১০ জনের বার্সেলোনাকে জেতালেন রাফিনিয়া
Published: 6th, March 2025 GMT
বেনফিকা ১: ০ বার্সেলোনা
বায়ার্ন ৩ : ০ লেভারকুসেন
ফেইনুর্ড ০ : ২ ইন্টার
লা লিগায় দুর্দান্ত ছন্দ নিয়েই বেনফিকার মাঠে খেলতে গিয়েছিল বার্সেলোনা। এই ম্যাচেও নিশ্চিত ফেবারিট ছিল কাতালান ক্লাবটি। কিন্তু ম্যাচের শুরুতে দলের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার পাউ কুবারসি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে চাপে পড়ে যায় বার্সা। কিন্তু সেই চাপও শেষ পর্যন্ত রুখতে পারেনি বার্সাকে।
একজন কম নিয়ে প্রায় ৮০ মিনিট খেলেও শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বার্সা। বেনফিকার বিপক্ষে বার্সার ১-০ গোলের জয়ে একমাত্র গোলটি করেছেন রাফিনিয়া। প্রতিপক্ষের মাঠে পাওয়া এই জয়ের পর সুবিধাজনক অবস্থানে থেকে ঘরের মাঠে খেলতে নামবে বার্সা।
বেনফিকার মাঠে শুরুতেই পিছিয়ে যেতে পারত বার্সা। যদিও সে যাত্রায় কোনোভাবে বেঁচে যায় তারা। গোল না পেলেও বার্সাকে ভালোই চ্যালেঞ্জ দিচ্ছিল পর্তুগিজ ক্লাবটি। তবে ১২ মিনিটে বার্সার নিশ্চিত গোলের সুযোগ ঠেকিয়ে দেন বেনফিকা গোলরক্ষক আনাতোলি তুরবিন। এরপর ফের সুযোগ পেয়েছিল বেনফিকাও। কিন্তু গোল আদায় করতে পারেনি তারাও। ম্যাচের ২২ মিনিটে বড় ধাক্কা খায় বার্সা।
আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে বেনফিকার ভাঞ্জেলিস পাভদিলিসকে বক্সের সামনে ফাউল করে বসেন বার্সা ডিফেন্ডার পাউ কুবারসি। এই ফাউলের কারণে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় কুবারসিকে।
এরপর বার্সার জন্য লড়াইটা হয়ে পড়ে ১০ জন বনাম ১১ জনের। একজন কম নিয়েও অবশ্য বেনফিকার সঙ্গে লড়াই জমিয়ে রাখে হ্যান্সি ফ্লিকের দল। বেনফিকার চাপ সামলে চেষ্টা করে গোল আদায়ের। যদিও প্রথমার্ধে শেষ পর্যন্ত গোল পায়নি কোনো দলই।
বিরতির পর বেনফিকাই আধিপত্য বিস্তার খেলতে শুরু করে। ৫০ ও ৫৮ মিনিটে সুযোগও পেয়েছিল তারা। কাঙ্ক্ষিত গোলটি পায়নি তারা।
বেনফিকা না পারলেও ভুল করেনি বার্সা। ৬১ মিনিটে ১০ জনের বার্সাকে এগিয়ে দেন রাফিনিয়া। দারুণ এক মাটি কামড়ানো এক শটে গোল করে দলকে এগিয়ে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা ব্রাজিলিয়ান তারকা।
এই গোলের দুই দলই চেষ্টা করেছে গোলের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর গোল পায়নি কোনো দলই। ঘরের মাঠে ১০ জনের বার্সার বিপক্ষে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় বেনফিকাকে।
রাতের অন্য ম্যাচে বায়ার লেভারকুসেনের বিপক্ষে অসাধারণ এক জয় পেয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। আলিয়েঞ্জ অ্যারেনায় বায়ার্নের পাওয়া ৩-০ গোলের জয়ে জোড়া গোল করেছেন হ্যারি কেইন। অন্য গোলটি জামাল মুসিয়ালার।
রাতের প্রথম ম্যাচে ফেইনুর্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে শেষ আটের পথে অনেকটা এগিয়ে গেল ইন্টার মিলান। ইন্টারের হয়ে প্রথমার্ধের ৩৮ মিনিটে প্রথম গোলটি করেন মার্কুস থুরাম। আর বিরতির পর ৫০ মিনিটে গোল করে দলকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেন লাওতারো মার্তিনেজ। প্রতিক্ষের মাঠে পাওয়া এই জয় ইন্টারের আত্মবিশ্বাস নিশ্চিতভাবে অনেকটা বাড়িয়ে দেবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে
মাদারীপুরে মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে মাদারীপুরে শশুরবাড়িতে আছেন। ভিনদেশি যুবককে দেখার জন্য ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়। মেঝ সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট বোন আরিফা (৬)।
চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং এর ছেলে শি তিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় শি তিয়ান জিং। তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে।
আরো পড়ুন:
‘একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল’
এক বিয়ের বরযাত্রী খেয়ে ফেলল অন্য বিয়ের খাবার
শি তিয়ান জিংকে টিকটকে দেখেন সুমাইয়া। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান- প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন।
সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে মানুষ ভিড় করতে থাকে।
সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসছি। আমি বিশ্বাস করিনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি।’’
সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন, ‘‘ও ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। তারাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন।’’
সুমাইয়া বলেন, ‘‘এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। শি তিয়ান জিং এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এর মধ্যে আমার কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
শি তিয়ান জিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।’’
সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘শি তিয়ান জিং আমাদের এখানে আছে। ও খুব ভালো ছেলে। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। আমরা খুব খুশি।’’
পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল হাওলাদার জানান, প্রথমে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাবে।
ঢাকা/বকুল