বাকৃবিতে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ১৫ ছাত্রী বহিষ্কার
Published: 23rd, July 2025 GMT
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ‘জুলাই ৩৬ হল’-এ পূর্বের নাম বহাল রাখার দাবিতে সংঘটিত আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ১৫ ছাত্রীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃতদের মধ্যে একজনকে আজীবনের জন্য হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং বাকিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে একাডেমিক ও আবাসিক হল থেকে বহিষ্কারের শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (২০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড.
আরো পড়ুন:
ইবি শিক্ষার্থী সাজিদের মৃত্যুর তদন্ত ও বিচারের দাবিতে একাট্টা
ফিটনেসবিহীন বাস অপসারণসহ নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ৫ দাবি
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এ বছরের ৯ জানুয়ারি রাতে ‘জুলাই ৩৬ হল’-এ কয়েকজন ছাত্রী অশোভন আচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ‘অর্ডিন্যান্স ফর স্টুডেন্ট ডিসিপ্লিন’-এর ১৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী এবং বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটির গত ১৩ জুলাইয়ের সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে কৃষিতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী সাইদা উম্মে রুমান বন্যাকে আজীবনের জন্য হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
দুই একাডেমিক সেমিস্টারের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম ও হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে ডেইরি সায়েন্স বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী লায়াবিন লতা, অ্যাকোয়াকালচার বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ইন্তা ইয়াসমিন, সেঁচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী সাদিকা তানজিল মিম এবং বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী শবনম মুস্তারীকে।
এক সেমিস্টারের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম এবং দুই সেমিস্টারের জন্য হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে কৃষি অর্থনীতির স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ইসরাত জামান ইশা এবং অ্যাকোয়াকালচার বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাহ্ তাসনিমকে।
এক সেমিস্টারের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম ও হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে কৃষিতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মনিরা মেইজাবীন, কীটতত্ত্ব বিভাগের রোবাইয়া শারমিন, পশুপালন অনুষদের স্নাতক শিক্ষার্থী সাবিয়া আফরিন প্রভা, কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের স্নাতক শিক্ষার্থী তাহরীমা আক্তার জয়া, ওয়েটল্যান্ড এগ্রিকালচারের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী নাসরিন সুলতানা এবং মেডিসিন বিভাগের শিক্ষার্থী আফরোজা মজিদকে।
এছাড়া শুধু এক সেমিস্টারের জন্য হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থী শামীম লাভলী এবং কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী অদিতি বড়ুয়া মীম।
গত ৯ জানুয়ারি তৎকালীন ফজিলাতুন্নেছা মুজিব (বর্তমান জুলাই ৩৬ হল) হলে রাত ৯টা থেকে ১টা পর্যন্ত চলা আন্দেলনের ঘটনায় কতিপয় ছাত্রী হলের পূর্বের নাম বহাল রাখার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে। এছাড়া কিছু ছাত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করে আপত্তিকর পোস্ট ও মন্তব্য করেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ার অভিযোগ এনে তা আমলে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ দিতে গত ২ ফেব্রুয়ারি তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শাস্তির বিষয়ে বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো. হেলাল উদ্দীন বলেন, “ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়েছে। ওই ঘটনার পরে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি নিশ্চয় সুষ্ঠুভাবে তদন্ত সম্পন্ন করেছে। এরপরেও এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ তদন্ত কমিটি ‘বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিন’ এ তোলা হয়। পরে তারা দোষীদের শাস্তি বা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন। সেই মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার চিঠি ইস্যু করেছে।”
কবে থেকে শাস্তি কার্যকর হবে এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, “যারা যারা চিঠি পেয়েছে তাদের চিঠিতে শাস্তির বিষয়ে উল্লেখ আছে। এক এক জনের শাস্তির মেয়াদ ভিন্ন। আর যাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে, তারা কারণ দর্শাবে। কেউ যদি দোষী না হয়ে থাকে, তারা অবশ্যই কারণ দর্শীয়ে চিঠির উত্তর দিবে। যাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে, এখন পর্যন্ত কেউ আপিল করেনি। আপিল করা তো শিক্ষার্থীদের অধিকার, সেটা তো তারা করতেই পারবে।”
ঢাকা/লিখন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক স ম স ট র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
অশোভন আচরণ, শিষ্টাচারবহির্ভূত বিরুদ্ধাচরণ কাম্য নয়: সৈয়দ এমরান সালেহ
আগামীকাল সোমবার ময়মনসিংহের টাউন হল মাঠে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি।
ময়মনসিংহে এনসিপির পদযাত্রা কর্মসূচিকে স্বাগত জানিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ বলেছেন, ‘ময়মনসিংহ শান্তির জনপদ। এখানে রাজনৈতিক শিষ্টাচার মেনেই আমরা রাজনীতি করি। আশা করছি সব রাজনৈতিক দল সেই শান্তি বজায় রেখে নিজ নিজ কর্মসূচি পালন করবে। এতে অশোভন আচরণ, শিষ্টাচারবহির্ভূত বিরুদ্ধাচরণ, অশ্লীল মন্তব্য বা কুৎসা রটনা কাম্য নয়।’
আজ রোববার দুপুরে ময়মনসিংহ নগরের টাউন হল মোড়ে গণ–অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গ্রাফিতি অঙ্কন ও গণসংগীত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে এমরান সালেহ সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের বুকের ভেতর থেকে ফ্যাসিবাদের জগদ্দল পাথর হয়তো এক বছর আগে নেমে গেছে। আমরা এখন মুক্তকণ্ঠে কথা বলতে পারছি। ৫ আগস্ট আমরা গণ–অভ্যুত্থানে বিজয় অর্জন করতে পেরেছি। কিন্তু সে অর্জন ছিল আংশিক। পরিপূর্ণ বিজয় তখনই হবে, যখন দেশে বহু আকাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারব এবং জনগণের শাসন আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে পারব। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারব। এর মধ্য দিয়েই আমরা পরিপূর্ণ বিজয় অর্জন করতে পারব।’
সৈয়দ এমরান সালেহ আরও বলেন, ‘গত এক বছর একটা দীর্ঘ সময়। আমরা ভাবিনি এত সময় লেগে যাবে। এখন দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই দেশে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়েই আমরা যে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ পাব বা সরকার পাব, সেই সংসদ ও সরকারের মধ্য দিয়েই এই গণ–অভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা, সেটাকে আমরা বাস্তবায়নের দিকে নিয়ে যেতে পারব।’
ময়মনসিংহ মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করেছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগরীর টাউন হল ও ধোপাখলা মোড় এলাকায় জুলাই-আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের স্মৃতি ধারণ করে দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতি অঙ্কন করেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ ওয়ারেস আলী ও আবু ওয়াহাব আকন্দ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ।