ফরিদপুরে বাবার গাড়ির নিচে চাপা পড়ে সন্তানের মৃত্যু
Published: 26th, April 2025 GMT
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় বাবার গাড়ির নিচে চাপা পড়ে মাহিন (৫) নামে এক শিশুর মৃত্যুর হয়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। মাহিন একই গ্রামের মুসা শেখের ছেলে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্র জানায়, মাহিনের বাবা মুসা শেখ প্রতিদিনের মতো ইঞ্জিন চালিত ইট-বালু টানার ‘খেক্কর গাড়ি’ গাড়ি নিয়ে আজ সকালে বের হন। দুপুরে তিনি খাবার খেতে বাড়িতে ফিরছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি এলে গাড়ির শব্দ শুনে মাহিন দৌঁড়ে বাবার কাছে যায়। এসময় গাড়ির নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
গোপালপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বাবর বলেন, “মুসা প্রতিদিন সকালে গাড়ি নিয়ে বের হন। এসময় তার ছেলে মাহিনসহ বাড়ির কয়েকটি শিশু মুসার গাড়িতে চড়ে রাস্তায় এসে নেমে যেত। দুপুরে মুসা যখন বাড়িতে ফিরতেন সে সময় তিনি ছেলের জন্য কিছু খাবার নিয়ে আসতেন। মাহিন তার গাড়ির শব্দ শুনলেই দৌঁড়ে ছুটে যেত বাবার কাছে। আজও মাহিন গাড়ির শব্দ শুনে বাবার কাছে ছুটে যাচ্ছিল, কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস বাবার গাড়ির নিচে পড়েই তার প্রাণ গেল।”
আরো পড়ুন:
কিশোরগঞ্জে নদীতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
মায়ের বিরুদ্ধে দেড় বছরের শিশুকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
আলফাডাঙ্গা থানার ওসি হারুনর রশিদ বলেন, “ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ বিষয়ে পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় সন্ধ্যায় বিনা ময়নাতদন্তে লাশ দাফন করা হয়েছে।”
ঢাকা/তামিম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস