সেন্টমার্টিনের দ্বার খুলছে শনিবার, জাহাজ চালাবেন না মালিকরা
Published: 31st, October 2025 GMT
দীর্ঘ নয় মাস পর শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। পরিকল্পনা ছিল, কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ও বার-আউলিয়া নামে দুটি জাহাজ পর্যটকদের নিয়ে দ্বীপটিতে যাবে। তবে, শেষ মুহূর্তে মালিকপক্ষ এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।
সী ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, ‘‘ট্যুরিজম বোর্ডের সফটওয়্যার এখনো চালু হয়নি। আবার দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার নিয়মে পর্যটক পাওয়া যাবে না। এ কারণে ১ নভেম্বর থেকে কোনো জাহাজ সেন্টমার্টিনে যাবে না।’’
তিনি জানান, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে জাহাজ চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় প্রায় নয় মাস পর দ্বীপটি উন্মুক্ত হলেও পুরো নভেম্বর মাসে পর্যটকদের দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসতে হবে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক দ্বীপে রাত্রিযাপনের সুযোগ পাবেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- বিআইডব্লিউটিএ পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌ যানকে সেন্টমার্টিনে যাতায়াতের অনুমতি দিতে পারবে না। টিকিট ক্রয় করতে হবে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অনুমোদিত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে। প্রতিটি টিকিটে থাকবে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড; কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে বিবেচিত হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নভেম্বর মাসে কেবল দিনের বেলায় ভ্রমণের অনুমতি থাকবে, রাতে থাকা নিষিদ্ধ। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে সীমিত পরিসরে রাত্রিযাপন সম্ভব হবে, আর ফেব্রুয়ারিতে সম্পূর্ণভাবে পর্যটক যাতায়াত বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটকই দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন।
সেন্টমার্টিনের নাজুক পরিবেশ রক্ষায় একাধিক বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। দ্বীপে রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, উচ্চ শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি, কেয়া বনে প্রবেশ বা ফল সংগ্রহ ও বিক্রয়, কাছিম-পাখি-প্রবালসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এছাড়া সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইক বা অন্য কোনো মোটরচালিত যান চলবে না। নিষিদ্ধ পলিথিন বহন করা যাবে না এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকজাত সামগ্রী- যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের বোতল-বহন নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সেন্টমার্টিন বাজার সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, “সেন্টমার্টিন কক্সবাজার শহর থেকে অনেক দূরে। আসতে-যেতে দিনের পুরো সময়টা চলে যায়। তাই রাত্রিযাপন ছাড়া পর্যটক এখানে আসবে না। বর্তমানে আমরা ক্ষতির মুখে জীবনযাপন করছি।”
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, “দ্বীপের অর্থনীতি এখন প্রায় পঙ্গু। হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ট্রলার, দোকান সবখানেই নেমে এসেছে অচলাবস্থা। স্থানীয় মানুষের জীবিকা পুরোপুরি পর্যটননির্ভর। এখন তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। আমরা দ্বীপের পরিবেশ রক্ষার পক্ষে, তবে জীবিকার দিকটাও যেন সরকার বিবেচনায় নেয় এটাই আমাদের মিনতি।”
টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “দ্বীপে মোটরযান নিষিদ্ধ ও পর্যটক নিয়ন্ত্রণে কড়া নজরদারি থাকবে। দ্বীপে পর্যটক পরিবহনের জন্য নৌযানগুলোকে অনুমতি নিতে হবে। স্থানীয়দের জন্য অনুমতির দরকার নেই। পরিবেশ রক্ষায় এ পদক্ষেপ জরুরি।”
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন টম র ট ন পর যটক র অন ম পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জের ধোপাজান নদীর বালু লুট বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে এনসিপির মানববন্ধন
সুনামগঞ্জের ধোপাজান নদীর বালু লুট বন্ধ, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক চার লেনে উন্নীত করাসহ বিভিন্ন দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জেলা শাখার নেতা–কর্মীরা।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আলফাত স্কয়ার এলাকায় আজ বুধবার দুপুরে এই কর্মসূচি পালন করেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা। এতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে সংগঠনের নেতা–কর্মীরা এসে যোগ দেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলাজুড়ে ধোপাজান নদীর অবস্থান। ২০১৮ সাল থেকে এই নদীর ইজারা বন্ধ আছে। এর মধ্যেও বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে বালু তোলা হয়েছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর এই নদীতে প্রকাশ্যে বালু লুট শুরু হয়।
টানা আড়াই মাসে প্রায় ১০০ কোটি টাকার বালু লুট হয়েছে এই নদী থেকে। এর মধ্যেই গত মাসে এই নদী থেকে ‘লিমপিড ইঞ্জিনিয়ারিং’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ২১ লাখ ঘনফুট বালু (বিটি বালু) উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। ওই প্রতিষ্ঠান সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের চলমান কাজে এই বালু ব্যবহার করবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখন নদী থেকে অবাধে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বিক্রি করছে তারা। এতে এলাকার প্রকৃতি ও পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে।
মানববন্ধনে বলা হয়, ড্রেজারে বালু তোলা সাধারণ শ্রমিকেরা বিপাকে পড়েছেন। অথচ এই নদী থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেওয়ার এখতিয়ার নেই বিআইডব্লিউটিএর। একটি বালুখেকো সিন্ডিকেট এখানে বালু লুটে জড়িত আছে।
বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে গত ৯ মাসে দুর্ঘটনায় ৭০ জন মানুষ মারা গেছেন। সড়কটি সরু হওয়ার কারণে দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে। সড়কটি চার লেনে উন্নীত না করলে দুর্ঘটনা কমবে না। এ ছাড়া সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির ভরসার জায়গা জেলা সদর হাসপাতাল। অথচ এই হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নেই। আছে নানা অব্যবস্থাপনা। এতে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন এনসিপির জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ছালেহ মো. নাসিম, সদস্য মাসুম আল হাসান ও শাহনুর আলম, জেলা ছাত্র শক্তির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সায়মন আহমদ ও সদস্যসচিব রেদওয়ানুল হক। সমাবেশে পরিচালনা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক জেলা সদস্যসচিব মেহেদী হাসান সাকিব।
 ‘ক্রিকেটারদের বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়’
‘ক্রিকেটারদের বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়’