ফিল্ড মার্শাল হিসেবে পদোন্নতি পেলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির
Published: 20th, May 2025 GMT
ভারতের বিরুদ্ধে অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুস এবং মারকা-ই-হক নামে পরিচিত সংঘাতে নেতৃত্বের জন্য ফিল্ড মার্শাল পদে পদোন্নতি পেয়েছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির। মঙ্গলবার পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে।
এপ্রিল মাসে পহেলগাম হামলার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার পর ৭ মে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাত শুরু হয়। ৭ মে রাতে নয়াদিল্লি পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরে ধারাবাহিক বিমান হামলা চালায়। ওই রাতেই ইসলামাবাদ পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান বিমান ভূপাতিত করে প্রতিক্রিয়া জানায়। ভারতের পাঠানো ড্রোন আটকানো এবং একে অপরের বিমান ঘাঁটিতে পরস্পরের বিরুদ্ধে আক্রমণের পর ১০ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়।
ফিল্ড মার্শাল পদমর্যাদা ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতার উপর তৈরি করা সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদমর্যাদা। এর আগে পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ুব খান এই পদমর্যাদা পেয়েছিলেন।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের দপ্তর বলেছে, “মারকা-ই-হক ও অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুসের সময় উচ্চ কৌশল এবং সাহসী নেতৃত্বের ভিত্তিতে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও শত্রুকে পরাজিত করার জন্য পাকিস্তান সরকার জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরকে (নিশান-ই-ইমতিয়াজ মিলিটারি) ফিল্ড মার্শাল পদে পদোন্নতির অনুমোদন দিয়েছে।”
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেনাপ্রধান মুনির “অনুকরণীয় সাহস ও দৃঢ়তার সাথে সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধ কৌশল ও প্রচেষ্টাকে ব্যাপকভাবে সমন্বয় করেছিলেন।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
টানা তিন মাস কমল দেশের পণ্য রপ্তানি
বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান দুই উৎসের একটি পণ্য রপ্তানি স্বস্তিতে নেই। টানা তিন মাস ধরে দেশের পণ্য রপ্তানি কমেছে। গত মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩৮২ কোটি ডলারের পণ্য। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ কম।
চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে প্রায় ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। তারপরের দুই মাস, অর্থাৎ আগস্টে ২ দশমিক ৯৩ এবং সেপ্টেম্বরে পণ্য রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। তাতে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবরে) সামগ্রিক পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অথচ বিদায়ী অর্থবছর পণ্য রপ্তানি বেড়েছিল সাড়ে ৮ শতাংশ।
পণ্য রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ পরিসংখ্যান আজ সোমবার প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ১ হাজার ৬১৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ২ শতাংশ বেশি।
ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত অক্টোবরে তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হিমায়িত চিংড়ি, প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি কমেছে। তবে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, চামড়াবিহীন জুতা ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। মূলত তৈরি পোশাকের রপ্তানি ৮ শতাংশ কমে যাওয়ায় সামগ্রিক পণ্য রপ্তানি নেতিবাচক ধারায় চলে গেছে।
দেশের মোট রপ্তানি ৮০ শতাংশই তৈরি পোশাক। টানা তিন মাস ধরে তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমলেও অর্থবছরের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। গত জুলাইয়ে ৩৯৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল সাড়ে ২৪ শতাংশ। পরের মাসে রপ্তানি কমে পৌনে ৫ শতাংশ। আর সেপ্টেম্বরে কমেছিল প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ। গত মাসে, অর্থাৎ অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছে ৩০২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এই রপ্তানি গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় ৮ শতাংশ কম।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ১ হাজার ২৯৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ২৮১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক।
দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পণ্য রপ্তানি খাত বর্তমানে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। চলতি অর্থবছর এখন পর্যন্ত ইতিবাচক ধারায় আছে এই খাতের রপ্তানি। গত জুলাই-অক্টোবর সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৪১ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি।
পণ্য রপ্তানিতে তৃতীয় শীর্ষ খাত কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ৩৮ কোটি ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় পৌনে ২ শতাংশ কম। শুধু গত মাসে ১০ কোটি ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি কমেছে সাড়ে ৯ শতাংশ।
এদিকে চতুর্থ শীর্ষ রপ্তানি খাত হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি গত মাসে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছে ৭ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ শতাংশ। যদিও সেপ্টেম্বরে রপ্তানি কমেছিল দশমিক ৫৪ শতাংশ। সামগ্রিকভাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ২৮ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ৯ শতাংশ বেশি।
দেশের পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি এখনো ইতিবাচক ধারায় আছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ২৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেশি। শুধু গত মাসে ৮ কোটি ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ শতাংশ।