ভৈরব নদীতে গোসলে নেমে দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ
Published: 20th, October 2025 GMT
মেহেরপুরের মুজিবনগরে ভৈরব নদীতে গোসল করতে নেমে দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছেন।
সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে মুজিবনগর উপজেলার রশিকপুর গ্রামের স্লুইস গেট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিখোঁজ শিক্ষার্থীরা হলেন—মেহেরপুর সদর উপজেলার টেংরামারী গ্রামের হান্নান শেখের ছেলে তানভীর (২০) এবং মুজিবনগর উপজেলার আমদহ গ্রামের মহির হোসেনের ছেলে কৌশিক (২১)। তানভীর মেহেরপুর সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী এবং কৌশিক স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দুপুরে কয়েকজন বন্ধু ভৈরব নদীর রশিকপুর স্লুইস গেট এলাকায় গোসল করতে নামেন। এ সময় নদীতে প্রবল স্রোত থাকায় তানভীর ও কৌশিক তলিয়ে যান। সহপাঠী ও আশপাশের লোকজন তাদের উদ্ধারে চেষ্টা চালালেও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে স্থানীয়রা মুজিবনগর ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান শুরু করেন।
মুজিবনগর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সেলিম রেজা জানিয়েছেন, নদীতে পানির প্রবাহ অনেক বেশি থাকায় উদ্ধারকাজে সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে খুলনা থেকে বিশেষ ডুবুরি দল ডাকা হয়েছে। তারা এলে পূর্ণাঙ্গ উদ্ধার অভিযান শুরু করা হবে।
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেছেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেছেন। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আশা করছি, ডুবুরি দল পৌঁছালে দ্রুত উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হবে।
ঢাকা/ফারুক/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম জ বনগর উদ ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
সেক্টর গঠন করে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে
১৯৭১ সালের মার্চের পরে দেশজুড়ে বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্ন প্রতিরোধযুদ্ধ চলেছে। এর সূচনায় ছিলেন সামরিক বাহিনী, আধা সামরিক বাহিনী—ইপিআর এবং পুলিশের বাঙালি সদস্যরা। তাঁরাই প্রাথমিক প্রতিরোধটা গড়ে তোলেন। সেই প্রতিরোধ গড়াল সশস্ত্র যুদ্ধে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ছিল বাঙালি সৈনিকদের একমাত্র পদাতিক রেজিমেন্ট। এর ছিল মাত্র ৮ ব্যাটালিয়ন সৈনিক। এসব ব্যাটালিয়নের তিনটি ছিল আবার পশ্চিম পাকিস্তানে।
ব্যাটালিয়নের অধিনায়কদের মধ্যে কয়েকজন ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানি। তাদের বিরুদ্ধে
বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রথম প্রতিরোধ শুরু করে। একই সঙ্গে যুক্ত হয় সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত আধা সামরিক বাহিনী ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসও। আর পুলিশ লাইনে পাকিস্তানি সেনাদের হামলার পর পুলিশও সেই প্রতিরোধযুদ্ধে অবধারিতভাবে যুক্ত হয়ে যায়।
যথাযথ নেতৃত্ব ও কৌশলগত পরিকল্পনার অভাবে শুরুতে এ প্রতিরোধযুদ্ধ চলছিল বিচ্ছিন্নভাবে। ফলে রণাঙ্গন থেকে একের পর এক বিপর্যয়ের সংবাদ আসতে শুরু করল। একের পর এক এলাকা পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর হাতে পতন হতে থাকল। কোথাও প্রতিরোধযুদ্ধ থেকে পিছিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। তখন পর্যন্ত মুজিবনগর সরকার গঠন হয়নি।
এ পরিস্থিতিতে প্রতিরোধযুদ্ধকে কীভাবে সামগ্রিক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে নেওয়া যায়, তার করণীয় নির্ধারণ ও সমন্বয় সাধনের জন্য বাঙালি সেনা কর্মকর্তারা তেলিয়াপাড়া (হবিগঞ্জ) চা-বাগানে একটি সভার আয়োজন করেন। ৪ এপ্রিল তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের ব্যবস্থাপকের বাংলোয় সভা হয়। মঈদুল হাসানের মূলধারা ’৭১ বইয়ে তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের এ বৈঠক নিয়ে বর্ণনা পাওয়া যায়।
সেই সভায় বাংলাদেশকে মোট চারটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়। এগুলোর নেতৃত্বও ঠিক হয়। মেজর জিয়াউর রহমান (চট্টগ্রাম অঞ্চল), মেজর কে এম সফিউল্লাহ (সিলেট অঞ্চল), মেজর খালেদ মোশাররফ (কুমিল্লা অঞ্চল) এবং মেজর আবু ওসমান চৌধুরী (কুষ্টিয়া অঞ্চল)। এটিই ছিল মুক্তিযুদ্ধকালে সামরিক বিষয়গুলোর সমন্বয় সাধনের জন্য প্রথম সভা।
১৭ এপ্রিল বৈদ্যনাথতলায় মুজিবনগর সরকার শপথ নেয়। মুক্তিযুদ্ধ: সূচনা থেকে সমাপ্তি বইয়ে প্রকাশিত প্রয়াত সাবেক আমলা ও অর্থনীতিবিদ আকবর আলি খানের ‘প্রবাসী মুজিবনগর সরকার’ শীর্ষক নিবন্ধ থেকে জানা যাচ্ছে, শুরুর দিকে বেছে বেছে কয়েকটি মন্ত্রণালয় দিয়ে যাত্রা শুরু করে মুজিবনগর সরকার। এরপর কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের স্বার্থে ১১টি ভাগে গোটা বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীকে ভাগ করা হয়। এরপরও মাঠপর্যায়ের যুদ্ধে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও সমন্বয় আনতে কয়েক মাস সময় লেগে যায়।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত তেলিয়াপাড়া বিওপির পুরানো ভবন, যা ১৯৬৭ সালে নির্মিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের ৩ নম্বর সেক্টরের প্রথম সেনা সদর দপ্তর ছিল এটি। নতুন ভবন নির্মিত হওয়ায় এটি পরিত্যক্ত