চব্বিশের বাংলায় চাঁদাবাজ ও খুনিদের ঠাঁই নেই: প্রিন্সিপাল মোসাদ্দে
Published: 12th, July 2025 GMT
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়ামের অন্যতম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেছেন, দেশব্যাপী খুন, ধর্ষণ, লুটতরাজ ও চাঁদাবাজি নিয়ে একটি দলের নাম বারবার উঠে আসছে। ধরা খেলে বহিষ্কার ছাড়া অপরাধের বিরুদ্ধে তারা কার্যত সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। বিএনপি দলীয় চাঁদাবাজ ও খুনীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। মিটফোর্ডের নারকীর, পৈশাচিক হামলা আইয়ামে জাহেলিয়াতকেও হার মানিয়েছে। চব্বিশের বাংলায় কোনো চাঁদাবাজ, ধর্ষক ও খুনীর ঠাঁই হবে না।
শনিবার (১২ জুলাই) বিকালে দেশব্যাপী চলমান ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, সহিংসতা ও সোহাগ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেন, ‘‘সব রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাইলেও বিএনপির বিরোধিতা আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করতে চাই- পিআর পদ্ধতিতেই আগামী নির্বাচন দিতে হবে।’’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা ক্ষমতায় যাননি। আপনাদেরকে ক্ষমতায় পাঠানো হয়েছে। দেশের ১৮ কোটি মানুষ আপনাদের পাশে থাকলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আপনারা বারবার ব্যর্থতার প্রমাণ দিয়েছেন। কঠোর হস্তে চাঁদাবাজ দমন করুন। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দেশের জনগণ বরদাশত করবে না।’’
মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেন, ‘‘পুরান ঢাকার এক ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগের কাছে চাঁদা না পেয়ে তাকে যুবদলের সন্ত্রাসীরা পাথর মেরে হত্যা করেছে। আমরা এ জঘন্য ও বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাই।’’
মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, ‘‘বিএনপি সারাদেশে যে অরাজকতা শুরু করেছে, তা সহ্য করার মতো নয়। আগামী নির্বাচনে সন্ত্রাসী দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ইফতেখার তারিক, আতিকুর রহমান মুজাহিদ, মাওলানা রেজাউল করীম আবরার, মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আবুল কাশেম, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, নুরুজ্জামান সরকার, কেএম শরীয়াতুল্লাহ, মুফতি ফরিদুল ইসলাম, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, হাফেজ শাহাদাত হোসাইন প্রধানীয়া প্রমুখ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ফেনীর বন্যা নিয়ন্ত্রণে রোডম্যাপ ঘোষণা না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
ফেনী ও আশপাশের জেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী ব্যবস্থা এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে ‘ঢাকাস্থ ফেনীবাসী’ নামে একটি নাগরিক সংগঠন। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ দাবি মানা না হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক ও রেলপথ অবরোধ এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে অবস্থানেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। ঢাকায় বসবাসরত ফেনী জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেন।
বন্যা নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, বিগত সরকার ফেনীর প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করেছে, যার ধারাবাহিকতা এখনো চলছে। উপদেষ্টারা সুন্দর সুন্দর কথা বলেন, কিন্তু কাজে তার প্রমাণ পাওয়া যায় না।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ফেনীবাসী ত্রাণ চায় না, অবিলম্বে বন্যা নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী ব্যবস্থা চায়। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে সরকারের ঘোষণা না এলে ফেনীবাসীকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। একই সঙ্গে ভারতীয় পানি আগ্রাসনের ব্যাপারেও সরকারের পদক্ষেপ দাবি করেন তিনি।
মানববন্ধনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘মিথ্যা আশ্বাস আমরা শুনতে চাই না। আর যেন যখন-তখন বন্যায় না ডোবে, সে ব্যবস্থা চাই।’
সভাপতির বক্তব্যে সরকারের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে ফেনীর ছাগলনাইয়া ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দিদারুল আলম মজুমদার বলেন, পানিসম্পদ উপদেষ্টা ও তাঁর মন্ত্রণালয় বন্যা নিয়ন্ত্রণে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন।
দিদারুল আলম বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের নামে বিপুল অঙ্কের টাকার অপচয় এবং দায়িত্ব অবহেলার জন্য উপদেষ্টা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের পদত্যাগ দাবি করছি। অবিলম্বে স্থায়ীভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনে রোডম্যাপ না হলে অবরোধসহ কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
মানববন্ধন থেকে সাতটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো বন্যা নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, যাতে উজানের পানি এসে ভাটি এলাকার বন্যার কারণ না হয়; ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী অঞ্চলের বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের রক্ষাকবচ বল্লামুখা বাঁধ ও মুছাপুর ক্লোজার অবিলম্বে পুনর্নির্মাণ; এই এলাকার শহর ও গ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে জলাধার উদ্ধার, পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা তৈরি, নদী খনন ও যত্রতত্র স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ; চব্বিশ সালের বন্যার পরে অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষিত এক হাজার কোটি টাকার পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ এবং সঠিক তথ্য যাচাই করে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান; বন্যা উপদ্রব এলাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিনতলা ভবন নির্মাণ, যাতে বন্যার সময় এগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা যায়; পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আইনের আওতায় এবং ভারতীয় পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও ফেনী নদীর পানি ভারতকে দেওয়া বন্ধ করা।
ফেনী কমিউনিটির মুখপাত্র বুরহান উদ্দিন ফয়সলের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) পরিচালক ও দাগনভূঞা উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি মেসবাহ উদ্দিন সাঈদ, ফেনী ফোরামের সহসভাপতি সাখাওয়াত হোসাইন, আইনজীবী জসিম উদ্দিন তালুকদার, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ নাজমুল হক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আজিম উদ্দিন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শাহ মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মনির উদ্দিন, পরশুরাম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন পলাশ, ফেনী সদর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন, শ্রমিক দল নেতা আবদুর রহিম, ফেনী এলিট ক্লাবের সভাপতি ফয়জুল্লাহ নোমানী, মনিপুর স্কুলের শিক্ষক রিয়াজুদ্দিন ও দেলোয়ার হোসেন, ফেনী সোসাইটি উত্তরার সহসাধারণ সম্পাদক এমরানুল হক, সোনালী ব্যাংকের সিবিএ নেতা ইউসুফ আলী, কর্মসংস্থান ব্যাংকের সিবিএ নেতা নাসিরুদ্দিন প্রমুখ।