রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।

এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।

তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।

মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।

পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।

তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।

পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’

জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ ক নঘর কল জ র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

কাছারিবাড়িতে হামলা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে, রবীন্দ্রস্মৃতিবিজড়িত  নিদর্শন নষ্ট হয়নি: সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র কাছারি বাড়িতে দর্শনার্থীকে মারধর, হামলা ও ভাঙচুরের বিবৃতি দিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। এ ঘটনায় রবীন্দ্রস্মৃতিবিজড়িত কোনো নিদর্শন নষ্ট হয়নি বলে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, হামলায় ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের বাইরে কোনো সাম্প্রদায়িক বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই ।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ও বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আজ থেকে কাছারিবাড়ি দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে বলেও ওই বিবৃতিতে জানানো হয়।

বিবৃতিতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বলেছে, কাছারিবাড়ি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক একটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি। প্রতিবছর কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত স্থানটি দর্শন করতে দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। ৮ জুন শাহজাদপুর রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির দায়িত্বরত কর্মচারী ও একজন দর্শনার্থীর মধ্যে পার্কিং টিকিট নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি ও কথা-কাটাকাটির জেরে হাতাহাতি ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাস্টডিয়ান হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে শাহনেওয়াজ নামে একজন দর্শনার্থীকে মারধর করে আটকে রাখার অভিযোগও পাওয়া যায় । এ বিষয়ে তদন্ত চলার মধ্যেই ১০ তারিখে শাহনেওয়াজের পক্ষে স্থানীয় কয়েকজন মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাস্টডিয়ান হাবিবুর রহমান ও অন্যান্য দায়ী কর্মচারীদের শাস্তির দাবি জানানো হয়। মানববন্ধন থেকে উত্তেজিত জনতা কাছারিবাড়ির কর্মচারীদের মারধর করার উদ্দেশ্যে সেখানে ঢোকে । সে সময় কাছারিবাড়িতে কর্মরত কয়েকজন কর্মচারী আহত হয়।

আরও পড়ুনদর্শনার্থীকে মারধরের প্রতিবাদে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির মিলনায়তনে ভাঙচুর১০ জুন ২০২৫

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, কাছারিবাড়িতে কবিগুরুর সম্মান বা মর্যাদাহানিকর কিছু ঘটেনি। কাছারিবাড়ির নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে । সম্প্রতি বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে গত ২৫ বৈশাখ কবিগুরুর ১৬৪ তম জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় ও আড়ম্বরপূর্ণভাবে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও নওগাঁর পতিসরে উদ্‌যাপিত হয়েছে বলেও ওই বিবৃতিতে জানানো হয়।

আরও পড়ুনশাহজাদপুরে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা, দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ১১ জুন ২০২৫আরও পড়ুনসিরাজগঞ্জে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত কাছারিবাড়িতে হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চায় ভারত১৫ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গৃহশ্রমিকদের সাপ্তাহিক ও মাতৃত্বকালীন ছুটি শ্রম আইনে রাখতে হবে
  • রূপগঞ্জে মামুন হত্যা : মাহবুবের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে মানববন্ধন
  • সাইক্লিস্ট হত্যার বিচার দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন
  • ৬ মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে ৩১টি পরিবার
  • ‘চট্টগ্রামে সাইক্লিস্ট ওসমানের মৃত্যু দুর্ঘটনা নয়, হত্যা’
  •  সোনারগাঁয়ে প্রাচীন স্থাপত্যকীর্তি কোম্পানিকা সেতু রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন
  • রাজশাহীতে বিএনপি নেতাকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল
  • পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী
  • সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি দুদিন পর দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে
  • কাছারিবাড়িতে হামলা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে, রবীন্দ্রস্মৃতিবিজড়িত  নিদর্শন নষ্ট হয়নি: সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়