নড়াইলে বাড়ির সামনে ঝোপে মিলল গৃহবধূর লাশ, স্বামী পলাতক
Published: 13th, June 2025 GMT
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় বাড়ির সামনে ঝোপঝাড় থেকে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার নলদী ইউনিয়নের গাছবাড়িয়া এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত গৃহবধূর নাম সালমা বেগম (৩০)। তিনি লোহাগড়া উপজেলার গাছবাড়িয়া এলাকার সৈয়দ সাঈদুর রহমানের মেয়ে এবং পাশের লাহুড়িয়া এলাকার শহীদুল ইসলামের স্ত্রী। ঘটনার পর থেকে স্বামী শহীদুল ইসলাম পলাতক।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রেমের সম্পর্কের পর প্রায় ছয় মাস আগে লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া এলাকার সালাম মোল্যার ছেলে শহীদুল ইসলামের সঙ্গে একই উপজেলার গাছবাড়িয়া এলাকার সাঈদুর রহমানের মেয়ে সালমা বেগমের বিয়ে হয়। তবে স্বামীর আরেকটি বউ থাকায় বিয়ের পরও শ্বশুরবাড়িতে যেতে পারেননি সালমা। এ কারণে বাবার বাড়ি গাছবাড়িয়াতেই ঘর বেঁধে বসবাস করছিলেন। স্বামী শহীদুল মাঝেমধ্যে সেখানে থাকতেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেও সালমার বাড়িতে যান শহীদুল ইসলামে। রাতে সেখানে ছিলেন। আজ সকালে পরিবারের লোকজন সালমার বাড়িতে গেলে সালমা বা তাঁর স্বামী কাউকে দেখতে পাননি। একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে বাড়ির সামনে ঝোপের মধ্যে পড়ে সালমার লাশ দেখতে পান এক প্রতিবেশী। খবর পেয়ে দুপুরের দিকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে লাশ উদ্ধারের পর পরিবারের সদস্যরা পুলিশ নিয়ে শহীদুলের লাহুড়িয়ার বাড়িতে গেলে তিনি পালিয়ে যান।
সালমার বোন আছমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘গতকাল রাতে আপার বাড়িতে আসেন দুলাভাই। রাতে একসঙ্গে রান্না করে খেয়েছেন। আমার বাসায় তরকারিও দিয়ে গেছেন। সকালে বাড়ির সামনে থেকে আপার লাশ পাওয়া গেছে। তাঁর গলায় ওড়না প্যাঁচানো ছিল। নাক দিয়ে রক্ত পড়ে ভেসে গেছে। আমার আপাকে খুন করা হয়েছে। শহিদুলই আমার আপাকে মেরে পালিয়েছে। আমরা শহীদুলের বিচার চাই।’
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে ওই নারীকে হত্যা করা হয়েছে। নারীর স্বামী পলাতক। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ড় র স মন উপজ ল র ল হ গড় এল ক র
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবেশবান্ধব পর্যটনে সমন্বিত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
সিলেটের জাফলংসহ দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যবাহী এলাকাগুলোতে পরিবেশবান্ধব পর্যটন (ইকো-ট্যুরিজম) উন্নয়নে একটি সমন্বিত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত শ্রমজীবী মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করাই এই মহাপরিকল্পনার অন্যতম লক্ষ্য।
আজ শনিবার দুপুরে জাফলং এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন। এ সময় পাথর কোয়ারির শ্রমিকরা তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের দাবি জানান।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করবে। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহের মধ্যে সমন্বয় করে প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে।
রিজওয়ানা বলেন, জাফলং একটি পরিবেশগতভাবে বিপন্ন এলাকা। এখানে পাথর উত্তোলনের জন্য আর কোনো ইজারা দেওয়া হবে না। অতিরিক্ত পাথর ও বালু উত্তোলনের কারণে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নষ্ট হচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে পুরো নদীব্যবস্থাকে হুমকিতে ফেলছে।
জাফলংয়ে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় ওই এলাকার স্টোন ক্রাশারগুলোও সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, অবৈধভাবে কেউ যাতে পাথর উত্তোলন করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা হবে। জাফলংয়ের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় আমরা কোনো আপস করব না।
পরিদর্শনের সময় দুই উপদেষ্টা জাফলংয়ের নদী ও পাথরভরা প্রাকৃতিক এলাকা জলযানে ঘুরে দেখেন এবং স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিবেশ ও পর্যটন উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে মতবিনিময় করেন। তারা জাফলং স্টোন মিউজিয়াম ও হরিপুর রেস্ট হাউজ এলাকায় গাছের চারা রোপণ করেন।
পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, জেলা প্রশাসক মো. শের মাহবুব মুরাদ, পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুর রহমান, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির ও পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার।