এলাকায় একটিই খেলার মাঠ। পাশে দুইটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেই মাঠেই খেলাধুলা করতেন শিক্ষার্থী এবং এলাকার তরুণরা। এখন খেলার মাঠে নির্মাণ করা হচ্ছে মার্কেট। এতে খেলাধুলার স্থান হারিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে রাস্তায় নেমে মার্কেট নির্মাণের প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার কাপাশিয়া এলাকার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।

যাদের জন্য এই মার্কেট করা হচ্ছে, সেই ব্যবসায়ীরাও এসেছিলেন আন্দোলনকারীদের কাতারে। সবাই প্রতিবাদ করেছেন এমন সিদ্ধান্তের।

কাপাশিয়া এলাকায় কাটাখালী পৌরসভা এলাকাবাসীর আপত্তি উপেক্ষা করে সম্প্রতি মার্কেট নির্মাণের কাজও শুরু করে। পরে অবশ্য বাঁধার মুখে কাজ থেমে গেছে। পৌরসভার পরিকল্পনা অনুযায়ী, আপাতত একতলা হবে মার্কেটটি। পরবর্তীতে চারতলা পর্যন্ত সম্প্রসারণ হবে। থাকবে কমিউনিটি সেন্টারও।

আরো পড়ুন:

ঝালকাঠিতে কর্দমাক্ত রাস্তায় কচুগাছ লাগিয়ে প্রতিবাদ

চাটমোহরে সড়ক সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন 

এই মাঠটিতে একসময় সপ্তাহের দুইদিন পশুর হাট বসত। কয়েক বছর ধরে শুধু কোরবানির আগে পশুহাট বসত। ফাঁকা মাঠে সারাবছর খেলাধুলা চলত। এখন সব বন্ধ আছে।

সোমবার (৪ আগস্ট) সকাল ১১টায় কাপাশিয়া বাজারে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের পাশে মানববন্ধনের আয়োজন করে ‘কাপাশিয়ার সর্বস্তরের জনগণ’। এতে কাপাশিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং মহানগর বিজনেস অ্যান্ড টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা অংশ নেন। কাপাশিয়া বাজারের ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষও অংশ নেন কর্মসূচিতে।

মানববন্ধানে জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব আকুল হোসেন মিঠু বলেন, ‍‍“আমাদের এলাকায় আর একটাও খেলার মাঠ নেই। আমরা খেলার মাঠ হত্যা করে মার্কেট চাই না। কাপাশিয়া হাটের পাশেই সরকারি জায়গা আছে। সেখানে মার্কেট করা হোক। আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য খেলার মাঠ উন্মুক্ত চাই। এই মাঠ আমরা কোনোভাবেই নষ্ট হতে দেব না।”

কাপাশিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.

শাহজামাল বলেন, “খেলার মাঠ ধ্বংস মানে প্রজন্ম ধ্বংস। আমরা মাঠ চাই। আমাদের মাঠ ফিরিয়ে দেওয়া হোক। স্কুলের পাশে মাঠ থাকবে, সেখানে বাচ্চারা খেলাধুলা করবে। স্কুলের পাশে মার্কেট-কমিউনিটি সেন্টার হলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে। খেলাধুলা ছেড়ে যুবসমাজ মাদকের দিকে ধাবিত হবে। তাই এই মার্কেট নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

মহানগর বিজনেস অ্যান্ড টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ মকছেদ আলী বলেন, “একে একে সব খেলার মাঠ শেষ করে দেওয়া হয়েছে। এলাকার একমাত্র এই খেলার মাঠ আমরা হারিয়ে যেতে দেব না। এজন্য যা যা করা দরকার আমরা সবাই মিলে তাই করব।”

কাপাশিয়া বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব ইসলাম বলেন, “বাজার ছেড়ে স্কুলের পাশে গিয়ে খেলার মাঠে মার্কেট করা হচ্ছে। সেখানে মার্কেট হলেও কেউ যাবে না। ব্যবসায়ীদের লাভ হবে না। আবার খেলার মাঠটিও হারিয়ে যাচ্ছে। কার সিদ্ধান্তে কেন সেখানে মার্কেট করা হচ্ছে আমরা জানি না। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।”

স্থানীয় সমাজসেবক জিল্লুর রহমানের পরিচালনায় ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন- পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, ব্যবসায়ী রাজন ইসলাম।

কাটাখালী পৌরসভার সচিব সিরাজুম মুনীর বলেন, “আমার জানা মতে, এখন সেখানে কাজ বন্ধ আছে বাধার কারণেই। কাজ শুরুর আগেও বাধা এসেছিল। সে সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এলাকার লোকজনকে নিয়ে বসা হয়েছিল। তারপরই কাজ শুরু হয়। এখন আবার জটিলতা শুরু হয়েছে। একজন সাধারণ কর্মচারী হিসেবে আমার কিছু করার সুযোগ নেই।”

কাটাখালী পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ হাসান। এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে মার্কেট করা সম্ভব কি না, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “লোকজন বিপক্ষে না। কারা বিপক্ষে?” 

মানববন্ধনের কথা শুনে তিনি বলেন, “কাজ অনেকখানি হয়েছে। তারপর কাজটা কয়েকজন ব্যক্তির জন্য বন্ধ আছে। এটা সরকারি কাজ। লোকজন করতে দেবে না, এটা তো জানি না। বরং, মার্কেট নির্মাণের জন্য কয়েকজন আবেদনও করেছিলেন। কারা মানববন্ধন করেছেন, আমরা খোঁজখবর নেব।”

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র ক ট কর ম নববন ধ ব যবস য় প রসভ র র জন য এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

না’গঞ্জকে মেট্রোরেল প্রকল্প-২ এ সংযুক্ত করার দাবিতে নিসচার মানববন্ধন

রাজধানী ঢাকার সাথে মেট্রোরেল প্রকল্প-২ এ নারায়ণগঞ্জকে যুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে নিরাপদ সড়ক চাই নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।

সকালে নিরাপদ সড়ক চাই নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জায়েদুল ইসলাম মিয়ার হাতে স্মারকলিপি প্রদান করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।

মানববন্ধনে নিরাপদ সড়ক চাই নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম জামানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড: হাবিবুর রহমান, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হাসানউদৌলা, কার্যকরী সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, সদস্য আল আমিন, কাউসার আলম, ফারুক মৃধা, রফিকুল ইসলাম, ইব্রাহিম, রাজু আহাম্মদ, হুমায়ুন, কাকলী প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তব্যরা বলেন, নারায়ণগঞ্জে আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা অনেক গুণ বেশি। এখান থেকে প্রতিদিন ২ লাখেরও বেশি মানুষ ঢাকা যাতায়াত করে এবং ৫০ হাজার মানুষ কর্মের তাগিদে প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জে আসেন।

"যে সক্রিয় লাইন আছে, সে লাইনে মাত্র ৪ লাখ যাত্রী যাতায়াতের জন্য মতিঝিল থেকে উত্তরা এমআরটি-৬ হতে পারে। তবে, ৩ লাখ মানুষের জন্য নারায়ণগঞ্জে এমআরটি-২ হতে পারবে না কেন?

কোন অজুহাতেই এমআরটি-২ প্রকল্প থেকে নারায়ণগঞ্জকে বাদ দেওয়া যাবে না।’ প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনের হুশিয়ারী দেন বক্তারা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খুলনায় নামের বিভ্রান্তিতে ২ কলেজ, প্রতিকার দাবি
  • রূপগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন 
  • না’গঞ্জকে মেট্রোরেল প্রকল্প-২ এ সংযুক্ত করার দাবিতে নিসচার মানববন্ধন
  • প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় চান না সাত কলেজের শিক্ষকেরা
  • দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের
  • বন কর্মকর্তার ১৭ বিয়ে: আদালতে মামলা, তদন্তে পিবিআই
  • শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তনের দাবিতে ৫টি পরিবেশবাদী সংগঠনের মানববন্ধন
  • ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন