রাম নবমী উপলক্ষে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করেছে হিন্দু মহাজোট
Published: 6th, April 2025 GMT
মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রী ভগবান রামচন্দ্রের জন্মজয়ন্তী শুভ রাম নবমী উপলক্ষে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। আজ রোববার সকালে রাজধানীর ওয়ারী জয়কালী মন্দির রোডের রামসীতা মন্দিরের সামনে থেকে এই শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
শোভাযাত্রার শুরুতে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, বর্তমান অন্তর্বতী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে দেশের হিন্দুসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা রক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছে। এজন্য অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.
তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ফলপ্রসু বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের নতুন সম্ভাবনার দিক উন্মোচন হয়েছে। এই সম্পর্ক আগামী দিনে আরও উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হবে, সেটাই কামনা করছি। পাশাপাশি ভিসা চালুসহ ভারতের কাছ থেকে পাওয়া সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যান্য দেশের সঙ্গেও বাংলাদেশের সম্পর্কের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি দীনবন্ধু রায়, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুমন দে, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক প্রতিভা বাকচী, জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোটের সভাপতি অজিত কুন্ডু প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে রামসীতা মন্দিরের সামনে থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। সব বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোর মনোরম সাজে সজ্জিত হয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি জয়কালী মন্দির রোড, ওয়ারী থানা, দয়াগঞ্জ মোড় হয়ে পুনরায় রামসীতা মন্দিরের সামনে এসে শেষ হয়।
এর আগে সকাল ৭টায় রাম-সীতা মন্দিরে শ্রী রামচন্দ্রের পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় যজ্ঞ ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মন দ র র
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।
আজ সোমবার বিকেলে হিন্দু নেতারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। এ সময় তাঁদের কাছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’
হিন্দুধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। সারা দেশে পূজামণ্ডপ তৈরির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
নেতারা বলেন, ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে পূজা উদ্যাপন হবে বলে তাঁরা আশা করছি।
এ সময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এ জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও পূজায় আমরা দুই দিন ছুটি পেয়েছি। এ জন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সবাই সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক।’
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালীন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। আমরা লক্ষ করেছি, এক বছর ধরে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা কথা, ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। আপনার নেতৃত্বে ধর্ম–বর্ণ–জাতিনির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণ হবে, আমরা সেটাই কামনা করি।’
বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি।’ এ সময় তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গাপূজা ঘিরে যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণানন্দ (একক), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রীশ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস, শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।