দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালতকে সম্পূর্ণভাবে আলাদা করা হয়েছে। ফলে মামলা পরিচালনার যেমন সময় বাঁচবে এবং দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলার নিষ্পত্তি অনেকাংশে বাড়বে।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

জেলা আদালতগুলোতে যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ এবং জেলা জজ-এই তিন পর্যায়ের বিচারকদের একইসঙ্গে দেওয়ানি ও ফৌজদারি (দায়রা) মামলার বিচার করতে হয়। একই বিচারকের ওপর এই দ্বৈত দায়িত্ব মামলাজট এবং বিচারিক দীর্ঘসূত্রতার একটি প্রধান কারণ বলে জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, দেশের অধস্তন আদালতগুলোতে বর্তমানে বিচারাধীন দেওয়ানি মামলার সংখ্যা প্রায় ১৬ লাখ এবং ফৌজদারি মামলা প্রায় ২৩ লাখ। ফৌজদারি মামলার সংখ্যা দেওয়ানি মামলার তুলনায় বেশি হওয়া সত্ত্বেও ফৌজদারি বিচারককে উভয় ধরনের মামলা পরিচালনা করতে হয়। ফলে মামলা নিষ্পত্তির গতি কমে যায় এবং মামলাজট বাড়ে।

এই বাস্তবতা বিবেচনায় আলাদা ২০৩টি অতিরিক্ত দায়রা আদালত এবং ৩৬৭টি যুগ্ম দায়রা আদালত প্রতিষ্ঠা করে এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এই আদালতগুলোতে বিচারকরা কেবল ফৌজদারি মামলার বিচার করবেন। ফলে বিচারকদের দ্বৈত দায়িত্বের অবসান ঘটাবে এবং বিচারিক কার্যক্রমে প্রত্যাশিত গতি তৈরি হবে।যুগান্তকারী এই সিদ্ধান্তের ফলে জেলা পর্যায়ে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণভাবে আলাদা হয়ে যাচ্ছে। এতে করে দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় আদালতেই মামলা নিষ্পত্তির পরিমাণ ও গতি আগের চেয়ে অনেকাংশে বাড়বে।ফলে বিদ্যমান মামলাজট উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে বলে আশা করছে আইন, বিচারক ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

কাতারে ইসরায়েলের হামলার পর যৌথ প্রতিরক্ষায় সম্মত উপসাগরীয় দেশগুলো

যেকোনো ধরনের বিদেশি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক যৌথ ব্যবস্থা নিতে সম্মত হয়েছে উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিলভুক্ত (জিসিসি) দেশগুলো। আজ বৃহস্পতিবার ছয় সদস্যের জোটটির যৌথ প্রতিরক্ষা কাউন্সিল কাতারের রাজধানী দোহায় এক বিশেষ অধিবেশনে এ বিষয়ে সম্মত হয়। ৯ সেপ্টেম্বর দোহায় ইসরায়েলের হামলার প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জিসিসির প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠক শেষে এক যৌথ ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, মন্ত্রীরা তাৎক্ষণিকভাবে গোয়েন্দা তথ্যবিনিময় সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছেন। একীভূত সামরিক কমান্ডের মাধ্যমে এটা করা হবে। আঞ্চলিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি করা হবে। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পূর্বসতর্কতা ব্যবস্থা দ্রুততর করা হবে। পাশাপাশি মন্ত্রীরা যৌথ প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা হালনাগাদেরও নির্দেশ দিয়েছেন।

যৌথ ঘোষণায় মোট ছয়টি বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে। বাকি দুটি হলো জিসিসিভুক্ত দেশগুলো তিন মাসের মধ্যে যৌথ আকাশ এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা মহড়ার অনুমোদন দিয়েছে। এরপর দেশগুলো একটি যৌথ বিমান মহড়ায় অংশ নেবে। অংশগ্রহণকারী মন্ত্রী ও প্রতিনিধিরা জোর দিয়ে বলেন, কাতারের ওপর হামলার অর্থ হলো পুরো জিসিসির ওপর হামলা।

জিসিসির প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কাতারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী শেখ সৌদ বিন আবদুর রহমান আল থানি। বৈঠকে জিসিসির ছয় দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী, দেশগুলোর ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধি এবং জোটটির মহাসচিব জাসিম আল-বুদাইউই অংশ নেন। আলোচনায় মন্ত্রীরা দোহায় ইসরায়েলের হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের গুরুতর লঙ্ঘন উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা জানান।

এই বৈঠকের আগে সোমবার দোহায় আরব লিগ ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) এক বিশেষ বৈঠকে প্রায় ৬০টি দেশ অংশ নেয়। সেখানে জিসিসির দেশগুলোর প্রতিনিধিরা আলাদা করে বৈঠক করেছিলেন। বৈঠক শেষে জোটটির সদস্যদেশের সমন্বিত সামরিক ব্যবস্থা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

১৯৮১ সালে জিসিসি গঠিত হয়। এর পর থেকে জোটটির কোনো সদস্যদেশে ৯ সেপ্টেম্বরের আগপর্যন্ত সরাসরি হামলা চালায়নি ইসরায়েল। জোটটির প্রায় সব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের সুসম্পর্ক রয়েছে।

আরও পড়ুনইসরায়েলের বিরুদ্ধে কি যৌথ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলবে উপসাগরীয় আরব দেশগুলো১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এদিকে গাজা উপত্যকার গাজা নগরীতে গত বুধবার শুরু হওয়া ইসরায়েলের সর্বাত্মক হামলায় আজ অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। একই সময়ে গাজার অন্যান্য স্থানে নিহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন। প্রায় দুই বছরের ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল অন্তত ৬৫ হাজার ১৪১। আহত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯২৫ জন।

ইসরায়েলের দাবি, গত কয়েক সপ্তাহে প্রায় সাড়ে তিন লাখ ফিলিস্তিনি গাজা নগরী ছেড়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের তথ্যমতে, উপত্যকার বৃহত্তম শহরটিতে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা শুরুর আগে কমবেশি ১০ লাখ ফিলিস্তিনি ছিলেন, যাঁদের অনেকে অন্যান্য জায়গা থেকে একাধিকবার স্থানচ্যুত হয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনগাজা নগরীতে দুই দিনে দেড় শতাধিক হামলা ইসরায়েলের১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ