হাসপাতাল চালুর দাবিতে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
Published: 15th, April 2025 GMT
সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে পর্যাপ্ত ক্লিনিক্যাল ক্লাস নিশ্চিত ও অবিলম্বে কলেজ হাসপাতাল চালুসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
আজ মঙ্গলবার সকালে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা প্রথমে মানববন্ধন ও পরে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা ‘হাতে–কলমে শিক্ষা নিশ্চিত করো’, ‘হাসপাতাল চালু করো’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল ক্লাস করতে হয়। কলেজের নিজস্ব হাসপাতাল চালু না থাকায় এই ক্লাসগুলো জেলা সদর হাসপাতালে সপ্তাহে দুই দিন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু কলেজ থেকে হাসপাতালটির দূরত্ব প্রায় ১৩ কিলোমিটার। যাতায়াতের জন্য কলেজের কোনো বাস নেই। ফলে নিয়মিত ক্লাসে অংশ নিতে সমস্যা হচ্ছে।
কর্মসূচি থেকে সপ্তাহে ছয় দিন ক্লিনিক্যাল ক্লাস নিশ্চিত করা, ওয়ার্ড পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ, ক্লিনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ও রেজিস্ট্রার নিয়োগ, সার্জারি, মেডিসিনসহ সব ক্লিনিক্যাল বিষয়ের যথাযথ ওয়ার্ডের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, পরিবহনব্যবস্থার ঘাটতি দূর করা এবং ডিসেম্বরের মধ্যে হাসপাতাল চালুর দাবি জানানো হয়।
তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শাহপরান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের দাবি পূরণে কর্তৃপক্ষের সুস্পষ্ট বক্তব্য না পাওয়া পর্যন্ত ক্লাস বর্জন চলবে। ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের ভবন প্রস্তুত হলেও চালুর ক্ষেত্রে গড়িমসি চলছে।’
কলেজের অধ্যক্ষ মুস্তাক আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ক্লিনিক্যাল ক্লাস গুরুত্বপূর্ণ। আগে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে একটি বাস থাকলেও বর্তমানে সেটি নেই। নতুন বাসের ব্যবস্থা হয়েছে, এক সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যাতায়াতের জন্য সেটি ব্যবহৃত হবে। হাসপাতাল চালু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি চলতি বছরের জুলাইয়ে চালুর কথা ছিল। প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। ভবন বুঝে নেওয়াসহ কিছু প্রক্রিয়া শেষ হলে চালু হবে। তখন শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল ক্লাসের সমস্যা দূর হবে।
২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অস্থায়ীভাবে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর এটি স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হয়। মদনপুর এলাকায় সুনামগঞ্জ–সিলেট সড়কের পাশে অবস্থিত এই মেডিকেল কলেজ শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে। বর্তমানে পাঁচটি ব্যাচে ২৮০ শিক্ষার্থী রয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ স ন মগঞ জ কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ
জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন
আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”
তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।”
চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।
১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।
২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন।
ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা