পঞ্চগড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজনের মৃত্যু
Published: 28th, March 2025 GMT
পঞ্চগড় সদর ও আটোয়ারী উপজেলায় পৃৃথক এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় শুকুর আলী (৫০) ও অপূর্ব (৮) নামে দুইজন প্রাণ হারিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার তোড়িয়া ইউনিয়নের ছেপড়াঝাড় গ্রামে ও পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের চার মাইল এলাকায় মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা দুটি ঘটে।
নিহত শুকুর আলী পঞ্চগড়ের দেওয়ানহাট জমভিটা এলাকার সেকেন্দার আলীর ছেলে, অপূর্ব আটোয়ারী উপজেলার তোড়িয়া ইউনিয়নের ছেপড়াঝাড় গ্রামের চৈতন্য দেবের ছেলে।
জানা গেছে, ছেপড়াঝাড় গ্রামে রাস্তার পাশে বাড়ির বাইরে খেলা করছিল শিশু অপূর্ব। রাস্তার অপরপাশে আরো দুইজন শিশু খেলা করছিল। এসময় দ্রুতগামী একটি ট্রাক্টর দুই শিশুকে রক্ষা করে অপরসাইটে চাপাতে গিয়ে অপূর্বকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। পরে স্থানীয়রা ঘাতক ট্রাক্টরটিকে আটক করেছে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ মরদেহের প্রাথমিক সুরতহাল করেছে। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা থানা পুলিশ গ্রহণ করছে।
এদিকে পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের চার মাইল এলাকায় মহাসড়কে রাস্তা পার হওয়ার সময় অজ্ঞাত একটি গাড়ি শুকুর আলীকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
তোড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহ্ শিশুর নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ রায় বলেন, “স্থানীয়রা বলছেন শুকুর আলী কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। একই সাথে তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করতেন।”
ঢাকা/নাঈম/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।