কক্সবাজারের পর্যটনে নতুন আকর্ষণ: ‘কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন’
Published: 19th, February 2025 GMT
সমুদ্র মোহনায় ভেসে বেড়ানোর মতো দারুণ অভিজ্ঞতা দিতে কক্সবাজারের পর্যটনে যোগ হলো নতুন মাত্রা! নীলজল রাশির বুকে বিলাসিতা, মনোমুগ্ধকর প্রকৃতি আর নৌ-বিহারের এক অনন্য সংযোজন ‘কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন’।
এখানে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত, সমুদ্র আর পাহাড়ের সৌন্দর্য একসঙ্গে উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে।
প্রতিদিন সকাল ১০টায় কক্সবাজারের সোনাদিয়া-মহেশখালী ও হিমছড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে জাহাজটি এবং সমুদ্রবিহারের পর ফিরে আসবে কূলে।
ভ্রমণে পর্যটকরা উপভোগ করতে পারবেন বাঁকখালি নদীর মোহনীয় সৌন্দর্য, ম্যানগ্রোভ বন, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের মোহনা, দেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালী, ঐতিহাসিক আদিনাথ মন্দির, বৌদ্ধ মন্দির, সোনাদিয়ার নয়নাভিরাম উপকূল, বৃহৎ খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প, শুটকি মহাল নাজিরারটেক এবং কক্সবাজার বিমানবন্দরের সম্প্রসারিত রানওয়ে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয় এই নৌ-বিহারের।
জাহাজ কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইন’ আগে সেন্টমার্টিন নৌরুটে চলত। তবে, সেন্টমার্টিনে পর্যটক ভ্রমণ নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে এই জাহাজ কক্সবাজারের সোনাদিয়া-মহেশখালী সাগর মোহনায় চালু হয়েছে। পর্যটকরা সেন্টমার্টিনের মনোরম অনুভূতিটা এখানেই উপভোগ করতে পারেন। কক্সবাজারের এই নতুন নৌ-বিহার পর্যটকদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা তৈরি করবে, যা সেন্টমার্টিনের সৌন্দর্যের স্মৃতি মনে করিয়ে দেবে। সমুদ্রবিহারের সময় সূর্যাস্তের দৃশ্য স্বপ্নিল মুহূর্ত তৈরি করবে, যা পর্যটকদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
অভিজ্ঞতা ভাগ করে তানভীর সরওয়ার নিশি বলেন, “বড় জাহাজ নিয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়া মজার ব্যাপার। তবে নিষেধাজ্ঞার কারণে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ বন্ধ থাকায় সোনাদিয়া ও মহেশখালী মোহনায় এই জাহাজ নিয়ে ভ্রমণ করার অনুভূতি একেবারে আলাদা। সমুদ্র, পাহাড় এবং ম্যানগ্রোভ বনে পাখির বিচরণ দেখতে বেশ ভালো লাগছে।”
সেলিনা মনির বলেন, “এই ধরনের উদ্যোগ কক্সবাজারের পর্যটন খাত আরও উন্নত করবে। পরিবারসহ কম সময় এবং খরচে এখানে সমুদ্র, পাহাড় এবং প্রকৃতি উপভোগ করা সম্ভব, যা পর্যটকদের জন্য এক দারুণ সুযোগ।”
মোহাম্মদ আলম বলেন, “সেন্টমার্টিনের অনুভূতিটা এখানে পাওয়া যাচ্ছে। পানির পথে চলতে চলতে এমন সুন্দর প্রকৃতি সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে দেখা যায় না।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ফুয়াদ আল খতীব হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক ডা.
সহকারী ব্যবস্থাপক মো. শাহ আলম জানান, এই নৌ-বিহারের বিশেষত্ব শুধু ভ্রমণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি বিয়ের অনুষ্ঠান, ইফতার পার্টি, জন্মদিন উদযাপন, কর্পোরেট মিটিং কিংবা আনন্দ ভ্রমণের জন্যও এক চমৎকার স্থান হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। এই বিশেষ ভ্রমণযাত্রায় দুপুরে রয়েছে সুস্বাদু খাবারের বিশেষ আয়োজন, যা ভ্রমণকে আরও আনন্দময় করে তুলবে।
ঢাকা/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দর ভ গ কর র পর য র ম হন ম হন য় র র পর ভ রমণ
এছাড়াও পড়ুন:
হামলার পর আশা ও আতঙ্কের মধ্যে পেহেলগামে ধীরে ধীরে ফিরছেন পর্যটকেরা
ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পাহাড়ি পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামের কাছে এক প্রাণঘাতী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার এক সপ্তাহ পর শহরটিতে এখনো থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। অবশ্য সেখানে অল্প অল্প করে পর্যটক ফিরতে শুরু করেছেন।
গত সপ্তাহে শহরের প্রধান মহাসড়ক একেবারে ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। দোকানপাট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, খালি হয়ে গিয়েছিল হোটেলগুলো। এখন সেখানে আবার অল্প অল্প করে প্রাণ ফিরছে।
গত মঙ্গলবার পেহেলগাম থেকে তিন মাইল (৫ কিলোমিটার) দূরে পাহাড়চূড়ার উপত্যকা বৈসারানে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের ওপর গুলি চালায় একদল বন্দুকধারী। এই বৈসারানকে অনেক সময় ‘ভারতের সুইজারল্যান্ড’ বলা হয়।
বৈসারানের হামলাকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা অনেক পরিবারকে নিঃস্ব করে দিয়েছে এবং ভারতজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
হামলার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তান সম্পর্কে উত্তেজনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কাশ্মীরের দুই অংশ দুই দেশ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তরে পুরো অঞ্চলকে দুই দেশই নিজেদের বলে দাবি করে থাকে।
দিল্লি এ হামলার কোনো সামরিক জবাব দেবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে।
১৯৮৯ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরুর পর থেকে কাশ্মীরে প্রায়ই হিংসাত্মক ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এসব ঘটনায় কখনো নিরাপত্তা বাহিনী আবার কখনো বেসামরিক নাগরিকদের নিশানা করা হয়েছে। কিন্তু পর্যটকদের এভাবে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনা বিরল এবং তা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের হতবাক ও আতঙ্কিত করেছে।১৯৮৯ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরুর পর থেকে কাশ্মীরে প্রায়ই হিংসাত্মক ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এসব ঘটনায় কখনো নিরাপত্তা বাহিনী আবার কখনো বেসামরিক নাগরিকদের নিশানা করা হয়েছে। কিন্তু পর্যটকদের এভাবে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনা বিরল এবং তা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের হতবাক ও আতঙ্কিত করেছে।
পেহেলগামের মতো এলাকার অর্থনীতি পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। হামলার জেরে সেখানে বহু মানুষের জীবিকা স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনকাশ্মীরে ব্যাপক ধরপাকড়, ভাঙা হচ্ছে বাড়ি: ‘আমার ভাই জড়িত থাকলেও পরিবারের অপরাধ কী’১৮ ঘণ্টা আগেহামলার পরদিন (২৩ এপ্রিল) ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা পেহেলগামের বৈসারান এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালান