রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বাড়িতে হামলার ঘটনায় মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি ও জেলা আহ্বায়ক ইমরান আহমেদকে সেনাবাহিনী জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

শনিবার (৩১ মে) রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর পায়রা চত্বরে তাদের আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। খবর পেয়ে রাত দেড়টার দিকে ঘটনাস্থলে ছুটে যান জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’র মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। তিনি সেখানে ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুমের সঙ্গে কথা বলেন।

পরে মিডিয়ায় ঘটনার বিষয়বস্তু নিয়ে কথা বলেন সারজিস আলম। তিনি জানান, সাংগঠনিক সফর শেষেই মধ্যরাতে রংপুর হয়ে ফিরছিলেন পঞ্চগড়ের পথে। তবে এমন ঘটনা শুনে তিনি নগরীর প্রাণকেন্দ্র পায়রা চত্বরে ছুটে যান। কথা বলেছেন দায়িত্বশীল সেনা কর্মকর্তার সাথে। 

তিনি আরো জানান, সেদিন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বাড়িতে যে হামলা হয়েছিল সেটির ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রশাসন যেন নিরপেক্ষ তদন্ত করে। তবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের উপর সেদিন শান্তিপূর্ণ মিছিলে জাতীয় পার্টি প্রথমে হামলা চালিয়ে ছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

একই সাথে বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে জাতীয় পার্টি দোসর হিসেবে থেকে হাসিনার লুটপাটের ক্ষমতা জায়েজ করেছিল। তাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের ন্যায় জাতীয় পার্টিরও বিচার হওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।

ঘটনাস্থলে কিছু সময় থেকে পরিস্থিতি নিয়ে সেনাবাহিনীর সাথে আলাপচারিতা শেষে ফের পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে চলে যান সারজিস আলম।

এর আগে, জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়েরের আবেদন করে ফিরছিলেন ওই দুই ছাত্রনেতা। হামলার ঘটনায় তাদের সংগঠনের কেউ জড়িত কি না জানতে ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্র দেখিয়ে জিজ্ঞেস করে সেনাবাহিনী।

এসময় বিএনপির মহানগর আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন ও জেলা সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকুকেও ঘটনাস্থলে ডাকা হয়। এখবর মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে গুঞ্জন সৃষ্টি হয় পুরো শহরজুড়ে।

রংপুর মহানগর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি জানান, সেনাবাহিনী তাদের অবস্থান জানতে চাইলে তারা পায়রা চত্বরেই ছিলেন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করতে বলেন।

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু জানান, সেনাবাহিনী তাদের ফোন দিয়ে পায়রা চত্বরে ডেকে ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে জানতে চায়, সেদিনের হামলায় বিএনপির কেউ জড়িত কি না।

উল্লেখ্য, এর আগে রাত সাড়ে ১১টার দিকে এনসিপির রংপুর জেলা সংগঠক আলমগীর রহমান নয়ন, জি এম কাদের ও রংপুরের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাসহ জাতীয় পার্টির ১৮ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা আবেদন করেন।

ঢাকা/আমিরুল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ত কর

এছাড়াও পড়ুন:

অভিযানেও বন্ধ হয়নি বাড়তি হাসিল আদায়

উল্লাপাড়ায় পশুর হাটে ক্রেতার কাছ থেকে অতিরিক্ত হাসিল (কর) আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ পেয়ে প্রশাসন হাটে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করছে। তারা চলে গেলে ফের শুরু হয় অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের কর্মযজ্ঞ। তবে রসিদ দেওয়া হচ্ছে না ক্রেতাকে। 
প্রশাসন অনুমোদিত হাটবাজারের হাসিল আদায়ের তালিকা অনুযায়ী, একটি গরুর জন্য ৪০০ ও একটি ছাগলের জন্য ৬০ টাকা আদায় করা যাবে। হাটবাজার ইজারাদার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন হাটে ক্রেতার কাছ থেকে অতিরিক্ত হাসিল আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একটি গরু থেকে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকাও আদায় করা হচ্ছে। ছাগল থেকে নেওয়া হচ্ছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা। 
কাশিনাথপুর গ্রামের আবদুল আজিজ রোববার জনতার হাটে যান ষাঁড় কিনতে। তাঁর কাছ থেকে ৬০০ টাকা হাসিল নেওয়া হয়েছে। অথচ গরুপ্রতি হাসিল বেঁধে দেওয়া হয়েছে ৪০০ টাকা। ইজারাদার অতিরিক্ত টাকা নিলেও রসিদে তা লেখেননি।   
গাজীপুর উপজেলার তেলকুপি গ্রাম থেকে বোয়ালিয়া হাটে গরু কিনতে এসেছিলেন আলাউদ্দিন। তিনি একটি ষাঁড় গরু কিনে হাসিল দিয়েছেন ৮০০ টাকা। পাটধারী গ্রামের তানভীর আলমের কাছ থেকে হাসিল নেওয়া হয়েছে এক হাজার টাকা। 
গত শনিবার জনতা হাটে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ইজারাদার রুহুল আমিনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত। গত রোববার বোয়ালিয়া হাটের ইজারাদার আনোয়ার হোসেন বুদ্দুকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের বিষয়ে জনতা হাটের ইজারাদার রুহুল আমিন বলেন, অনেক টাকা দিয়ে হাট ইজারা নিয়েছেন। গরু বাঁধার স্থান নির্ধারণ, বাঁশের খুঁটি দিয়ে আঁড় তৈরিসহ হাট প্রস্তুত করতেও বেশ টাকা খরচ হয়েছে। তার ওপর বৃষ্টির কারণে ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি কম হয়। এ কারণে একটু বেশি হাসিল আদায় করেছিলাম। 
বোয়ালিয়া হাটের ইজারাদার আনোয়ার হোসেন বুদ্দু জানান, হাট ব্যবস্থাপনায় খরচ বেড়েছে। তাই কিছু বাড়তি খাজনা নিয়েছিলেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশের পর সরকার নির্ধারিত মূল্যে হাসিল আদায় করছেন।
ইউএনও আবু সালেহ্‌ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, হাটে নজরদারি করা হচ্ছে। অভিযোগ পেলে  অভিযান চালিয়ে ইজারাদারদের জরিমানা করা হচ্ছে। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত অভিযান চলবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ