চাঁদার দাবিতে ব্রিজের নির্মাণকাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ
Published: 23rd, April 2025 GMT
সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর সড়কের রাধানগর ব্রিজ নির্মাণকাজে বাধা ও চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বিরুদ্ধে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট ম্যানেজার সুবেল আহমদ বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে রাধানগর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক জিহান জুবায়ের ও সদস্য সচিব মেহেদি হাসানের নেতৃত্বে ১০-১২ জন আসেন। তারা ঠিকাদারকে দেখা করতে বলেন। কাজে অনিয়ম হচ্ছে বলে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে কাজ করতে দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দেন। এ বিষয়ে অভিযোগ করা হলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
অভিযোগের বিষয়ে মেহেদী হাসান সমকালকে বলেন, আমরা কাজের অনিয়মের বিষয়টি দেখতে গিয়েছিলাম। পরে বিষয়টি নিয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) সুনামগঞ্জের প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা হয়েছে। চাঁদা দাবি কিংবা কাজ বন্ধের হুমকির বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তিনি বলেন, আমাদের দায়িত্ব সরকারি কাজে সহায়তা করা। অনিয়ম হলে উপস্থাপন করা। সে জন্যই আমরা গিয়ে ছিলাম।
এ বিষয়ে ঠিকাদার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কাজ মাত্র শুরু হয়েছে। তারা কীভাবে বুঝলেন অনিয়ম হয়েছে। অযাচিত হস্তক্ষেপের বিষয়টি এনসিপির সদস্য সচিব আকতার হোসেনকে জানানো হয়েছে। তিনি বলেছেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলতে এখন কিছু নেই। আপনি মামলা করেন। আমি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
সুনামগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, ঠিকাদারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তারা গিয়ে কাউকে পায়নি।
প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর সড়ক ও সড়কের রাধানগর এলাকায় একটি ব্রিজ নির্মাণসহ উন্নয়নকাজে ৮৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বদরুল ইকবাল লিমিডেট। সম্প্রতি সড়ক ও ব্রিজের কাজও শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজ পরিচালন করছেন সিলেটের ঠিকাদার শফিকুল ইসলাম।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দোয়ার ফজিলত ও আদব
দোয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা বা প্রার্থনা করা। পরিভাষায় দোয়া হলো কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার রোধে মহান আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৩)
আল–কোরআনের বর্ণনা, ‘আর তোমাদের রব বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬০)
মুমিনের পরিচয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কী কী চোখজুড়ানো প্রতিদান লুকায়িত আছে।’ (সুরা-৩২ সাজদা, আয়াত: ১৬-১৭)
‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১)দোয়া ও আমল কবুল হওয়ার মূল শর্ত হলো ইখলাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তাঁকে ডাকো খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে।’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎ কাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১) ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পাক পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৭৩)
নবীজি (সা.) বলেন, ‘উষ্কখুষ্ক ধুলায় ধূসরিত অবস্থায় দীর্ঘ সফরকারী একজন যে স্বীয় দুই হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করে বলে, “হে প্রভু! হে প্রভু!” অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং সে হারাম দ্বারা লালিত, তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম: ১৬৮৬)
নির্জনে নীরবে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫)। ‘পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহ্বান করো ভয় ও আশাসহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫-৫৬)
দোয়ার আদব হলো দৃঢ়সংকল্প ও আকুতির সঙ্গে দোয়া করা, দোয়া কবুলে প্রবল আশাবাদী হওয়া।
হজরত জাকারিয়া (আ.) তাঁর দোয়ায় বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার কাছে দোয়া করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪) হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘আশা করি, আমার প্রতিপালকের নিকট দোয়া করে আমি বিফল হব না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪৮)
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]