নীলফামারী মেডিকেল কলেজ বন্ধের ‘ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। নীলফামারীর সর্বস্তরের জনগণ ও শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ এতে অংশ নেন।

কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী, নীলফামারী মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী, জেলা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া জেলা আইনজীবী সমিতি, আইনজীবী সহকারী সমিতি, বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি, নীলফামারী প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সমাবেশে অংশ নেন।

সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি আ খ ম আলমগীর সরকার, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আল ফারুক আব্দুল লতিফ, জেলা বিএনপির সহসভাপতি মাহাবুব উর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জজ আদালতের জিপি আবু মো.

সোয়েম, সাংগঠনিক সম্পাদক শেফাউল জাহাঙ্গীর আলম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ পারভেজ, নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহিম, বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) জেলা সভাপতি মো. সোহেলুর রহমান, নীলফামারী মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক সোহানুর রহমান, শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী অর্পিতা চৌধুরী, হরিমোহন রায়, বাধন আচার্য, চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কাজী রাহাতুল জান্নাত প্রমুখ।

নীলফামারী মেডিকেল কলেজ বন্ধের ষড়যন্ত্রকারীদের কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সমাবেশে বক্তারা বলেন, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে নীলফামারী জেলা ‘ব্লকেড’ ঘোষণা করা হবে। সারা দেশের সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হবে আকাশপথ, রেলপথ ও সড়কপথের যোগাযোগ।

শিক্ষার্থী অর্পিতা চৌধুরী বলেন, ‘২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত নীলফামারী মেডিকেল কলেজ নীলফামারী ও আশপাশের জেলার জনগণের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ও চিকিৎসাশাস্ত্র শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি যে সাম্প্রতিক বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, দেশের কিছু সরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধের আলোচনা চলছে। যেখানে আমাদের প্রতিষ্ঠানও অন্তর্ভুক্ত।’

অর্পিতা চৌধুরী আরও বলেন, শুরুর দিকে কিছু জনবল ও অবকাঠামোগত ঘাটতি থাকলেও শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিরলস এবং ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত পেশাগত পরীক্ষাগুলোতে নীলফামারী মেডিকেল কলেজ বরাবরই প্রশংসনীয় ফলাফল অর্জন করেছে। বিশেষ করে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে অনুষ্ঠিত প্রথম পেশাগত পরীক্ষায় ২৪টি মেডিকেল কলেজের মধ্যে পাশের হারে নীলফামারী মেডিকেল কলেজ প্রথম স্থান অর্জন করে।

সমাবেশ শেষে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাইদুল ইসলাম।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

রূপগঞ্জে মামুন হত্যা : মাহবুবের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে মানববন্ধন

রূপগঞ্জে ব্যবসায়ী মামুন ভুঁইয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান মাহবুবের নাম জড়িয়ে ‘অপপ্রচার’ চালানোর অভিযোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে তার অনুসারী নেতাকর্মীরা। 

শনিবার (১৪ জুন) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বক্তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মাহবুবুর রহমানকে জড়ানোর চেষ্টার তীব্র নিন্দা জানান এবং প্রতিপক্ষকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ ও ‘গডফাদার শামীম ওসমানের ব্যবসায়ী অংশীদার’ বলে আখ্যায়িত করে নেতাকর্মীরা।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত জায়েদুল ইসলামকে মাহবুবুর রহমানের 'ভাতিজা' বলে চালানো প্রচারণাকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও নির্লজ্জ মিথ্যাচার’ বলে অভিহিত করেন। তারা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেন, “জায়েদুল ইসলাম মাহবুবুর রহমানের রক্তের সম্পর্কের কেউ নন।

সে অপরাধ করলে তার শাস্তি তাকেই পেতে হবে। তার ব্যক্তিগত অপরাধের দায় কোনো নেতা নিতে পারে না। রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্যই একটি মহল এই মিথ্যা অপপ্রচারে নেমেছে।”

বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, যারা বিএনপির দীর্ঘ ১৭ বছরের সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিষ্ক্রিয় থেকে এখন সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে, তারাই রাজপথের ত্যাগী নেতা মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

তারা বলেন, "যারা আজ মাহবুব ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তারা আওয়ামী লীগের গডফাদার শামীম ওসমানকে দেশ থেকে পালাতে সহায়তা করেছেন এবং এখন তার ব্যবসা-বাণিজ্য ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন।"

বক্তারা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তুলে বলেন, "এই রফিকুল ইসলাম গত বছরের জুলাই মাসে সরকার পতন আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে তাবলিগ জামাতের কথা বলে রাজপথ থেকে সরে গিয়েছিলেন। ৫ আগস্টের পর বিএনপির সুদিনে তিনি আবার আবির্ভূত হয়ে রূপগঞ্জে লুটপাট ও নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন।"

কর্মসূচি থেকে রফিকুল ইসলামকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয় এবং তাকে আশ্রয়দাতা নেতার বিরুদ্ধেও কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।

স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা রাসেল মাহমুদ উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন, "আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর স্বৈরাচার শেখ হাসিনার মতো জগদ্দল পাথরকে দেশ থেকে সরাতে পেরেছি। আপনি তো সেই তুলনায় ছোট একটি টুকরা। অপপ্রচার থেকে সরে না দাঁড়ালে আপনার পিঠের চামড়া তুলে সোজা করতে বাধ্য হব।"

বক্তারা মাহবুবুর রহমানের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার তুলে ধরে বলেন, তিনি ছাত্রদল থেকে শুরু করে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করে তৃণমূল থেকে আজকের অবস্থানে এসেছেন। তাকে ষড়যন্ত্র করে থামানো যাবে না।

মানববন্ধন শেষে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চাষাঢ়ায় গিয়ে শেষ হয়।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১০ জুন) রূপগঞ্জের ভুলতা এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন খোকাকে স্থানীয়রা আটক করলে তাকে ছাড়িয়ে নিতে যান ছাত্রদল নেতা জায়েদুল ইসলাম। এ সময় সৃষ্ট সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ব্যবসায়ী মামুন ভুঁইয়া (৩৫) নিহত হন।

এই ঘটনায় মামুনের ভাই ও যুবদল নেতা বাদল ভুঁইয়া বাদী হয়ে জায়েদুলকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই রূপগঞ্জে বিএনপির দুই প্রভাবশালী নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু এবং কাজী মনিরুজ্জামানের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। নিহত মামুনের পরিবার দিপু ভূঁইয়ার অনুসারী এবং অভিযুক্ত জায়েদুল কাজী মনিরুজ্জামানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
  • আসামে বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র মামলায় পরেশ বড়ুয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
  • দণ্ডাদেশ বহালের রায়ের বিরুদ্ধে ১০ আসামির আপিল ও লিভ টু আপিল
  • রূপগঞ্জে মামুন হত্যা : মাহবুবের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে মানববন্ধন
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক ষড়যন্ত্রকারীদের কফিনে শেষ পেরেক: প্রেস সচিব
  • দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর
  • চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
  • সুবিচার মিলবে কত বছরে
  • ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন বিএনপি নেতা অমিত