অধিগ্রহণ জটিলতায় ১৫ কিলোমিটার সড়কের সুফল আটকে আছে ৩ কিলোমিটারে। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ী সড়কের পৌর এলাকা অংশের ৩ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় পুরো সড়কে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। প্রায় প্রতিদিনই গর্তে যানবাহন উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনা।

ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসন করে দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ী সড়কের ধামদী এলাকায় এ মানববন্ধন করা হয়েছে।

আঠারবাড়ী থেকে ঈশ্বরগঞ্জ পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সড়কের কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের মার্চে। সে বছরের ৩০ জুনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার কথা ছিল। কিন্তু ১১৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার রাস্তাটির কাজ আটকে আছে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকায় ৩ কিলোমিটার ভূমি অধিগ্রহণ না করায়। পৌর এলাকায় সড়কের দুই পাশে বাসা-দোকানপাটের মালিকদের কেউ অধিগ্রহণের টাকা ছাড়া জমি ছাড়তে রাজি নন। এর মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। সড়কের কাজ বন্ধ থাকায় ঈশ্বরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী নিয়ে যাতায়াতেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে অধিগ্রহণ জটিলতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে না পেরে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগে। সড়ক বিভাগ আবেদন প্রত্যাখ্যান করে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিয়েই কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এ ছাড়া পৌর এলাকা ছাড়াও উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের কিছু অংশেও কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

মানববন্ধনে উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দিয়ে বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। শুধু তাই নয়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। এ সড়কটিও দীর্ঘদিন ধরে বেহাল।

সোহেল মিয়া নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ২০২২ সালে এই রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসনের মাধ্যমে মানুষকে ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

নিরাপদ সড়ক চাই ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি নূর হোসাইন কাঞ্চনের ভাষ্য, দ্রুত সময়ের মধ্যে এই রাস্তার কাজ শেষ করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। 

স্থানীয় অটোরিকশার চালক সবুজ মিয়া বলেন, ‘পত্তিদিনই (প্রতিদিন) কোনো না কোনো গাড়ি এই রোডে উইলডেয়া পড়ে। আর ৫ মিনিডের রাস্তা যাইতে সময় লাগে ১৫ থাইক্কা ২০ মিনিড। রাস্তাডা মেরামত কইরা দিলে আমরার খুব উপকার অইবো।’

অটোরিকশার যাত্রী নাজমা বেগম জানান, এই সড়ক দিয়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। ঝাঁকুনিতে রাস্তায়ই প্রসব হয়ে যায়। শুধু কি তাই, শরীরের হাড়গোড় ভেঙেচুরে যাওয়ার দশা হয়।

সড়কটি কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথের (সওজ) অধীনে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সওজের উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুস ছালাম সমকালকে বলেন, সড়কটির দুই পাশের ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসনের জন্য চলতি মাসের ৮ তারিখে ১১৪ কোটি টাকার প্রাক্কলন পাস হয়েছে। ইতোমধ্যে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ খাতে জমা হয়েছে। বাকি ১৪ কোটি টাকা প্রাক্কলন পাসের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রাক্কলন পাস হয়ে এলে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসনের জন্য নোটিশ করা হবে। দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা তাঁর।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ময়মনস হ ক ল ম ট র সড়ক প র এল ক সড়ক র ন রসন

এছাড়াও পড়ুন:

শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে ‍শিবচর থানায় মামলাটি করেন।

এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।

মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় চান না সাত কলেজের শিক্ষকেরা
  • দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের
  • বন কর্মকর্তার ১৭ বিয়ে: আদালতে মামলা, তদন্তে পিবিআই
  • শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তনের দাবিতে ৫টি পরিবেশবাদী সংগঠনের মানববন্ধন
  • ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
  • যে কারণে ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাঁর মাকে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • নিম্নমানের সরঞ্জাম দিয়ে সড়ক সংস্কার, দুদকের অভিযান