সিলেটে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল শিক্ষক-চালক-হেলপারের
Published: 15th, April 2025 GMT
সিলেটে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন স্কুল শিক্ষক, ট্রাক চালক ও হেলপার। সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার বিকেলে পৃথক এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এর মধ্যে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের থানা বাজার এলাকায় বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারান মোটরসাইকেল আরোহী জকিগঞ্জ ক্যাডেট হোম স্কুলের শিক্ষক তাসনিয়া পারভীন জুঁই (২৪)। ওই সময় আহত হন তার ভাই বিজিবি সদস্য ইমদাদুল হক ইমন (২৪)।
নিহতরা জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের লালো গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি কমান্ডার আমিনুল হক বাচ্চুর ছেলে-মেয়ে। শিক্ষক জুঁই তার ভাইকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।
জানা যায়, সহকারী শিক্ষক তাসনিয়া পারভীন জুঁই স্কুল শেষে ছোটভাই ইমনের সঙ্গে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে থানাবাজার এলাকায় সিলেট থেকে ছেড়ে আসা একটি বাসের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান জুঁই। মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিলেন তার ভাই ইমন।
গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ওসমানী হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
খবর পেয়ে জকিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাস ও মোটরসাইকেল জব্দ করে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না।
এদিকে সোমবার রাতে সিলেটের মোগলাবাজার থানা এলাকার পারাইরচক এলাকায় ট্রাকচাপায় অপর ট্রাকের চালক ও হেলপার নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের কমলাবাড়ি গ্রামের ট্রাকচালক শাহীন মিয়া শামীম (৫০) ও তার সহযোগী কামাল মিয়া (৪৫)।
মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চাকা পাংচার হয়ে একটি ট্রাক বিকল অবস্থায় সড়কের পাশে দাঁড় করানো ছিল। ওই ট্রাকের চালক ও হেলপার বিকল ট্রাকটি মেরামত করার চেষ্টা করছিলেন। ওই সময় শ্রীরামপুর থেকে পারাইরচকের দিকে আসা পাথরবোঝাই অন্য একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হত ত ন
এছাড়াও পড়ুন:
দোয়ার ফজিলত ও আদব
দোয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা বা প্রার্থনা করা। পরিভাষায় দোয়া হলো কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার রোধে মহান আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৩)
আল–কোরআনের বর্ণনা, ‘আর তোমাদের রব বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬০)
মুমিনের পরিচয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কী কী চোখজুড়ানো প্রতিদান লুকায়িত আছে।’ (সুরা-৩২ সাজদা, আয়াত: ১৬-১৭)
‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১)দোয়া ও আমল কবুল হওয়ার মূল শর্ত হলো ইখলাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তাঁকে ডাকো খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে।’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎ কাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১) ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পাক পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৭৩)
নবীজি (সা.) বলেন, ‘উষ্কখুষ্ক ধুলায় ধূসরিত অবস্থায় দীর্ঘ সফরকারী একজন যে স্বীয় দুই হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করে বলে, “হে প্রভু! হে প্রভু!” অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং সে হারাম দ্বারা লালিত, তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম: ১৬৮৬)
নির্জনে নীরবে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫)। ‘পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহ্বান করো ভয় ও আশাসহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫-৫৬)
দোয়ার আদব হলো দৃঢ়সংকল্প ও আকুতির সঙ্গে দোয়া করা, দোয়া কবুলে প্রবল আশাবাদী হওয়া।
হজরত জাকারিয়া (আ.) তাঁর দোয়ায় বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার কাছে দোয়া করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪) হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘আশা করি, আমার প্রতিপালকের নিকট দোয়া করে আমি বিফল হব না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪৮)
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]