বিএসএফের আপত্তিতে বাংলাদেশির বাড়ি নির্মাণকাজ বন্ধ
Published: 27th, January 2025 GMT
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে এক বাংলাদেশি পরিবারের বাড়ি নির্মাণ নিয়ে আপত্তি তুলেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। তাদের আপত্তিতে জমির মালিক মিলন মিয়া ও তাঁর ভাই দুলাল হোসেন বাড়ির নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। তারা বলছেন, ওই বাড়ি ছাড়া তাদের থাকার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এ অবস্থায় শীতের মধ্যে পরিবার নিয়ে দু’জনই চরম বিপাকে পড়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের উত্তর অনন্তপুর বড়াইয়েরতল সীমান্তে।
অনন্তপুর বিজিবির ল্যান্সনায়েক মুরাদ হোসেন জানান, মিলন মিয়া ও দুলাল হোসেন ৫ শতাংশ জমির ওপর তৈরি টিনশেড ঘরে পরিবার নিয়ে থাকতেন। তারা ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। সম্প্রতি গ্রামে এসে নতুন করে ইট দিয়ে ঘরের কাজ করার জন্য প্রস্তুতি নেন। ইটের গাঁথুনি শেষ হওয়ার পর বিএসএফ খবর পেয়ে বাধা দেয়। তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক সীমান্তের ৯৪৬ নম্বর মেইন পিলারের সাব-পিলার ২-এর অভ্যন্তরে ৭০ গজ অদূরে ওই বাড়ির নির্মাণকাজ চলছে। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জমির মালিককে বাড়ির কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
এদিকে অর্ধেক নির্মাণ করে বাড়ির কাজ বন্ধ রাখায় বিপদে পড়েছেন মিলন মিয়া ও দুলাল হোসেনের পরিবার। থাকার অন্য ব্যবস্থা না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। বাড়ির আঙিনায় ভাঙাচোরা টিনের টংঘর তুলে কষ্টে দিন কাটছে তাদের।
মিলন মিয়ার স্ত্রী সালমা বেগম জানান, মাত্র ৫ শতাংশ জমির ওপর তাদের আগের টিনশেড বাড়ি ছিল। তাই পুরোনো ঘর ভেঙে ইটের ঘর বানানো হচ্ছিল। এর মধ্যে বিএসএফ বাধা দেওয়ায় কাজ বন্ধ করে রাখতে হয়েছে। কিন্তু আগেই পুরোনো ঘর ভেঙে ফেলায় এখন কীভাবে বাস করব, বুঝতে পারছি না।
কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মানিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিএসএফ ঘর নির্মাণে বাধা দেওয়ায় আপাতত নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে।
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি অনন্তপুর বিওপির নায়েক সুবেদার সফিকুল ইসলাম জানান, ভারতের ১৩৮ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ঝিগরী ক্যাম্পের সদস্যরা বাড়িটি নির্মাণে বাধা দিয়েছেন। আমরা বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাড়ি নির্মাণ বন্ধ থাকবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এসএফ ব এসএফ পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ