নরসিংদী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে বদলি করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বদলির এই তথ্য জানা গেছে। 

রোববার হেফাজতে ইসলামের ‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের’ আলটিমেটাম দেওয়ার পরদিন আজ তাকে বদলি করা হয়েছে। 

নাদিরা ইয়াসমিন নরসিংদী জেলায় নারী অধিকারকর্মী হিসেবে পরিচিত। ‘নারী অঙ্গন’ নামে তাঁর একটি সংগঠন রয়েছে। এ ছাড়া ‘নারী অঙ্গন’ নামের একটি ওয়েব পোর্টালের সম্পাদক তিনি। সম্প্রতি ‘হিস্যা’ নামের একটি ম্যাগাজিনে ‘বিতর্কিত লেখা’ ছাপানোর অভিযোগ তুলে তাকে অপসারণ ও শাস্তির দাবি জানায় হেফাজতে ইসলাম। এমনকি একাধিক প্রতিবাদ সমাবেশ ও স্বারক লিপিও প্রদান করা হয়। 

রোববার নরসিংদী জেলা হেফাজতে ইসলামের সদস্যরা সকাল ১১টায় শহরের শিক্ষা চত্বরে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলামী নরসিংদী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আল্লামা ইসমাইল নূরপুরী। এ সময় বক্তব্য রাখেন- হেফাজতে ইসলাম নরসিংদী জেলা শাখার উপদেষ্টা আল্লামা বশির উদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি মুফতি রশিদ আহমেদ, মুফতি রবিউর ইসলাম, সহসভাপতি প্রিন্সিপাল আব্দুল নূর, মাওলানা ইলিয়াছ শেরপুরী, মাওলানা ওলিউল্লাহ, দপ্তর সম্পাদক মুফতি নুরুল হুদা, মাওলানা হেফাজত নেতা সাদেকুর রহমান সিদ্দিকী, মাওলানা ছলিমুল্লাহ আজিজ, মুফতি আব্দুল বাছেদ, মাওলানা  আশরাফ হোসেন ভূঁইয়া, মাওলানা খোরশেদ আলম মক্কী, নরসিংদী সরকারি কলেজের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান, মোজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান তারা। সেখানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরীর কাছে স্বারকলিপি দেন। এ সময় ‘বিতর্কিত’ শিক্ষক নাদিরা ইয়াছমিনকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বদলির আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। এতে প্রশাসন ব্যর্থ হলে জেলায় আইন শৃঙ্খলাপরিপন্থি যে কোনো অঘটনের জন্য প্রশাসনকে দায়ী থাকতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন হেফাজত নেতারা। আল্টিমেটামের পরদিন আজ তাকে বদলি করা হয়। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নরস দ বদল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার

স্বাধীনতার পর যারাই দেশ চালিয়েছে, তারা সবাই হিন্দুদের ব্যবহার করে শুধু নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার।

আজ শুক্রবার খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাধীনতা চত্বরে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু কমিটির উদ্যোগে হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন। তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাগ্যোন্নয়ন ও ডুমুরিয়া-ফুলতলাসহ দেশের সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নে এখন প্রয়োজন ইসলামি সরকার। যাঁরা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে ভয়-হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকিতে হিন্দুরা আর ভয় পাবে না। হিন্দুদের বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

গোলাম পরওয়ার বলেন, ৫৪ বছর যারা দেশ চালিয়েছে তারা সন্ত্রাস, দখলদারি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে হিন্দুদের শোষণ করেছে। জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের নির্মূল করা হবে। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, আমরা সেই পরিবর্তন আনতে চাই। লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। একটি দলই বাকি—জামায়াতে ইসলামী, তার প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয়ের বিষয়টি তুলে ধরে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিবর্তনের বার্তা দিয়েছে, আগামীতেও সেই বার্তা জনগণ দেবে।’

চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে দেড় হাজার শহীদ ও ৪০ হাজার আহতের কথা উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট দিয়েই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।

উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি বাবু কৃষ্ণ নন্দীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি দেব প্রসাদ মন্ডলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহসভাপতি আবুল খায়ের, শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন, শরাফপুর সর্বজনীন পূজা মন্দিরের গোঁসাই সাধু প্রমথ গাইন, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সহসভাপতি হরিদাস মন্ডল, কানাই লাল কর্মকার ও প্রশান্ত কুমার মন্ডল, কোষাধ্যক্ষ গৌতম কুমার মন্ডল, পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুভাষ সরদার, মাগুরখালী ইউনিয়ন সহসভাপতি সুজিৎ কুমার সরকার, ধামালিয়া ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুন্ডু, রুদাঘয়া ইউনিয়ন সভাপতি বিপ্লব সরকার, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার, খর্ণিয়া ইউনিয়ন সভাপতি নারায়ণ রাহা, মাগুরঘোনা ইউনিয়ন সভাপতি বিশ্বনাথ দাস, সাহস ইউনিয়ন সভাপতি তন্ময় মন্ডল, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি নিরঞ্জন রায়, রংপুর ইউনিয়ন সভাপতি তরুন কুমার মন্ডল, শোভনা ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির মহিলা সম্পাদক প্রিয়ংকা মন্ডল, মাগুরখালী ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ কুমার সরকার, আটলিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অনিমেষ মন্ডল, গুটুদিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মনোরঞ্জন মন্ডল, শরাফপুর ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস, শোভনা ইউনিয়ন সভাপতি স্বদেশ হালদার, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অরুন কুমার আচার্য প্রমুখ।

হিন্দু সম্মেলন ঘিরে ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে বর্ণিল মিছিল এসে জমায়েত হয়। সমাবেশ শেষে একটি গণমিছিল ডুমুরিয়া সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

হিন্দু সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, নতুন প্রজন্মের প্রথম ভোট দাঁড়িপাল্লার পক্ষে হোক। আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ারকে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করতে সবার প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
মতুয়া সংঘের সভাপতি সুদীপ্ত কুমার সুন্দর মন্ডল বলেন, ‘আমরা আর সংখ্যালঘু বলে পরিচয় শুনতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশি। স্বাধীনতার পর কোনো সরকার হিন্দুদের দাবিতে কাজ করেনি। এবার প্রমাণ হবে, হিন্দু মানেই একটি নির্দিষ্ট দল নয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রদলের কমিটি নেই ১৪ মাস, স্থবির কার্যক্রম
  • মামলায় ঝুলে গেছে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন
  • গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন সিলেট-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আদিবা হোসেন
  • সম্মেলনের প্রায় তিন মাস পর রাজশাহী মহানগর বিএনপির আংশিক কমিটি
  • হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার