সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ম্যানার’ শেখানোর নামে ১৭ জন নবীন শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিং করার অভিযোগ পাওয়া গেছে কৃষি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের ২০ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আজ শুক্রবার অভিযোগ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

র‌্যাগিংয়ের শিকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ভর্তি হয়েছেন। প্রথম বর্ষ প্রথম সেমিস্টারে পড়ছেন। বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী নতুন ভর্তি হওয়া ১৭ জন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন একটি টং দোকানের পাশে আসতে বলেন। তাঁরা সেখানে গেলে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষার্থীদের র‌্যাগিং করেন।

নতুন শিক্ষার্থীদের মুঠোফোন জব্দ করে কিংবা সুইচ বন্ধ করে দিয়ে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা জ্যেষ্ঠদের সালাম দেওয়া নিয়ে অশ্লীল নানা কথাবার্তা বলেন। একপর্যায়ে তাঁরা নতুন শিক্ষার্থীর কয়েকজনকে এক পায়ে দাঁড় করিয়েও রাখেন। একজন শিক্ষার্থীকে তাঁরা ব্যাঙের মতো লাফানোর নির্দেশও দেন।

র‌্যাগিংয়ের শিকার এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রায় আড়াই ঘণ্টা তাঁরা র‌্যাগিংয়ের শিকার হন। তাঁদের মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনার তাঁরা সুষ্ঠু প্রতিকার চান।

যোগাযোগ করলে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ সামিউল আহসান তালুকদার শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি, র‌্যাগিং ও বুলিং পুরোপুরি নিষিদ্ধ। ২০ জন ছাত্রের বিরুদ্ধে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলেও কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে তিনি জানিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জন শ ক ষ র থ দ ব ত য় বর ষ প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ