দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আসামিদের আপিল শুনানি চলছে
Published: 4th, August 2025 GMT
ঢাকার পল্লবীতে থানা হেফাজতে নির্যাতনে গাড়িচালক ইশতিয়াক হোসেনের (জনি) মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি চলছে। বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার চতুর্থ দিনের মতো শুনানি গ্রহণ করেন। পরবর্তী শুনানির জন্য ৬ আগস্ট দিন রেখেছেন আদালত।
এর আগে ২০১৩ সালে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন প্রণয়ন হয়। ইশতিয়াক হোসেনকে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট মামলা করা হয়, যেটি ওই আইনে করা প্রথম কোনো মামলা। এই মামলায় ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রায় দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ।
রায়ে পল্লবী থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাশেদুল হাসান ও এএসআই কামরুজ্জামানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। এঁদের প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা করে বাদী বা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। অপর দুই আসামি পুলিশের সোর্স (তথ্যদাতা) সুমন ও রাসেলের সাত বছর কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন বিচারিক আদালত।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে তিন আসামি ২০২০ সালে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন। তাঁরা হলেন জাহিদুর রহমান, রাশেদুল হাসান ও রাসেল। ২০২১ সালে হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। আর দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে তিন আসামির আপিলের ওপর একসঙ্গে গত ৯ জুলাই হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে আসামিপক্ষে আইনজীবী মো.
পরে আসামিপক্ষে আইনজীবী মো. আব্দুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, তিন আসামির আপিলের ওপর শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট পরবর্তী শুনানির জন্য ৬ আগস্ট দিন রেখেছেন। সেদিন যুক্তি–তর্ক উপস্থাপন শুরু হবে। দণ্ডিত পাঁচ আসামির মধ্যে কামারুজ্জামান (তৎকালীন এএসআই) পলাতক। অপর আসামি সুমন সাজা ভোগ করে বেরিয়েছেন।
ঘটনা সম্পর্কে মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পল্লবীর ১১ নম্বর সেকশনের বি ব্লকের ইরানি ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. বিল্লালের গায়েহলুদের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানে পুলিশের সোর্স সুমন নারীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। এ সময় সেখানে থাকা ইশতিয়াক ও তাঁর ভাই ইমতিয়াজ তাঁকে চলে যেতে বলেন। এ নিয়ে সুমনের সঙ্গে দুই ভাইয়ের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এরপর সুমনের ফোন পেয়ে পুলিশ এসে ইশতিয়াক ও ইমতিয়াজকে ধরে নিয়ে যায় এবং থানায় নিয়ে দুই ভাইকে নির্যাতন করে। ইশতিয়াকের অবস্থা খারাপ হলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে ইশতিয়াকের ভাই ইমতিয়াজ হোসেন তৎকালীন পল্লবী থানার এসআই জাহিদুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দেন। বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে পাঁচজনকে অভিযুক্ত এবং পাঁচজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়। তদন্তকালে এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামানকে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওই মামলায় ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত পাঁচ আসামি বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইশত য় ক র আপ ল আগস ট তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
সভাপতি পদে বিএনপি, সাধারণ সম্পাদক পদে জামায়াত–সমর্থিত প্রার্থী নির্বাচিত
কুড়িগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে সভাপতি পদে বিএনপি–সমর্থিত প্রার্থী ফখরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক পদে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী–সমর্থিত প্রার্থী সরদার মো. তাজুল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট গণনা শেষে বিকেলে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সোলায়মান আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় সহসভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদসহ সাতটি সম্পাদকীয় পদ এবং কার্যনির্বাহী সদস্য পদে বিএনপি–সমর্থিত প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছেন। ফলে ১৯ সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদ ছাড়া বাকি ১৮টি পদে বিএনপি–সমর্থিত প্যানেলের জয় হয়েছে।
ভোটের ফলাফল অনুযায়ী, সভাপতি পদে বিজয়ী বিএনপি–সমর্থিত ফখরুল ইসলাম পেয়েছেন ১২৮ ভোট। তাঁর নিকটতম ও একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত–সমর্থিত ইয়াছিন আলী সরকার পেয়েছেন ১০৭ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী জামায়াত–সমর্থিত সরদার মো. তাজুল ইসলাম পেয়েছেন ১২১ ভোট। তাঁর নিকটতম ও একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি–সমর্থিত আবুল কাশেম পেয়েছেন ১১২ ভোট। নির্বাচনে মোট ভোটার ২৪৯। নির্বাচনে ২৪১ জন ভোট দিয়েছেন। ৬টি ভোট বাতিল হয়েছে এবং দুজন ভোটার সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট দেননি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার সোলায়মান আলী বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় গত ৩১ আগস্ট কার্যনির্বাহী কমিটির ১৭ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচিত কমিটি আগামী দুই বছর দায়িত্ব পালন করবে।