গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে ইঞ্জিনচালিত ভ্যানের চাকায় ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস লেগে আন্না বেগম (২০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার (২৮ মে) দুপুরে উপজেলার লোহাইড়-বনগ্রাম সড়কের লোহাইড় মুন্সী বাড়ির কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তফা কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত আন্না বেগম মুকসুদপুর উপজেলার লোহাইর গ্রামের সোহেল মুন্সির স্ত্রী।

ওসি মোস্তফা কামাল বলেন, বনগ্রাম বাজার থেকে কেনাকাটা করে ইঞ্জিনচালিত ভ্যানে চড়ে লোহাইড় গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন আন্না। এ সময় ভ্যানটি মুন্সী বাড়ির কাছে পৌঁছালে আন্নার গায়ে থাকা ওড়না ভ্যানের চাকায় জড়িয়ে যায়। এতে ওড়না গলায় পেচিয়ে গেলে রাস্তার উপর ছিটকে পড়ে মারাত্মক আহত হয়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় সাপের কামড়ে দুইজনের মৃত্যু

মাদারীপুরে সংঘর্ষে আহত যুবকের মৃত্যু, কয়েকটি বাড়িতে হামলা

ওসি আরো জানান, নিহতের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। 

ঢাকা/বাদল/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদপুরে দেশি গরুর চাহিদা বেশি

পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ফরিদপুরে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর বাজার। এ জেলায় এবার কোরবানির জন্য প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পশু মজুত আছে। এসবের মধ্যে চলাঞ্চলে প্রাকৃতিক পরিবেশে পালিত দেশি গরুর চাহিদা বেশি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ফরিদপুরে এবার ১ লাখ ৮ হাজার ৯১টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এ জেলায় ১ লাখ ৮ হাজারটি কোরবানির পশুর চাহিদা আছে। ফরিদপুরে ৮ হাজার ১৭৮টি গরুর খামার আছে। কোরবানির জন্য গরুর পাশাপাশি ছাগল-ভেড়াসহ অন্যান্য পশুও প্রস্তুত করা হচ্ছে।

ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের চরদোলায় গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই আছে ক্ষুদ্র খামার। এসব খামারে প্রাকৃতিকভাবে পালিত গরুগুলোর চাহিদা ব্যাপক। নদী পার হয়ে ব্যাপারীরা ছুটে আসছেন এসব গরু কিনতে। 

আরো পড়ুন:

৪০ মণের ‘যুবরাজ’কে ঘরের বাইরে নিতে হবে দেয়াল ভেঙে 

প্রতিদিন হাজার টাকার খাবার খায় ১১০০ কেজির ‘জেট ব্ল্যাক’

ওই গ্রামের খামারি ইসরাক মুন্সি রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেছেন, “আমরা প্রাকৃতিক খাদ্য যেমন: ঘাস, ভুট্টা, ভুষি আর খৈল খাওয়াই। এই চরে ঘাস আর ভুট্টা লাগাই, তাতেই গরুগুলো মোটা-তাজা হয়েছে।” 

একই গ্রামের খামারি বিলকিস বেগম বলেন, “আমরা গরুগুলোকে বেঁধে রাখি না। তারা চরে ঘুরে ঘুরে ঘাস-পাতা খায়। মুক্তভাবে পালন করায় গরুগুলো চঞ্চল ও স্বাস্থ্যবান।” 

আরেক খামারি রাজু মুন্সি বলেন, “আমাদের চরের গরুগুলো মোটা-তাজা। দামও ভালো পাচ্ছি। ১ লাখ ২০ হাজার টাকার নিচে এখানে কোনো গরু নেই। প্রতিদিনই ব্যাপারীরা আসছেন।” 

তবে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের চরে পশু হাসপাতাল নেই। গরু অসুস্থ হলে শহরে নেওয়া সম্ভব নয়। আমরা চাই, এখানে একটি পশু হাসপাতাল হোক।”

চরদোলায় গ্রামের আরেক ক্ষুদ্র খামারি মালেক শেখ রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমরা কষ্ট করে প্রাকৃতিকভাবে গরু পালছি। কিন্তু, ভারত থেকে চোরাই পথে বেশি গরু এলে আমরা ক্ষতির মুখে পড়ব। আমাদের গরুর ভালো দাম পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। তাই, কোনোভাবেই যেন ভারত থেকে গরু না আসে।”

চরাঞ্চলে গরু কিনতে আসা ব্যাপারী মো. তানভীর রহমান বলেন, “ফরিদপুরের চরাঞ্চলের গরুগুলোর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি দেন, তাদের প্রথম পছন্দ এই প্রাকৃতিকভাবে পালিত গরু। শহরের ছোট-বড় খামারের গরুগুলোও মানসম্পন্ন।”

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সঞ্জীব কুমার বিশ্বাস রাইজিংবিডিকে বলেন, “এবার কোরবানির জন্য পর্যাপ্ত পশু আছে। বিশেষ করে, চরাঞ্চলের ক্ষুদ্র খামারিদের গরুগুলোর চাহিদা বেশি। আমরা সব সময় তাদের সহযোগিতা করছি। গরু অসুস্থ হলে ফোন পেলেই আমরা দ্রুত পৌঁছে চিকিৎসা দিচ্ছি।” 

চরাঞ্চলে পশু হাসপাতালের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “খামারিরা এ বিষয়ে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। তবে, লিখিত কোনো আবেদন পাইনি। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।”

চরাঞ্চলের ক্ষুদ্র খামারিদের প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু পালন এবং বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা ফরিদপুরের কোরবানির বাজারকে আরো সমৃদ্ধ করেছে। তবে, পশু হাসপাতালের অভাব দূর করতে পারলে এই অঞ্চলের খামারিরা আরো বেশি উপকৃত হবেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ