নরসিংদীর চর‌আড়ালিয়ায় ষষ্ঠ শ্রেণির দুই ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর বাঘাইকান্দি গ্রামের কাজীবাড়ির মোড়ে রায়পুরা উপজেলার চর‌আড়ালিয়া ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণে এ মানববন্ধন হয়।
ধর্ষণের অভিযোগে ইমরান, রাজ্জাক, আব্দুর রহমান, সাইফুল মিয়া, রমজান, কাইয়ুম ও তার দুই সহযোগীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশে এত ধর্ষণ হচ্ছে কিন্তু অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের কোনো বিচার হচ্ছে না। পুলিশ কী করে? অনতিবিলম্বে ধর্ষণে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছেন তারা। হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তা না হলে জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে। আলটিমেটাম দিয়ে তারা বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষকদের আইনের আওতায় আনা না হলে রামপুরা থানাসহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করা হবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন চরআড়ালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জহিরুল ইসলাম জাজু, স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু মুসা, জেলা ছাত্রনেতা সাব্বির ভূঁইয়া, সাবেক চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান সরকার প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকেল ৩টার দিকে দুই বান্ধবী চরআড়ালিয়া গ্রামের কাইয়ুম ও মুন্নার সঙ্গে ঘুরতে বের হয়। তারা সারা বিকেল ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাযোগে বাঘাইকান্দি এলাকা থেকে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি এবং খাওয়া-দাওয়া করে। পূর্ব থেকেই কাইয়ুম ও মুন্না তাদের বন্ধুদের পূর্ব বাঘাইকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থাকতে বলে। সে অনুযায়ী অন্য বন্ধুরা স্কুলের সামনে অপেক্ষা করতে থাকে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে অটোরিকশাযোগে তাদের নিয়ে পূর্ব বাঘাইকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে যায় কাইয়ুম ও মুন্না। সেখানে যাওয়ার পর এক ছাত্রীকে জোর করে স্কুলের পাশে নিক্সন মেম্বারের বাড়ির ছাদে নিয়ে যায় ইসরাফিল, সাইখুল, রমজান ও কাইয়ুম এবং অপর ছাত্রীকে মুন্না, ইমরান, রাজ্জাক, আব্দুর রহমান নদীর পারে নিয়ে যায়। সেখানে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটায় অভিযুক্তরা। এ সময় ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী চিৎকার দিতে চাইলে ইট হাতে নিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যার হুমকি দেয়। পরে দুই ছাত্রী বাড়ি ফিরে গেলে অবস্থা দেখে স্বজনরা জানতে চাইলে ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ পায়। এ ঘটনায় রায়পুরা থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে দুটি মামলা করা হয়েছে।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী

বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে  মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থী,  শিক্ষক ও অভিভাবকরা। সমাবেশ শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়।

বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এই কর্মসুচিতে সিদ্ধিরগঞ্জের দেড় শতাধিক কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি  বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের হাতে " প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ এ বৈষম্য কেন? শিক্ষা উপদেষ্টা জবাব চাই" সহ বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড শোভা পায়।

সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বিল্লাল হোসেন রবিন, ঢাকা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি জি এইচ ফারুক, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন পরিচালক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো: সামসুজ্জামান, প্রধান সমন্বয়ক মো: সাইফুল ইসলাম রুবেল, মহাসচিব মো: সাখাওয়াত হোসেন খান, সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেন ঢালী, শিক্ষক কাওসার আহমেদ, এসএম বিজয়, আল মামুন , তরিকুল ইসলাম, বাহাউদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৭ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপনে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বেসরকারি, কিন্ডারগার্টেন ও এমপিও-বহির্ভূত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত ও হতাশ হয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, “আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। অথচ কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত কোমলমতি শিশুদের বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে তাদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে।”

তারা বলেন, দেশের প্রায় ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেনে প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে, যাদের একটি বড় অংশ দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আশায় এগিয়ে এসেছে। এখন এই সিদ্ধান্ত তাদের স্বপ্ন ও শ্রমের প্রতি অবিচার।

বক্তারা অভিযোগ করেন, সরকার বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা গড়ার অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে এই প্রজ্ঞাপন সেই প্রতিশ্রুতির পরিপন্থী। তারা প্রশ্ন তোলেন, “ই আই আই এন নম্বরধারী নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যদি এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়, তবে কেন নিবন্ধিত কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না?”

বক্তারা আরও বলেন ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন বাতিল করে সরকারি ও বেসরকারি সব প্রাথমিক শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোরা হবে।

মানববন্ধন ও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, ১নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি নেজাম উদ্দিন শাহীন, ২নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি জাকির উল্লাহ সুজুন, ৩নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: আজহারুল ইসলাম, ৫নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: শামীম, ৬নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: জাবের হোসেন, ৮নং ওয়ার্ড  প্রতিনিধি মো: আল আমিন, ১০ নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি এড: মো: খোরশেদ আলম প্রমুখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • অবকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে ববিতে মানববন্ধন
  • সিজু নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
  • মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরে মিছিল-সমাবেশ
  • নেত্রকোনায় বাবরকে নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মন্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন