জুলাই গণ–অভ্যুত্থান কোনো দলীয় নয়, জাতীয় বিবেকের জাগরণ: আনিসুল ইসলাম ও মুজিবুল হক
Published: 4th, August 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অর্জিত গণতন্ত্র রক্ষায় সর্বদা সোচ্চার থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ কো–চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তাঁরা বলেছেন, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান কোনো দলীয় নয়, এটি জাতীয় বিবেকের জাগরণ। এটি কেবল সরকারের পতন নয়, এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার নিশ্চিত করার সংগ্রাম।
৫ আগস্ট ঐতিহাসিক ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে দলের এ দুই জ্যেষ্ঠ নেতা এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মুজিবুল হক বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, গণ-অভ্যুত্থানের এই চেতনা অটুট থাকবে, এই সংগ্রাম সফল হবে এবং এই বাংলাদেশ একদিন পল্লিবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বপ্নের মতো সত্যিকার অর্থে একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে পরিণত হবে।’
বিবৃতিতে নেতারা আরও বলেন, ৫ আগস্ট ইতিহাসের সেই গৌরবময় দিন, যেদিন বাংলাদেশের সাহসী ছাত্রসমাজ, সাধারণ মানুষ, শিল্পী-সাহিত্যিক, আইনজীবী, প্রবাসী এবং সর্বস্তরের মানুষ একতাবদ্ধ হয়ে অন্যায়, দুর্নীতি, দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান শেখ হাসিনার দীর্ঘকালীন কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান ঘটিয়েছিল, তা এক নতুন যুগের সূচনা করেছিল। এটি ছিল বাংলাদেশের মানুষের জাগরণের দিন, এটি ছিল নতুন আশার শপথের দিন। জাতীয় পার্টি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, এই গণ-অভ্যুত্থান ছিল একটি স্বতঃস্ফূর্ত ও ন্যায়ভিত্তিক বিপ্লব, যেখানে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও সাংবিধানিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য ছাত্র-জনতা রক্তে ও ঘামে ইতিহাস লিখেছেন।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মুজিবুল হক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি সেই সব শহীদকে, যাঁরা জুলাই গণহত্যার নির্মম শিকার হয়েছেন। আমরা গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই সেই সব সংগ্রামীর প্রতি, যারা পরিবার, ক্যারিয়ার, জীবনের নিশ্চয়তা বিসর্জন দিয়ে দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার রক্ষায় অবিচল ছিলেন।’
জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে এ দুই নেতা অর্জিত গণতন্ত্র রক্ষায় সর্বদা সোচ্চার থাকার অঙ্গীকার করেন। তাঁরা সরকার জনগণের সেবক আর জনগণ হবে প্রকৃত মালিক—এমন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন বলে জানান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম জ ব ল হক গণতন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসি মেরুদণ্ডহীন প্রতিষ্ঠান: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, তাঁরা যতই নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন, ততই বুঝতে পারছেন, এটি একটি ‘মেরুদণ্ডহীন’ প্রতিষ্ঠান।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এনসিপির একটি প্রতিনিধিদল। পরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন দলটির মুখ্য সমন্বয়ক।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, নির্বাচন কমিশনের কোথায় কোথায় সমস্যা, তা তাঁরা জনগণের সামনে তুলে ধরছেন। ইসি যে মেরুদণ্ডহীন একটি প্রতিষ্ঠান, তা তাদের কাজের মধ্য দিয়ে আস্তে আস্তে প্রকাশ পাবে। তিনি বলেন, আগে ভোট দেওয়ার অধিকার থেকে মানুষকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এবার ভোট ‘নেওয়ার’ অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্য পাঁয়তারা হচ্ছে। এনসিপি এখনো ইসির দুর্বলতা ও ভুলগুলো তুলে ধরে সংশোধনের সুযোগ দিচ্ছে।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, নির্বাচন কমিশন দেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তাঁরা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে দেখেছেন, এই প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ অঙ্গজুড়ে সামরিক উর্দি পরা পোশাকে ও বাকিটুকু দলীয় পোশাকে আবৃত।
এই নির্বাচন কমিশনের অধীন এনসিপি নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমরা আপাতত যে অবস্থায় আছি, সেটা আমরা বলেছি। যে গত ১৫ বছরে ভোট দিতে পারে নাই। এখনো ভোট নেওয়ার সিস্টেম নাই। যদি আমি ভোট নিতেই না পারি, জনগণ যদি আমাকে ভোট দিতে আসে, আর আমাকে যদি বাধাগ্রস্ত করা হয়, ভোট নেওয়ার জন্য, তো সেখানে যখন আমি বুঝব আমাকে ভোট নিতে দিবে না, সেখানে গত ১৫ বছরে তো অনেকে ভোটে অংশগ্রহণ করে নাই। যদি আমাকে ভোট না দিতে দেয় তারা, তাহলে আমি কেন অংশগ্রহণ করব? কিন্তু এই প্রক্রিয়াটা এখনো অ্যান্ডিং প্রসেসে আসে নাই।’
নির্বাচন কমিশনকে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘ইলেকশন কমিশন যদি সামরিক উর্দি পরে, দলীয় উর্দি পরে তার মেরুদণ্ড বিকিয়ে দিতে চায় এবং ভোট না দিতে চায়, তাহলে ফাইনালি হয়তোবা এ সিদ্ধান্তে যেতে আমরা বাধ্য হব।’
এ সময় এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
জহিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, নিবন্ধনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইসির পক্ষ থেকে এনসিপিকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল। ইসির কিছু পর্যবেক্ষণ ছিল। সে পর্যবেক্ষণগুলোর আলোকে কিছু নতুন ডকুমেন্ট তাঁরা আজ ইসির কাছে জমা দিয়েছেন।