গ্রামীণ শক্তি দইয়ে ভেজালের অভিযোগ তুলে ১৪ বছর আগে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলার কার্যক্রম বাতিলের ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রায় দেন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তখন গ্রামীণ ডানোন ফুডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ছিলেন।

গ্রামীণ শক্তি দইয়ে ভেজাল অভিযোগ তুলে অধ্যাপক ইউনূসসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ১০ জানুয়ারি তৎকালীন ঢাকা সিটি করপোরেশনের খাদ্য পরিদর্শক বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে (স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, ঢাকা) ওই মামলা করেন। এ মামলায় একই বছরের ২৭ জানুয়ারি জামিন পান তিনি। এরপর মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে ২০১১ সালে হাইকোর্ট আবেদন করেন অধ্যাপক ইউনূস। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল দিয়ে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছিলেন।

ওই মামলার কার্যক্রম কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে আজ রায় দেন আদালত। আদালতে অধ্যাপক ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তানিম হোসেইন শাওন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মহসীন আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো.

তাহেরুল ইসলাম।

অধ্যাপক ইউনূসের আইনজীবী তানিম হোসেইন প্রথম আলোকে বলেন, শক্তি দইয়ে ভেজালের অভিযোগে অধ্যাপক ইউনূস, একজন দোকানদার, সরবরাহকারীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে সিটি করপোরেশন মামলা করে। এর আগে শক্তি দইয়ের এক নমুনায় পরীক্ষায় ভেজাল দাবি করে প্রতিবেদন দেয় সিটি করপোরেশন। মামলাটির কার্যক্রম বাতিল চেয়ে আবেদন করা হলে হাইকোর্ট রুল দিয়ে মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেন। এত দিন তা স্থগিত ছিল।

মাসখানেক আগে রুল শুনানির জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয় জানিয়ে তানিম হোসেইন বলেন, শুনানিতে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে হলফনামা আকারে তাদের অবস্থান জানানো হয়। এতে বলা হয়, ইয়োগার্টের মানদণ্ড ব্যবহার না করে সাধারণ দইয়ের মানদণ্ডে শক্তি দইয়ের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল; ফলে পরীক্ষার ফলাফল ভুল এসেছিল। সিটি করপোরেশনের হলফনামা আদালতে তুলে ধরে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতের ওই মামলার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ২০১১ স ল ইউন স র

এছাড়াও পড়ুন:

বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।

প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।

যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।

এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।

পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।

অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।

একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্যয় বাড়ল ১৪৪ কোটি টাকা
  • ৫ আসামিকে বাদ দিতে হলফনামা, বাদী কৃষক দল নেতাকে শোকজ
  • সারোগেসির মাধ্যমে বাবা হয়েছেন যেসব অভিনেতা
  • বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
  • দণ্ডাদেশ বহালের রায়ের বিরুদ্ধে ১০ আসামির আপিল ও লিভ টু আপিল
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর