ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা বিএনপির সম্মেলন বাতিলের দাবিতে জুতা মিছিল
Published: 28th, January 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন বাতিলের দাবিতে জুতা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপির একটি পক্ষ।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৭টার দিকে জেলা বিএনপিসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হাতে জুতা নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিল শেষে কবির আহমেদ ভূইয়ার কুশপুত্তলিকা দাহ করেন বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভ মিছিল থেকে ‘বুকের রক্ত দিয়ে প্রতিহত’সহ ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটিতে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য জেলার বিএনপির সম্মেলন করতে দেয়া হবে না’ বলে হুশিয়ারি দেওয়া হয়। এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর ও ১৮ জানুয়ারি জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এক পক্ষ সম্মেলন সকলের প্রস্তুতি নিলেও অপরপক্ষের অনঢ় বিরোধিতার জন্য দুটি তারিখই পরিবর্তন করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।
গত ২২ জানুয়ারি সম্মেলনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার আইনজীবী আ জ ম মোরশেদ আল মামুন স্বাক্ষরিত জেলা বিএনপির দলীয় প্যাডে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কমিটিসহ নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধের জেরে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি দুই ভাগে বিভক্ত। ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট জেলা বিএনপির পাঁচ সদস্যের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর পর থেকে পাঁচ সদস্যের কমিটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। কমিটির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান, সদস্যসচিব সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি পক্ষ এবং আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি এবং সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকনের নেতৃত্বে আরেকটি বড় অংশ রয়েছে।
গত প্রায় দুই বছর ধরেই উভয়পক্ষ পৃথকভাবে দলীয় সব কর্মসূচি পালন করে আসছে। নেতা-কর্মীদের বিরোধ দূর না করেই গত বছরের ২ নভেম্বর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিএনপির ফেসবুক পেজে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জেলা বিএনপির ৩২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের অভ্যন্তরীণ একটি সূত্র জানায়, আগের পাঁচ সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে নতুন আহ্বায়ক কমিটিতে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। আগের কমিটির ২ ও ৩ নম্বর সদস্য হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি ও জহিরুল হক খোকন নতুন কমিটিতে ৩ ও ৪ নম্বর এবং কবির আহমেদ ভূইয়াকে ৩২ নম্বর সদস্য করা হয়েছে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নেতৃত্বে বিএনপির আরেকটি পক্ষ কবিরের অনুসারী।
জুতা মিছিলের একাংশ
হাফিজুর ও জহিরুলের নেতৃত্বে শহরে সম্মেলন বিরোধী একাধিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর জেলা শহরের পাওয়ার হাউজ রোড এলাকা থেকে জেলা বিএনপিসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হাতে জুতা নিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে টেংকের পাড় এলাকায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঝাড়ু মিছিলে নেতাকর্মীরা ১ ফেব্রুয়ারির সম্মেলনকে অবৈধ ঘোষণা দিয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও সদস্য কবির আহমেদ ভূইয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দেন। সমাবেশে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মইনুল হোসেন চপলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপিত গোলাম সরোয়ার খোকন, জেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মনির হোসেন ও জেলা যুবদলের সভাপতি শামিম মোল্লা।
জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, “আগামী ১ ফ্রেরুয়ারি অবৈধ সম্মেলন করার পাঁয়তার চলছে। যারা ১৬ বছর ত্যাগ স্বীকার করেছে। জেল-জুলুম, অন্যায়, অত্যাচার স্বীকার করছিলাম- আমাদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ রেখেছে। যদি ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে শান্ত রাখতে চান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আন্দোলন যদি বন্ধ করতে চান, যদি সুষ্ঠ একটি বিএনপি দেখতে চান, যদি বিএনপিকে আগের জায়গায় দেখতে চান- তাহলে এই বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি বাতিল করতে হবে। নতুন করে প্রত্যেকটা উপজেলা থেকে আবার নতুন করে কমিটি করে এরপর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সম্মেলন হবে। এরপূর্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোন সম্মেলন হতে দেব না এবং সুষ্ঠভাবে সম্মেলনও হবে না।”
জেলা যুবদলের সভাপতি শামিল মোল্লা বলেন, “কবির আহমেদ ভূঁইয়া ও তার অনুসারীরা মিলে ১ ফেব্রুয়ারি সম্মেলন ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপির মূল শক্তি ও মূল ধারাকে পাশ কাটিয়ে এই সম্মেলন দেয়া হয়েছে। আমরা এই সম্মেলন প্রতিরোধ করব। আমরা জেলার ত্যাগী নেতাকর্মীদের সম্মনয়ে সুষ্ঠু জেলা সম্মেলন চাই।”
জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি গোলাম সারুয়ার খোকন বলেন, “দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যায় আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটিতে এই সম্মেলন করতে দেয়া হবে না। এই অপশক্তিকে রুখে দেয়া হবে।”
তবে একাধিকবার চেষ্টা করেও মুঠোফোন না ধরায় জেলা বিএনপির আহবায়ক আবদুল মান্নান ও সদস্য সচিব সিরাজুল ইসমামের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ঢাকা/রুবেল/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব র হ মণব ড় য় ব র হ মণব ড ব এনপ র দ ন ত কর ম র সদস য সদস য র ও সদস য কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
বিজিএমইএর নতুন সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, সহসভাপতি হলেন যাঁরা
তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন রাইজিং ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহমুদ হাসান খান। তাঁর নেতৃত্বাধীন নবনির্বাচিত পর্ষদ ২০২৫-২৭ সাল মেয়াদে পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ এই সংগঠনটি পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবেন।
রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কার্যালয়ে আজ শনিবার সংগঠনটির নতুন সভাপতিসহ সাতজন সহসভাপতি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। বিজিএমইএর নির্বাচন বোর্ডের এক আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচন বোর্ড জানায়, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে প্রতিটি পদে কেবল একটি করে বৈধ মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে এবং কোনো আপিল দায়ের হয়নি। এ কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট গ্রহণের প্রয়োজন না হওয়ায় সব প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।
নতুন কমিটিতে বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন কেডিএস গ্রুপের এমডি সেলিম রহমান। জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন অনন্ত গার্মেন্টসের এমডি ইনামুল হক খান। সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সফটেক্স সোয়েটারের এমডি মো. রেজওয়ান সেলিম, ফেব্রিকা নিট কম্পোজিটের এমডি মিজানুর রহমান (অর্থ), দেশ গার্মেন্টসের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক বা ডিএমডি ভিদিয়া অমৃত খান, এমিটি ডিজাইনের এমডি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী এবং ফ্যাশন ওয়্যারের এমডি মোহাম্মদ রফিক চৌধুরী।
২০২৫-২৭ সাল মেয়াদে বিজিএমইএর পরিচালনা কমিটির নতুন সদস্য