নবম শ্রেণিতেই মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসার বিভাজন চাই না: শিক্ষা উপদেষ্টা
Published: 9th, February 2025 GMT
নবম শ্রেণি থেকেই মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা আলাদা করে দেওয়া হোক, সেটা চান না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেছেন, এ রকম বিভাজন আসলেই প্রয়োজন নেই, ভালোও না।
গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটের ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি) মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
বাংলার ম্যাথের উদ্যোগে ‘ওয়ার্ল্ড ম্যাথমেটিকস টিম চ্যাম্পিয়নশিপ-২৪’ এ অংশ নেওয়া ২৭ জন শিক্ষার্থীর সাফল্য উদ্যাপন উপলক্ষে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দ্য ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) ও ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক।
আরও পড়ুননবম শ্রেণি থেকে আবারও বিভাগ বিভাজন তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা০৪ জানুয়ারি ২০২৫শিক্ষাক্রম (কারিকুলাম) পরিবর্তনের বিষয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘একটি পরিবর্তনশীল জায়গায় আমরা আছি। একদিকে যাচ্ছিলাম, সেদিকে গেলে আর ফেরত আসা যেত না বলেই পেছনের দিকে গেছি। পেছন থেকে আবার সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’
আরও পড়ুনআয়ারল্যান্ড দিচ্ছে স্কলারশিপ, সুযোগ পাবেন যাঁরা৪ ঘণ্টা আগেউচ্চতর গণিত কিংবা বিজ্ঞানের উচ্চতর কিছু বিষয় নবম শ্রেণি থেকে শুরু করতেই পেছনের দিকে যেতে হচ্ছে বলে উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘কেউ যদি নবম শ্রেণি থেকেই উচ্চতর গণিত নিতে চায়, সেখান থেকে যদি না নেয়, তাহলে পরে উচ্চমাধ্যমিকে গেলে কঠিন হয়ে যায়।’
সর্বশেষ যে শিক্ষাক্রম চালু হয়েছিল, সেটিকে অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
আরও পড়ুনদশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করতে হবে এক বছরে০৫ জানুয়ারি ২০২৫সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ‘গণিতের সংস্কৃতিকে দেশজুড়ে ছড়িয়ে দিতে হলে.
শিক্ষা গবেষক রাখাল রাহার সঞ্চালনায় এতে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক হাসিনা খান ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মাহবুব মজুমদার, অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান সাইফুর রহমান, ইউএপির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিভাগের অধ্যাপক জি আর আহমেদ জামাল এবং বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির একাডেমিক কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কামরুল।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউন ভ র স ট নবম শ র ণ উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।