সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর সড়কের রাধানগর ব্রিজ নির্মাণকাজে বাধা ও চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বিরুদ্ধে। 

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট ম্যানেজার সুবেল আহমদ বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে রাধানগর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক জিহান জুবায়ের ও সদস্য সচিব মেহেদি হাসানের নেতৃত্বে ১০-১২ জন আসেন। তারা ঠিকাদারকে দেখা করতে বলেন। কাজে অনিয়ম হচ্ছে বলে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে কাজ করতে দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দেন। এ বিষয়ে অভিযোগ করা হলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।  

অভিযোগের বিষয়ে মেহেদী হাসান সমকালকে বলেন, আমরা কাজের অনিয়মের বিষয়টি দেখতে গিয়েছিলাম। পরে বিষয়টি নিয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) সুনামগঞ্জের প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা হয়েছে। চাঁদা দাবি কিংবা কাজ বন্ধের হুমকির বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তিনি বলেন, আমাদের দায়িত্ব সরকারি কাজে সহায়তা করা। অনিয়ম হলে উপস্থাপন করা। সে জন্যই আমরা গিয়ে ছিলাম।

এ বিষয়ে ঠিকাদার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কাজ মাত্র শুরু হয়েছে। তারা কীভাবে বুঝলেন অনিয়ম হয়েছে। অযাচিত হস্তক্ষেপের বিষয়টি এনসিপির সদস্য সচিব আকতার হোসেনকে জানানো হয়েছে। তিনি বলেছেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলতে এখন কিছু নেই। আপনি মামলা করেন। আমি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

সুনামগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, ঠিকাদারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তারা গিয়ে কাউকে পায়নি।

প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর সড়ক ও সড়কের রাধানগর এলাকায় একটি ব্রিজ নির্মাণসহ উন্নয়নকাজে ৮৭ কোটি ৬০ লাখ টাকার কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বদরুল ইকবাল লিমিডেট। সম্প্রতি সড়ক ও ব্রিজের কাজও শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজ পরিচালন করছেন সিলেটের ঠিকাদার শফিকুল ইসলাম। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

টানা তিন মাস কমল দেশের পণ্য রপ্তানি

বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান দুই উৎসের একটি পণ্য রপ্তানি স্বস্তিতে নেই। টানা তিন মাস ধরে দেশের পণ্য রপ্তানি কমেছে। গত মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩৮২ কোটি ডলারের পণ্য। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ কম।

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে প্রায় ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। তারপরের দুই মাস, অর্থাৎ আগস্টে ২ দশমিক ৯৩ এবং সেপ্টেম্বরে পণ্য রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। তাতে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবরে) সামগ্রিক পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অথচ বিদায়ী অর্থবছর পণ্য রপ্তানি বেড়েছিল সাড়ে ৮ শতাংশ।

পণ্য রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ পরিসংখ্যান আজ সোমবার প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ১ হাজার ৬১৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ২ শতাংশ বেশি।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত অক্টোবরে তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হিমায়িত চিংড়ি, প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি কমেছে। তবে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, চামড়াবিহীন জুতা ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। মূলত তৈরি পোশাকের রপ্তানি ৮ শতাংশ কমে যাওয়ায় সামগ্রিক পণ্য রপ্তানি নেতিবাচক ধারায় চলে গেছে।

দেশের মোট রপ্তানি ৮০ শতাংশই তৈরি পোশাক। টানা তিন মাস ধরে তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমলেও অর্থবছরের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। গত জুলাইয়ে ৩৯৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল সাড়ে ২৪ শতাংশ। পরের মাসে রপ্তানি কমে পৌনে ৫ শতাংশ। আর সেপ্টেম্বরে কমেছিল প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ। গত মাসে, অর্থাৎ অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছে ৩০২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এই রপ্তানি গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় ৮ শতাংশ কম।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ১ হাজার ২৯৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ২৮১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক।

দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পণ্য রপ্তানি খাত বর্তমানে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। চলতি অর্থবছর এখন পর্যন্ত ইতিবাচক ধারায় আছে এই খাতের রপ্তানি। গত জুলাই-অক্টোবর সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৪১ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি।

পণ্য রপ্তানিতে তৃতীয় শীর্ষ খাত কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ৩৮ কোটি ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় পৌনে ২ শতাংশ কম। শুধু গত মাসে ১০ কোটি ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি কমেছে সাড়ে ৯ শতাংশ।

এদিকে চতুর্থ শীর্ষ রপ্তানি খাত হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি গত মাসে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছে ৭ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ শতাংশ। যদিও সেপ্টেম্বরে রপ্তানি কমেছিল দশমিক ৫৪ শতাংশ। সামগ্রিকভাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ২৮ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ৯ শতাংশ বেশি।

দেশের পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি এখনো ইতিবাচক ধারায় আছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ২৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেশি। শুধু গত মাসে ৮ কোটি ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ শতাংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ