বাংলাদেশের দেওয়া প্রত্যর্পণের চিঠির ইতিবাচক জবাব দিয়ে সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে ন্যায়ের পক্ষ নিয়ে ভারত শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত পাঠাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক টবি ক্যাডম্যান।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে শুনানি শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনাকে ফেরাতে দেওয়া চিঠির উত্তরে ভারতের মৌনতার বিষয়ে করা প্রশ্নের জবাবে টবি গণমাধ্যমকে বলেন, “পররাষ্ট্র  মন্ত্রণালয় যথাযথভাবে ভারতকে প্রত্যর্পণের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। তবে এটা ভারতের ব্যাপার যে তারা ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াবে, নাকি তাকে (হাসিনা) বিচার থেকে রেহাই দেওয়ার পক্ষে অবস্থান করবে।আমি আশা করি ভবিষ্যতে তারা ন্যায়বিচারের পক্ষেই অবস্থান নিবে।”

আরো পড়ুন:

দ্য ল্যানসেটের প্রতিবেদন
পুতুলকে নিয়ে ভাবমূর্তি সংকটে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

‘খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বিদেশ গেছেন, আর হাসিনা পালিয়ে’ 

তিনি আরো বলেন, “চিঠির জবাবে ভারতকে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ সরকার জোর করতে পারেন না ঠিকই, কিন্ত আমরা আশা করতেই পারি যে তাকে এ দেশে আনা হবে এবং বিচারের মুখোমুখি করা হবে।এখানে বলে রাখা ভালো যে, ন্যায়বিচারের স্বার্থে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনের সব সুযোগ পাবেন।”

সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি এখানে একজন পেশাদার হিসেবে কাজ করতে এসেছি এবং তাই করবো। অতীতের কোনো ঘটনা, কারো কার্যকলাপ কিংবা পূর্বে আমার কাজের পরিধি কি ছিল তা একে প্রভাবিত করবে না। সবার জেনে রাখা ভালো, যেহেতু এই মামলাগুলো জটিল এবং এর কার্যবিধি সময় সাপেক্ষ সুতরাং এ বিধিগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে তাড়াহুড়া করার কোনো সুযোগ নেই।”

আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ টবি আরো বলেন, “তবে চিফ প্রসিকিউটর যেভাবে সবকিছু গুছিয়ে এনেছেন এবং নিশ্চিত করেছেন যেন আইন আমাদের সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করে, সেটা দেখার পর আমি আত্নবিশ্বাসী যে কাজগুলো সঠিকভাবে করা সম্ভব হবে। সামনে ট্রাইব্যুনালে যতদিন কাজ করবো ততদিন আইনের বিদ্যমান কাঠামোতে বিষয়ে আলোচনা চলতে থাকবে। এ বিষয়ে এবং বিদ্যমান আইনি ফ্রেমওয়ার্ক এ  প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে আইন অঙ্গনের অন্যান্য ব্যক্তিদের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করবো। আশা করি তা করা গেলে আইনি বিষয়গুলো আরো নিরপেক্ষ, সহজতর ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে স্বীকৃত হওয়ার যোগ্য হবে।”

উল্লেখ্য, ব্রিটিশ আইনজীবী, লন্ডনভিত্তিক ল ফার্ম ‘গুয়ের্নিকা ৩৭’ গ্রুপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ‘গুয়ের্নিকা-৩৭ চের্ম্বাস’-এর যুগ্ম প্রধান টবি ক্যাডম্যানকে গত ২০ নভেম্বর বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়।

এর পরপরই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এতে, টবির নিয়োগ ট্রাইব্যুনালের জন্য এক উল্লেখযোগ্য মাইলফলক বলে মন্তব্য করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

সূত্র: বাসস

ঢাকা/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন আইন

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের

গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।

মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।

সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।

এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।

মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।

এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ