ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিমের ৩১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ এবং একটি ফ্ল্যাটসহ ৪৩ একর জমি জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার (১০ মার্চ) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের উপ-পরিচালক রাশেদুল ইসলাম এ দুটি আবেদন করেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ওবায়দুল করিমের ৩১টি ব্যাংক হিসাবে ২০ কোটি ২৬ লাখ ৮০ হাজার ৬৫৮ টাকা এবং ৬ হাজার ৫৭৫ মার্কিন ডলার আছে। এছাড়া, ২০টি দলিলমূলে ২ কোটি ৯০ লাখ ৯১ হাজার টাকা দামের ৪৩ একর ২৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ জমি এবং ৯৫ লাখ ৯০ হাজার টাকার এক টি ফ্ল্যাট ক্রোক করা হয়েছে।

দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম তার মালিকানাধীন সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। যদি তিনি তা করতে পারেন, তাহলে বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে যেসব সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে নেওয়ার কথা, তা সম্ভব হবে না। এজন্য সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে আদালতের রায়ের পর সরকারের অনুকূলে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত নিশ্চিত করতে এই সম্পত্তিগুলো ক্রোক (স্থাবর সম্পত্তি) ও ফ্রিজ (অস্থাবর সম্পত্তি) করা জরুরি।

ঢাকা/মামুন/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

একাত্তরে প্রথম স্বাধীনতা অর্জনের পরে চব্বিশে দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছি

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘১৯৭১ সালে প্রথম স্বাধীনতা অর্জনের পরে আমরা ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছি। মানুষের ওপর মানুষের গোলামি খতম করে আল্লাহর গোলামি কায়েম করার জন্য আমাদের আবার তৃতীয়বার স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করতে হবে। জাতীয় সংসদে আল্লাহর আইন পাস করতে হবে।’

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘জুলাই ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান: প্রত্যাশা, প্রাপ্তি ও করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারের আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী। সেখানে দলের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান সভাপতিত্ব করেন।

মানুষের রচিত কোনো মতবাদ দিয়ে মানুষের মুক্তি আসবে না উল্লেখ করে মুজিবুর রহমান বলেন, ‘এ জন্য এ দেশে আল্লাহর আইন চালু করতে হবে। আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক সব ক্ষেত্রে আল্লাহর আইন মেনে চলতে হবে।’

সেমিনারে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু আজকে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, হাসিনার আমলে সংঘটিত সব হত্যার বিচার করতে হবে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

অনুষ্ঠানে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতার শহীদ ও আহত যাঁরা’ বইয়ের ইংরেজি ও আরবি সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন এবং শহীদদের স্মৃতি-তথ্যসংবলিত ওয়েবসাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত জুলাই যোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এতে উপস্থিত ছিলেন।

জামায়াতের এই সেমিনারে আরও কয়েকটি দলের নেতারাও বক্তব্য দেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন বলেন, ‘ইসলাম কায়েম করা ছাড়া লুটপাট, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি বন্ধ হবে না। দেশে দুর্নীতিমুক্ত সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচন চালু করতে হবে। তা না হলে ভোট ডাকাতি, কারচুপি, ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধ হবে না।’

শহীদদের তালিকা করার জন্য জামায়াতকে ধন্যবাদ জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। এ সময় তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের শাসনামলে মুসলমানদের জঙ্গি হিসেবে অভিহিত করে তাঁদের ওপর জুলুম করা হয়েছে। বর্তমানে একটি দলের মহাসচিব বলেছেন, দেশে দক্ষিণপন্থার উদ্ভব হয়েছে। দক্ষিণপন্থার উদ্ভব হলে তাতে তাঁদের সমস্যা কী? দক্ষিণপন্থার ভয় দেখিয়ে আবার জুলুম-নির্যাতন চালানোর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, দলের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল ও মহানগরী উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, গণ অধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আযম মীর শাহীদুল আহসান, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা হাসিনুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ প্রমুখ এতে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জামায়াত নেতা এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, শফিকুল ইসলাম মাসুদ ও রেজাউল করিম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ