
  • আমাদের যত ঘুঘু 
  • বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচের নিয়ম পাল্টাচ্ছে এমসিসি
  • কমিটি নেই, সবাই নেতা
  • কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে ব্যবসায়ী জাকিরকে হত্যা করা হয়