অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্তি নিয়ে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব
Published: 17th, April 2025 GMT
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একমত হতে পারছে না। এনবিআর বলছে, রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রতিষ্ঠার পর আইআরডি বিলুপ্ত হবে। অন্যদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বলছে, আইআরডি বহাল থাকবে এবং তারাই রাজস্ব নীতি প্রণয়ন করবে।
রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাত সংস্কারের অংশ হিসেবে এনবিআর ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। এ লক্ষ্যে গত ১৬ জানুয়ারি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এনবিআরকে বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ করার সিদ্ধান্ত হয়। এর পর এনবিআর রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া তৈরি করেছে। এই অধ্যাদেশ আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উত্থাপন করা হতে পারে।
অধ্যাদেশের ১০ ধারায় বলা হয়েছে, রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে আইআরডি বিলুপ্ত হবে। রাজস্ব নীতি বিভাগে ন্যস্ত হবে আইআরডির জনবল। এ ছাড়া আইআরডির বিদ্যমান কার্যক্রম রাজস্ব নীতি বিভাগে অথবা অর্থ মন্ত্রণালয়ের অন্য কোনো বিভাগে যথাযথভাবে বিভাজন করবে সরকার। ১১ ধারায় বলা হয়েছে, রাজস্ব নীতি এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নিজ নিজ বিভাগের কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় বিধি প্রণয়ন, আদেশ, ব্যাখ্যা ইত্যাদি জারি করতে পারবে।
এদিকে গত ১৩ মার্চ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সংস্কার কমিশনগুলোর বাছাই করা আশু বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় কিংবা বিভাগ নির্ধারিত ছকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাবে। এ জন্য দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবগুলোর তালিকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রতিটি মন্ত্রণালয় কিংবা বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ সমকালকে বলেন, যে কাজগুলো রাজনৈতিক দলের মতামত ছাড়াই অল্প সময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য তারা উদ্যোগ নিয়েছেন। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ পুনর্গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের সচিবের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
আইআরডি সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান সমকালকে বলেন, নতুন অধ্যাদেশ নিয়ে কাজ চলছে। তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রস্তাবটি কোন দিক থেকে কীভাবে এসেছে, সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে হবে। দুই ধরনের প্রস্তাবের মধ্যে কোনটা বাস্তবায়ন হতে পারে– এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে নীতিনির্ধারকরাই সিদ্ধান্ত নেবেন। এটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে।
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সমকালকে বলেন, দুটি প্রস্তাবেই উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন রয়েছে। এর মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গুরুত্বটা বেশি থাকে। তবে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কার্যকরভাবে আলাদা হলে সে ক্ষেত্রে একদিকে এনবিআর রাজস্ব নীতি বাস্তবায়নে অধিকতর স্বাধীনতা ভোগ করবে; অন্যদিকে আইআরডি রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী তার স্বীয় দায়িত্ব পালন করতে পারবে। ভারতে একদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব বিভাগ এবং অন্যদিকে প্রত্যক্ষ কর বোর্ড ও পরোক্ষ কর বোর্ড এ কাজগুলো করে থাকে। স্বাধীনতা ও জবাবদিহি পরস্পরের পরিপূরক।
বিলুপ্ত হবে এনবিআর
নতুন অধ্যাদেশ কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আদেশ ১৯৭২ (১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির মূল আদেশ (৭৬ নং) রহিত হবে এবং এর অধীন প্রতিষ্ঠিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত হবে। তবে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিদ্যমান জনবল রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগে ন্যস্ত হবে। ন্যস্ত করা জনবল থেকে প্রয়োজনীয় জনবল যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে রাজস্ব নীতি বিভাগে পদায়ন করা যাবে। কোনো মামলা বা আইনগত কার্যধারা কোনো আদালতে চলমান থাকলে তা এমনভাবে নিষ্পত্তি করতে হবে, যেন ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির মূল আদেশ রহিত হয়নি এবং আইআরডি বিলুপ্ত হয়নি। আরোপিত কোনো শুল্ক, কর, সারচার্জ, ফি বা অন্য কোনো পাওনা এই অধ্যাদেশ জারির অব্যবহিত পূর্বে অনাদায়ী থাকলে বা কোনো বিষয় অনিষ্পন্ন থাকলে আগের অধ্যাদেশের বিধান অনুসারে নিষ্পন্ন করতে হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ
নতুন অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, রাজস্ব নীতি বিভাগ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রতিষ্ঠার পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে। সরকার এ দুই বিভাগের জন্য যথাযথ সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি করবে। রাজস্ব নীতি বিভাগের বিভিন্ন পদ আয়কর, মূল্য সংযোজন কর, কাস্টমস, অর্থনীতি, ব্যবসা প্রশাসন, গবেষণা ও পরিসংখ্যান, প্রশাসন, নিরীক্ষা ও হিসাব এবং আইনসংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের থেকে পূরণযোগ্য হবে। কাস্টমস, এক্সাইজ ও মূল্য সংযোজন কর আপিল ট্রাইব্যুনাল এবং আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনাল হবে রাজস্ব নীতি বিভাগের সংযুক্ত দপ্তর।
রাজস্ব নীতি প্রণয়নে সহায়তা করবে পরামর্শক কমিটি
সরকার রাজস্ব নীতি প্রণয়নে রাজস্ব নীতি বিভাগকে নিয়মিত পরামর্শ প্রদানের জন্য একটি পরামর্শক কমিটি গঠন করবে। অর্থনীতিবিদ, রাজস্ব বিশেষজ্ঞ, আইন বিশেষজ্ঞ, হিসাব ও নিরীক্ষা বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী সংগঠন ও পেশাজীবী প্রতিনিধি, ট্যারিফ কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের প্রতিনিধিত্বে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কমিটি গঠন হবে।
শুধু প্রশাসনিক কাজ করতে পারবে প্রশাসন ক্যাডার
রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রশাসনিক অনুবিভাগে কাজ করতে পারবেন বিসিএস প্রশাসন, কর, শুল্ক ও আবগারি ক্যাডারের কর্মকর্তারা। এ ছাড়া রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ কর্তৃক তপশিলে বর্ণিত আইন বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে নিয়োজিত পদে শুধু বিসিএস কর, শুল্ক ও আবগারি ক্যাডারের কর্মকর্তারা কাজ করবেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র ব ল প ত হব ন র জন য প রস ত ব উপদ ষ ট প রণয়ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নগরের হাসপাতালটিতে রোগীরা কেন থাকতে চান না
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিভাগের শয্যাসংখ্যা ৫২। তবে গত সোমবার হাসপাতালের এই ওয়ার্ডে সাতটি শয্যা খালি দেখা গেছে। একই চিত্র সার্জারি ওয়ার্ডেরও। নগরের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেখানে রোগীর চাপ থাকে শয্যার দেড় গুণ, সেখানে জেনারেল হাসপাতালে এই সংখ্যা অর্ধেক। বছরে সাড়ে তিন লাখের মতো রোগী এখানে সেবা নিলেও তাঁদের মাত্র আড়াই শতাংশ ভর্তি হন এখানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গত চার বছরের গড় হিসাব অনুযায়ী চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিন ২৩ থেকে ২৫ জন নতুন রোগী ভর্তি হন। প্রতি মাসে শয্যা অনুপাতে আবাসিক রোগী ভর্তি গড়ে ৪৭ শতাংশ; অর্থাৎ মোট শয্যার অর্ধেকের বেশি ফাঁকা থাকে। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে এই হার আরও কম; ৩৭ শতাংশ।
রোগীদের সঙ্গে কথা বলে এই হাসপাতালে ভর্তি না হওয়ার কারণ জানা গেছে। সেগুলো হলো হাসপাতালের অবস্থান, নিরাপত্তাঝুঁকি, রাতের বেলায় ওষুধ না পাওয়া এবং পর্যাপ্ত যাতায়াতব্যবস্থা না থাকা। হাসপাতালটিতে জনবলেরও ঘাটতিও রয়েছে। ফলে যেকোনো সময় নার্সদের পাওয়া যায় না। এ ছাড়া ভবনগুলোর বিভিন্ন অংশ জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। ফলে রোগীরা এখানে থাকতে চান না।
ভবন সংস্কারের বিষয়টি গণপূর্ত বিভাগের আওতায়। এ বিষয়ে তাদের বলা হয়েছে। এ ছাড়া নিরাপত্তার জন্য ৩০ জন আনসারের কথা বলা হয়েছে। এটির প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। শয্যা বাড়ানোর আগে জনবল বাড়ানো প্রয়োজন। মোহাম্মদ একরাম হোসেন, ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালচট্টগ্রাম নগরে সরকারি দুই হাসপাতালের মধ্যে একটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। অন্যটি চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা ২ হাজার ২০০ হলেও প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৩ হাজার রোগী থাকেন। অন্যদিকে জেনারেল হাসপাতালে ২৫০ শয্যার বিপরীতে ১২০ থেকে ১৪০ জন রোগী থাকেন।
রোগী ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যাঁরা চিকিৎসা নেন, তার অধিকাংশই আশপাশের এলাকার। দূরের রোগীরা এখানে আসতে চান না। কারণ, পাহাড়ের ওপর হাসপাতালটির অবস্থান। এখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেই। রাতে পাহাড়ের পথ ধরে মাদকসেবীরা হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের পাশে অবস্থান করে। ছিনতাই ও নিরাপত্তাঝুঁকির কারণেই রোগীরা অন্যত্র চলে যান।
চিকিৎসকেরা জানান, হাসপাতালটিতে করোনা রোগীদের জন্য ২৫টি শয্যা সংরক্ষিত আছে। এসব শয্যায় অন্য কোনো রোগী ভর্তি করা হয় না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের মূল ভবন দুটির বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা খসে গেছে। ফাটল ধরেছে কিছু স্থানে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন গুটিকয় নার্স। প্রসূতি বিভাগে নার্সের উপস্থিতি বেশি। সার্জারি বিভাগের পুরুষ ব্লকের অন্তত ৫টি বেড খালি। শিশু ওয়ার্ডের অবস্থাও একই। রোগী বেশি মেডিসিন বিভাগে।
হাসপাতালের চিকিৎসা সরঞ্জামেরও সংকট রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এমআরআই মেশিন বর্তমানে নষ্ট। ইকোকার্ডিওগ্রাফি মেশিনও প্রায়ই অচল থাকে। এ ছাড়া নিয়মিত বিভিন্ন পরীক্ষার জন্যও পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি নেই বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা। তবে এসবের মধ্য দিয়েই চলছে রোগীর সেবা। মূলত বাজেট বরাদ্দ না থাকায় যন্ত্রপাতি কেনায় অর্থ ব্যয় সম্ভব হচ্ছে না।চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের অবস্থান নগরের আন্দরকিল্লা এলাকার রংমহল পাহাড়ের ওপর। এর পেছনের দিকে কাটা পাহাড় লেন। আগে এ সড়ক দিয়েই হাসপাতালে ঢুকতে হতো। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, সন্ধ্যা হলেই বন্ধ এ পাহাড়ি পথ ধরে বহিরাগত লোকজন হাসপাতালে ঢোকে। নিরাপত্তা না থাকায় মাদকসেবীরাও পাহাড়ে ওঠে।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ একরাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ভবন সংস্কারের বিষয়টি গণপূর্ত বিভাগের আওতায়। এ বিষয়ে তাদের জানানো হয়েছে। এ ছাড়া নিরাপত্তার জন্য ৩০ জন আনসারের কথা বলা হয়েছে। এটির প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। শয্যা বাড়ানোর আগে জনবল বাড়ানো প্রয়োজন।
শুরুতে এটি কেবল একটি ডিসপেনসারি হিসেবে যাত্রা শুরু করে। তবে ১৯০১ সালে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল হিসেবে এর কার্যক্রম শুরু হয়। সে সময় জেলা সদর হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত এই হাসপাতাল ১৯৮৬ সালে ৮০ শয্যা এবং পরে ১৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। তবে জনবল থেকে যায় ১০০ শয্যার। সেই পুরোনো জনবল কাঠামোতেই সর্বশেষ ২০১২ সালে হাসপাতালটিতে ২৫০ শয্যার সেবা শুরু হয়। তবে এখনো জনবল সে–ই অর্ধেক।
হাসপাতাল–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শয্যা ২৫০টি হলেও এখানে চিকিৎসক ও নার্স আছেন প্রয়োজনের তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগ। আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ও কনসালট্যান্ট মিলিয়ে ৪০ থেকে ৪২ জন চিকিৎসক আছেন। অথচ ২৫০ শয্যার হাসপাতালের জনবলকাঠামো অনুযায়ী ৬৫ থেকে ৬৭ জন চিকিৎসক থাকার কথা। পদ সৃষ্টি না হওয়ায় নতুন করে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তবে চিকিৎসকদের মতে, যে সংখ্যক রোগী এখানে আসেন, এর জন্য ১০০ জনের বেশি চিকিৎসক প্রয়োজন। নেই পর্যাপ্ত নার্স ও মিডওয়াইফও।
এ ছাড়া হাসপাতালের চিকিৎসা সরঞ্জামেরও সংকট রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এমআরআই মেশিন বর্তমানে নষ্ট। ইকোকার্ডিওগ্রাফি মেশিনও প্রায় সময় অচল থাকে। এ ছাড়া নিয়মিত বিভিন্ন পরীক্ষার জন্যও পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি নেই বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা। তবে এসবের মধ্য দিয়েই চলছে রোগীর সেবা। মূলত বাজেট বরাদ্দ না থাকায় যন্ত্রপাতি কেনায় অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে সংকট সত্ত্বেও বহির্বিভাগের সেবার মান নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন রোগীরা। তবে বিভিন্ন সময় এসে টিকা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন কয়েকজন রোগী। এ বছরের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে সেবা নিয়েছেন ২ লাখ ৭০ হাজার ৮৭২ জন রোগী। জরুরি সেবা নিয়েছেন প্রায় ৩৮ হাজার রোগী।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশিক আমান প্রথম আলোকে বলেন, জনবল স্বল্পতাসহ বিভিন্ন কারণে রোগীদের পুরোপুরি সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যে সংখ্যক চিকিৎসক থাকার কথা, তার তিন ভাগের এক ভাগ দিয়ে সেবা চলছে। চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানো হলে পুরোপুরি সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
হাসপাতালে বিভিন্ন চাহিদা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেনারেল হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ও বর্তমানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক সেখ ফজলে রাব্বি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শয্যা বাড়লেও সেখানে পদ বাড়ানো হয়নি। নিরাপত্তার জন্য তাঁদের ৩০ জন আনসার অনুমোদন করা হয়েছে। বাকি বিষয়গুলো মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে।