‘দাগি’ সিনেমার প্রথম গানে ফুটে উঠল নিশো–তমার প্রেম
Published: 20th, March 2025 GMT
ছড়িয়েছে নতুন এক প্রেমের গল্প। কাহিনিতে প্রেমিক নিশান, প্রেমিকা জেরিন। ভালোবাসার শুরুর ঘটনাগুলো জানা যায়নি এখনও। সম্পর্কের কিছু পথ পেরিয়ে যাবার পর থেকে গল্পের বর্ণনা এমন– নিশানের জন্য ফুল কুড়িয়ে দেয়ার ইচ্ছে জেরিনের; সঙ্গে কিছু ভুলও। ইচ্ছে কাজল চোখে নিশানের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হেসে দেয়ার।
নিশানের ইচ্ছেও কম কিছু না। জেরিনকে ভেবে সন্ধ্যা নামাতে চায় সে। জমানো কান্না আর অভিমান ভুলে ফিরে আসার বাসনা নিশানের। জেরিনও জানে, তাকে ছেড়ে নিশান আর কোথায় যাবে, কাকে বলবে ভালোবাসার কথা। তাই প্রেমিকার কাছে নিশানের হৃদয় উজার করা আকুতি, সে যেন নিশানকে ভালোবেসে আগলে রাখে, মনটাকে ছুঁয়ে দেয়। নিশানের বিশ্বাস, তার জন্ম–মৃত্যুও জানে, জেরিন ছাড়া তার জীবন শূন্য।
গল্পগুলো এসেছে গানে গানে। ’একটুখানি মন’ শিরোনামের গানে এভাবেই বলা হয়েছে নিশান–জেরিনের ভালোবাসার গল্প। ২০ মার্চ দুপুরে প্রকাশ পেয়েছে ’দাগি’ সিনেমার প্রথম গান। যে নিশান ও জেরিনের কথা বলা হচ্ছে সেটি মূলত সিনেমার চরিত্রের নাম। এ দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন আফরান নিশো ও তমা মির্জা।
সাজিদ সরকারের সুর ও সংগীতায়োজনে ’একটুখানি মন’ শিরোনামের গানটি গেয়েছেন তাহসান খান ও মাশা ইসলাম। গানটি লিখেছেন জনপ্রিয় কবি ও ঔপন্যাসিক সাদাত হোসাইন। আগেও তিনি, শিহাব শাহীন ও সাজিদ সরকার এক সঙ্গে কাজ করেছেন। সাদাত হোসাইন জানান, তিনি কখনই গান লেখার চেষ্টা করেন না। তিনি লেখেন কবিতা। পরে সেটি শ্রোতাদের সামনে আসে গান হয়ে।
’একটুখানি মন’ গানটি লেখার পেছনের গল্প জানিয়ে সাদাত হোসাইন বলেন, ’একটা অস্থির সময় যাচ্ছে। তাই লেখার সময় শব্দ–বাক্যে স্নিগ্ধতা রাখতে চেয়েছি। গানটির মধ্যে একটা সম্মোহন শক্তি রয়েছে বলে আমার মনে হয়েছে। এর জন্য আমি সাজিদ সরকার এবং শিহাব শাহীনকে ধন্যবাদ দেব। তবে বেশি ধন্যবাদ দেব নির্মাতাকে। গানের প্রত্যেকটি ড্রাফট তিনি আমাকে শুনিয়েছেন, শব্দ যুক্ত করা বা বাদ দেয়ার ব্যাপারে কথা বলে নিয়েছেন। অনেক কথার পর সুর–শব্দ নিয়ে আমরা একটা যৌক্তিক যায়গায় আসতে পেরেছি। আশা করছি গানটি শ্রোতা–দর্শকদের ভালো লাগছে।’
’একটুখানি মন’ গানটি নিয়ে কণ্ঠশিল্পী মাশা ইসলাম বলেন, ’সবাই চাইছিল গানটিতে যেন আমি কণ্ঠ দেই। আমিও ভাবলাম, গানটি ঠিকমতো রেকর্ড করে দেখি কী হয়। প্রথমে শুনেই গানটির সুর খুব ভালো লেগেছে, তাছাড়া ঈদের সিনেমার গান এটি। সব মিলিয়ে আমারও আগ্রহ ছিল। চেষ্টা করেছি সেরাটা দিয়ে কাজটি করার।’
এই গানের মাধ্যমে ১০ বছর পর সিনেমায় আবার এক হলেন নির্মাতা শিহাব শাহীন ও সুরকার সাজিদ সরকার। গানটি তৈরীর গল্প বলতে গিয় সাজিদ সরকার বলেন, ’আমরা একটা সুন্দর রোমান্টিক গান করতে চেয়েছি। সাদাত হোসাইন দারুণ লিখেছেন। শব্দের নিজস্ব একটা অনুভূতি আছে। সেটাকে শ্রোতাদের কাছে আরও প্রানবন্ত করে তোলাটাই ছিল আমার কাজ। শুধু গানটাই নয়, পুরো সিনেমার যে আবহ, তার সঙ্গেও যেন সুরটা যায়, সেটাও আমাদের ভাবনায় ছিল। এখন গানটি শ্রোতারা শুনছেন, তারাই বলবেন কেমন লাগছে।’
১ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের গান ভিডিওতে সিনেমার নতুন কিছু দৃশ্য পাওয়া গেছে। যেখানে আফরান নিশো এবং তমা মির্জাকে পাওয়া গেছে বেশ রোমান্টিক মুডে। ভিন্নি লুক এবং পরিস্থিতিও প্রকাশ পেয়েছে কিছু দৃশ্যে। এর আগে ১১ মার্চ প্রকাশ পায় সিনেমাটির টিজার।
এসভিএফ আলফা আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড এবং চরকি প্রযোজিত সিনেমায় অভিনয় করেছেন সুনেরাহ বিনতে কামাল, শহীদুজ্জামান সেলিম, গাজী রাকায়েত, মিলি বাশার, রাশেদ মামুন অপুসহ অনেকে। ’দাগি’ মুক্তি আর প্রায়শ্চিত্তের গল্প, এ ধরনের গল্প দেশের দর্শক দেখেনি বলে জানিয়েছন নির্মাতা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: নত ন স ন ম নত ন গ ন স দ ত হ স ইন স জ দ সরক র একট খ ন
এছাড়াও পড়ুন:
রাশিয়ার কাছে ট্রাম্পের পরমাণু সাবমেরিন মোতায়েনের ঝুঁকি আসলে কতটা
সাধারণ সময়ে এই ঘটনা খুবই অস্বাভাবিক, যুগ পরিবর্তনকারী ও ভয়জাগানিয়া বলে মনে হতো। কারণ, স্নায়ুযুদ্ধকালেও কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রকাশ্যে রাশিয়ার উপকূলের দিকে পরমাণু সাবমেরিন পাঠানোর এমন নির্দেশ দেননি।
এই ধরনের পরমাণু উত্তেজনার খেলায় আগে কখনো যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নেতা জড়াননি।
সত্যি বলতে, ১৯৬২ সালে কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র–সংকটে সোভিয়েত ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের উপকূল থেকে মাত্র ৯০ মাইল দূরে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বসিয়ে বিশ্বকে পরমাণু যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। সেই সময় ১৩ দিন ধরে পুরো পৃথিবী ভয় আর অনিশ্চয়তায় কাঁপছিল।
তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কল্পনাবিলাসী শাসনব্যবস্থার কারণে এবার তেমন ভয় বা আতঙ্ক দেখা যাচ্ছে না। এটি মোটেই কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র–সংকটের দ্বিতীয় সংস্করণ নয়, তা খুব স্পষ্ট।তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কল্পনাবিলাসী শাসনব্যবস্থার কারণে এবার তেমন ভয় বা আতঙ্ক দেখা যাচ্ছে না। এটি মোটেই কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র–সংকটের দ্বিতীয় সংস্করণ নয়, তা খুব স্পষ্ট।
তবে তার অর্থ এই নয় যে ট্রাম্প যা করলেন, সেটি কোনো ঝুঁকিমুক্ত সিদ্ধান্ত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়ার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অবস্থান এমনভাবে বদলেছেন, যেটা তাঁর পূর্বসূরিদের কেউই সাহস করেননি। এমনকি অনেকটা হালকাভাবেই তিনি পারমাণবিক উত্তেজনার সিঁড়ির প্রথম ধাপে পা রেখেছেন।
এখন যদি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পাল্টা জবাব দিতে চান, তাহলে বড় ধরনের সংকট তৈরি হতে পারে।
ট্রাম্প হয়তো মনে করছেন, পুতিন তেমন কিছু করবেন না। আসলে ট্রাম্প সম্ভবত এবার রাশিয়ার কৌশলই ব্যবহার করছেন।
পুতিন দীর্ঘদিন ধরেই পারমাণবিক অবস্থান বদলানোকে চাপ সৃষ্টির কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। পশ্চিমাদের সঙ্গে উত্তেজনার সময় তিনি প্রায়ই কালিনিনগ্রাদে পারমাণবিক ওয়ারহেড ছুড়তে সক্ষম ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেন। এই কালিনিনগ্রাদ এলাকাটি ন্যাটোর সদস্যদেশ পোল্যান্ডের সীমান্তে অবস্থিত।
২০২৩ সালে পুতিন বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করেন। স্নায়ুযুদ্ধের পর এই প্রথম রাশিয়া নিজেদের দেশের বাইরে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করল। তিনি ইউক্রেনে বারবার কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ইঙ্গিতও দিয়েছেন।
আর গতকাল শুক্রবার পুতিন ঘোষণা দিলেন, রাশিয়া ওরেশনিক নামে একধরনের হাইপারসনিক মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি শুরু করেছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ২০২৫ সালের মধ্যেই বেলারুশে মোতায়েন করা হবে। তিনি দাবি করেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের জন্য নির্দিষ্ট স্থানও ইতিমধ্যে বাছাই করে রাখা হয়েছে।
গত কয়েক দিনে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ সতর্ক করে বলেছেন, ট্রাম্পের নানা হুমকি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দিতে পারে। মেদভেদেভ রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আক্রমণাত্মক ভূমিকা পালন করছেন। তিনি এর আগেও পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দিয়েছেন।
পুতিন দীর্ঘদিন ধরেই পারমাণবিক অবস্থান বদলানোকে চাপ সৃষ্টির কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। পশ্চিমাদের সঙ্গে উত্তেজনার সময় তিনি প্রায়ই কালিনিনগ্রাদে পারমাণবিক ওয়ারহেড ছুড়তে সক্ষম ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেন।কিছুদিন আগেও পুতিনের ভক্ত হিসেবে পরিচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি রাশিয়ার হুমকিকে পাত্তা দিচ্ছেন এবং তার মোকাবিলায় পাল্টা চাল দিচ্ছেন।
অন্যভাবে বললে, রাশিয়া যেটাকে ‘কেবল হুমকি’ হিসেবে দিচ্ছে, ট্রাম্প সেটাকে ‘আসল হুমকি’ হিসেবে নিচ্ছেন। এটা অনেকটাই উল্টো পরিস্থিতি। কারণ, ট্রাম্পের সমর্থকেরা সাধারণত বলে থাকেন, তাঁর কথাকে সরাসরি না নিয়ে রূপকভাবে বুঝতে হবে।
মেদভেদেভকে উদ্দেশ করে ট্রাম্প তাঁর নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে লেখেন, ‘শব্দের গুরুত্ব অনেক। আর সেগুলো অনেক সময় এমন পরিণতি ডেকে আনতে পারে, যা কেউ চায় না।’
তাই ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই হুমকিকে অনেকটাই নাটকীয় ‘পারফরম্যান্স’ বলা যায়। হ্যাঁ, এটি উচ্চ ঝুঁকির, দায়িত্বহীন। তবে শেষমেশ এটি একধরনের ‘লোক দেখানো কার্যকলাপ’।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের পেছনে অন্য উদ্দেশ্যও থাকতে পারে। আগামী কয়েক দিনে ট্রাম্পকে ব্যাখ্যা করতে হবে, ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। দিন দিন এটির গুরুত্ব আরও বাড়ছে। কারণ, গতকাল শুক্রবার কিয়েভে রাশিয়ার এক হামলায় ৩১ জন নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া রাশিয়ার তেল-গ্যাস কেনা দেশগুলো বিশেষ করে চীন, ভারত, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওপর দ্বিতীয় স্তরের নিষেধাজ্ঞা জারি করার পরিকল্পনাও ট্রাম্পের জন্য কূটনৈতিক চাপে পরিণত হয়েছে।
এ সবকিছুর মাঝখানে ট্রাম্প যদি পরবর্তী সময়ে তাঁর হুমকি থেকে সরে দাঁড়াতে চান, তাহলে তিনি দেখাতে পারবেন যে সাবমেরিন মোতায়েনের মাধ্যমে তিনি রাশিয়াকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। তিনি এমন একটি কৌশল নিয়েছেন, যার ঝুঁকি হয়তো বেশি, কিন্তু অর্থনৈতিক খরচ তুলনামূলকভাবে কম। বিশেষ করে যেসব মিত্রদেশকে তিনি অন্য ক্ষেত্রে পাশে পেতে চান, তাদের ওপর শুল্ক আরোপের চেয়ে এই মূল্য তুলনামূলক কম।