ঝালকাঠিতে অল্পদিনেই বেশ জনপ্রিয়তা পাওয়া ‘হাউন আঙ্কেলের ভাতের হোটেল’ বন্ধ হয়ে গেছে। জেলা শহরের ব্র্যাক মোড়ে অবস্থিত এই হোটেলটি গত এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। কী কারণে হোটেলটি বন্ধ হলো সে বিষয়ে স্থানীয়রা কিছু জানাতে পারেননি। মালিক বলছেন, ঠিকাদারির ব্যবসা শুরু করায় তিনি হোটেলটি চালাতে পারছিলেন না।

গত বছরের ১৯ অক্টোবর ঝালকাঠিতে ‘হাউন আঙ্কেলের ভাতের হোটেলে’ ভিড় শিরোনামে পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজপোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকম-এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

এলাকাবাসী জানান, ঝালকাঠি পৌর শহরের বাসিন্দা ইমন চৌধুরীর একসময় হার্ডওয়ারের দোকান ছিল। পাশাপাশি তিনি ঠিকাদারি করতেন। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরে তার ঠিকাদারি ও ব্যবসায়ের অবস্থা তেমন একটা ভালো যাচ্ছিল না। পরে তিনি সবার পরামর্শ নিয়ে পৌর শহরের ব্রাকমোড়ে ভাতের হোটেল চালু করেন। হোটেলের নাম দেন ‘হাউন আঙ্কেলের ভাতের হোটেল’। এই নামের কারণে হোটেলটি ভাইরাল হয়েছিল। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসতেন হোটেলটিতে খাবার খেতে।

ব্র্যাকমোড় এলাকার বাসিন্দা জাকির সরদার বলেন, “হাউন আঙ্কেল নামে একটি ভাতের হোটেল চালু হওয়ার পরপরই ভাইরাল হয়।  দূরদূরান্ত থেকে লোকজন এখানে ছুটে আসতেন ভাত খেতে। গত একমাস ধরে হোটেলটি বন্ধ রয়েছে।” কী কারণে হোটেলটি বন্ধ হয়ে গেছে সে সম্পর্কে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।

হোটেলটির মালিক ইমন চৌধুরী বলেন, “হাউন আঙ্কেল’ নাম দেওয়ার কারণে ভাইরাল হয় হোটেলটি। খুব ভালো চলছিল আমার এই হোটেল। আমি পুনরায় ঠিকাদারি কাজ শুরু করেছি, যে কারণে হোটেলটি চালাতে পারছি না। অনেক পরিশ্রম করতে হয়। সব মিলিয়ে আমি হোটেলটি চালু রাখতে পারিনি।”

ঢাকা/অলোক/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ