বর্ষায় রূপ মেলেছে সিলেটের, এখনই সময় বেড়ানোর
Published: 10th, June 2025 GMT
প্রতি বর্ষায় সিলেটের প্রকৃতি নিজের রূপ আর স্নিগ্ধতা মেলে ধরে। নান্দনিক সৌন্দর্যের টানে তাই পর্যটকেরাও বর্ষায় ছুটে আসেন। তবে এবার বৃষ্টির মৌসুম শুরু হতে না-হতেই পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। পর্যটনকেন্দ্রগুলোও হয়ে পড়ে পানিবন্দী।
হঠাৎ পর্যটকবান্ধবহীন এমন পরিস্থিতিতে ঘটে ছন্দপতন। তবে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কাকতালীয়ভাবে পানি কমতে শুরু করে। পর্যটনকেন্দ্রগুলোও আবার হয়ে ওঠে মুখর। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা সিলেটে ছুটে আসছেন প্রকৃতির রূপ আর স্নিগ্ধতা উপভোগ করতে।
পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সিলেটের জনপ্রিয় সব কটি পর্যটনকেন্দ্রই পানিকেন্দ্রিক। তাই বর্ষা মৌসুমেই এসব পর্যটনকেন্দ্র ঘিরে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকে। এবার ঈদের ছুটিতেও প্রতিটি স্পটে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক আসছেন। যেহেতু এখনো পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি চলছে, তাই আগামী শনিবার পর্যন্ত পর্যটকদের এমন উপচে পড়া ভিড় থাকবে। এবারের ছুটিতে সিলেটে লাখো পর্যটক হবেন বলে ব্যবসায়ীরা ধারণা করছেন।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আকস্মিক পানি চলে আসায় পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা আশঙ্কায় ছিলেন, এবারের ঈদের ছুটিতে আশানুরূপ পর্যটক আসবেন না। তবে দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এ অবস্থায় প্রচুর পর্যটক আসছেন। ঈদের আরও যে কয়েক দিন ছুটি আছে, একই অবস্থা থাকবে।
পর্যটকেরা ঈদের ছুটিতে ঘুরতে যান সিলেটের গোয়াইনঘাটের রাতারগুলে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঈদ র ছ ট
এছাড়াও পড়ুন:
দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত
নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ পর্যটকদের জন্য খুলে দিয়েছে সরকার। সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছিল, কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন দুই হাজার পর্যটক যেতে পারবেন। কিন্তু দুই দিনে একজন পর্যটকও যেতে পারেননি। কারণ, পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ। কবে থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হবে, তা নিয়েও কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।
কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকেই পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াতের কথা। এ জন্য ১ হাজার ৭০০ জন ধারণক্ষমতার দুটি জাহাজ—এমভি কর্ণফুলী ও এমভি বার আউলিয়া চলাচলের অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু গতকাল শনিবার ও আজ রোববার ওই রুটে কোনো জাহাজ চলেনি। আরও চারটি জাহাজ চলাচলের অনুমতির জন্য আবেদন করেছে।
সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত যাপন করা যাবে না, তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাতযাপনের সুযোগ থাকবে। বিআইডব্লিউটিএ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবে না। পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকতে হবে। কিউআর কোডবিহীন টিকিট নকল বলে গণ্য হবে।
সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে রাতের বেলায় সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সৈকতে মোটরসাইকেল বা সি-বাইকসহ মোটরচালিত যান চলাচলও বন্ধ। নিষিদ্ধ পলিথিন বহন এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক (চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, পানির বোতল ইত্যাদি) ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
পর্যটক নেই, ফাঁকা ঘাটআজ সকাল সাতটায় নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, কোনো যাত্রী নেই। বাঁকখালী নদীতেও পর্যটকবাহী কোনো জাহাজ দেখা যায়নি। ঘাটে অবস্থান করছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। জানা যায়, গতকাল সকালে তিনজন পর্যটক টিকিট কেটে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, পরে জাহাজ না থাকায় ফিরে যান।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য সেন্ট মার্টিন উন্মুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় গত দুই দিনে কোনো পর্যটক যেতে পারেননি। নভেম্বরে দিনে গিয়ে দিনে ফেরার নিয়ম থাকায় সময় ও সুযোগ কম, আবার দীর্ঘ জাহাজযাত্রার কারণে অনেকেই নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। তারপরও আমরা সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে ঘাটে অবস্থান করছি।’
জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, টানা ৯ মাস বন্ধ থাকার পর ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে উখিয়ার ইনানী নৌবাহিনীর জেটিঘাট কিংবা টেকনাফের কোনো স্থান থেকে এখনো জাহাজ চলাচলের অনুমতি নেই।
জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে।
গত ডিসেম্বরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ছেড়ে কক্সবাজারের পথে পর্যটকবাহী একটি জাহাজ