সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা খবর দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেল। পাবনায় এডওয়ার্ড কলেজ নামে একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। সেখানে সুচিত্রা সেনের নামে মেয়েদের একটা হোস্টেল ছিল। সেটির নাম বদলে নাকি জুলাই শহীদদের নামে করা হয়েছে। শহীদদের নামে নতুন নতুন স্থাপনা করা যায়। যেটি আগে হয়েছে এবং পরিচিতি পেয়েছে, সেটি হঠাৎ করে বদলে ফেলার কোনো যুক্তি দেখি না।

এখন সব জায়গায় নাম বদলের হিড়িক পড়ে গেছে। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরের পর এ রকম হয়েছিল। বাঙালির আদিখ্যেতা একটু বেশি। সবকিছুতেই বঙ্গবন্ধু লাগাতে হবে। তো নিউমার্কেটের কাঁচাবাজারে সাইনবোর্ড উঠল—বঙ্গবন্ধু মুরগি মার্কেট। কারওয়ান বাজারে দেখা মিলল বঙ্গবন্ধু মৎস্য মার্কেটের। বাজারে চলে এল বঙ্গবন্ধু ব্লেড, বঙ্গবন্ধু সিগারেট। এখন জুলাই শহীদদের নিয়ে একই রকম টানাহেঁচড়া চলছে। মাঝে কিছুদিন পীর-আউলিয়া নিয়ে মাতামাতি ছিল। এর ফলে দুটি বিমানবন্দরের নাম বদলে যায়। পীর-আউলিয়ার নামে স্থাপনা হলে কার সাধ্য সেটি পাল্টায়? 

বেশ কিছুদিন সাত কলেজ ছিল সংবাদ শিরোনাম। দুই ভিসির রশি–টানাটানির কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছিনতাই হয়ে সাত কলেজ ঢুকেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু সেখানেও তার মর্যাদা ছিল না। স্ট্যাটাস ছিল দ্বিতীয় পক্ষের মতো। তো তারা মর্যাদা পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করল। লড়াই মানে রাস্তা আটকে মানুষকে যত বেশি কষ্ট দেওয়া যায়। এটি করতে পয়সা খরচ হয় না। ওই সময় তিতুমীর কলেজের ছাত্ররা তাঁদের কলেজে সাইনবোর্ড লাগিয়ে ঘোষণা দিয়ে দিলেন—তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়। উল্লেখ করা যেতে পারে, একাত্তরের আগে এই কলেজের নাম ছিল জিন্নাহ কলেজ। যাহোক, পরে অনেক আলোচনা-সংগ্রামের পর ঠিক হলো সাত কলেজ নিয়ে আলাদা একটি বিশ্ববিদ্যালয় হবে। তার নাম নিয়েও মতভেদ দেখা দিল। 

সাম্প্রতিক খবর হলো, সাত কলেজের এই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একজন অন্তর্বর্তী প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁর সদর দপ্তর হবে ঢাকা কলেজে। প্রশাসকের দপ্তর কোথায় হবে, এ নিয়ে এখনো কলেজ জাতীয়তাবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠেনি বলে স্বস্তি পাচ্ছি। 

ফিরে আসি সুচিত্রা সেন প্রসঙ্গে। সুচিত্রা আমাদের তিন জেনারেশনের ক্রাশ। এ দেশের বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শকের কাছে তাঁর মতো জনপ্রিয় নায়িকা আর কেউ হয়েছেন বলে জানি না। কী কারণে তাঁকে ছেঁটে ফেলা হলো, এর কারণ বোঝার চেষ্টা করছি। তিনি তো আওয়ামী লীগ করতেন না। স্বৈরাচারের দোসরও ছিলেন না। তবে তাঁর দুটো মস্ত অপরাধ, যা কারও কারও কাছে ক্ষমার অযোগ্য। প্রথমত, তিনি হিন্দু। দ্বিতীয়ত, তিনি ভারতীয়। অবশ্য জন্মসূত্রে ‘বাংলাদেশি’ হলেও মাফ পেতেন না। যেমন পাননি প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার কিংবা জগদীশচন্দ্র বসু। যাঁরা নাম পাল্টেছেন, তাঁরা হয়তো এই দুজনের নামই শোনেননি।

কিছুদিন আগে জুলাই শহীদ রিয়া গোপের নামে ধানমন্ডির সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের নামকরণ হলো। শিশু রিয়া গোপ ফ্যাসিবাদের বলি। তার নামে একটি স্থাপনা বা প্রতিষ্ঠান হলে কারও আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু অনেকেই বলেন, আমরা গুণের ও গুণীর কদর করতে জানি না। আমরা এমন জাতি, যারা দুধ বেচে তামাক কেনে, মাছ পাচার করে শুঁটকি আনে।

নতুন ঢাকার প্রথম পরিকল্পিত আবাসন প্রকল্প ছিল ধানমন্ডি। ১ থেকে ৩২ পর্যন্ত ৩২টি রাস্তার ছিল এর বুক চিরে আর চারদিক ঘিরে। রাস্তার নম্বর দেখেই মানুষ বাড়ি খুঁজে পেত। দেশে যখন প্রথমবার সামরিক শাসন এল, তখন রাস্তার নম্বর বদলে গেল। ধানমন্ডি লেকের পুব পাশের রাস্তার নম্বর হলো ৩ থেকে ১৫ আর পশ্চিমের রাস্তাগুলো হলো ২/এ থেকে ১৫/এ। অর্থাৎ সাতমসজিদ রোডে যেসব রাস্তার মোহনা, সেগুলোর নম্বরের পাশে যুক্ত হলো ‘এ’। ১ আর ২ আগের মতোই থাকল। হিসাব মেলাতে ২৭ নম্বর হলো ১৬ নম্বর।

সাদেক হোসেন খোকা মেয়র হয়ে ভাবলেন, জাতির বিশিষ্ট সন্তানদের নামে রাস্তার নাম থাকা উচিত। তবে তিনি নতুন রাস্তা বানানোর দিকে মন না দিয়ে পুরোনোগুলো নিয়েই নাড়াচাড়া করলেন। এভাবেই আমরা পেয়ে গেলাম ভাষাসৈনিক আবদুল মতিন সড়ক, ভাষাসৈনিক বিচারপতি আবদুর রহমান সড়ক, কমরেড ফরহাদ সড়ক ইত্যাদি। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্য সব সেক্টর কমান্ডারের নামে সড়কের নামকরণ করলেও দৃষ্টিকটুভাবে বাদ থাকলেন মেজর জলিল আর কর্নেল তাহের। কারণটি সহজেই অনুমান করা যায়। এই দুজন মেয়র খোকার দলের ‘শত্রুপক্ষের’ লোক। 

এর সঙ্গে মিলে যায় আইয়ুব–জমানার একটি ঘটনার কথা। ওই সময় মোহাম্মদপুর নামে একটি নতুন আবাসন প্রকল্প হয়েছিল ভারত থেকে আসা উদ্বাস্তুদের জন্য। তাঁদের বেশির ভাগই ছিলেন অবাঙালি। তো মোহাম্মদপুরে সুলতানি আর মোগল আমলের সব রাজা-বাদশাহর নামে সড়ক থাকলেও বাদ পড়েছিলেন আকবর আর জাহাঙ্গীর। হয়তো তাঁদের খাঁটি মুসলমান মনে করা হতো না। তবে জাহাঙ্গীরের বেগম নূরজাহানের নামে মোহাম্মদপুরে একটি রাস্তা আছে।

শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসে ধানমন্ডিতে দুটি সড়কের নাম বদলান। জিয়াউর রহমানের আমলে ৩২ নম্বর সড়ক হয়েছিল ১১ নম্বর। হাসিনা সেটি আবার ৩২ করলেন। ২৭ নম্বরকে ১৬ নম্বর করা হয়েছিল। হাসিনা সেটার নাম দিলেন শেখ কামাল সরণি।

আমি ওই এলাকার বাসিন্দা। গাড়ি নেই। সচরাচর রিকশায় যাতায়াত করি। তো রিকশাচালককে যদি বলি ১৫ নম্বরে যাব, সে আমাকে নিয়ে যায় মাদানির আমলের ১৫ নম্বরে। কমরেড ফরহাদ সড়ক কিংবা শেখ কামাল সরণিতে যাব বললে সে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে। তারপর বলে, বাংলায় বলুন। রিকশাওয়ালার কোনো দোষ নেই। রাস্তা যে নামে পরিচিতি পেয়েছে, সেটির নাম কাগজে বদলালেও মানুষের মনে কিন্তু পুরোনোটিই গেঁথে আছে। তারপরও লোকে সড়ক বা প্রতিষ্ঠানের নাম বদলায় কেন? বদলায় এ জন্য যে তার হাতে বদলানোর ক্ষমতা আছে এবং সে তার পছন্দ বা ইগো দিয়ে যা খুশি করতে পারে। 

জিপিওর সামনে থেকে গুলিস্তানের দিকে যে রাস্তা, সেটির নাম দেওয়া হয়েছে শহীদ আবরার সড়ক। যখন পাকিস্তান রাষ্ট্রটি বানানো হয়, তখন এর নাম দেওয়া হয়েছিল জিন্নাহ অ্যাভিনিউ। তিনি ছিলেন পাকিস্তানের জাতির পিতা। ১৯৭১ সালে আমরা পেলাম নতুন জাতির পিতা। তাঁর নামে এটি হয়ে গেল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ। এখন সেখানে এসেছে শহীদ আবরার। 

২৫ মার্চের ক্র্যাকডাউনের জন্য জিন্নাহ দায়ী ছিলেন না। জুলাই ম্যাসাকারে শেখ মুজিবের কোনো দায় নেই। তারপরও দুজনেই ব্রাত্য। পাবলিক পারসেপশনে প্রথমজন পাকিস্তানের প্রতীক, যেটি আমরা ভেঙে দিয়েছি। দ্বিতীয়জন হাসিনা স্বৈরাচারের প্রতীক। সেটির আর জায়গা নেই। শেখ হাসিনা পালালেন। যাওয়ার সময় বাপকেও শেষ করে গেলেন।

আমার মনে হয়, নাম পাল্টানো বাঙালির একটি প্রিয় খেলা। তবে এ খেলাই শেষ খেলা নয়। এই দিন তো দিন নয়, আরও দিন আছে। 

মহিউদ্দিন আহমদ লেখক ও গবেষক

* মতামত লেখকের নিজস্ব

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ন ম বদল স ত কল জ ধ নমন ড হয় ছ ল র জন য র একট

এছাড়াও পড়ুন:

নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর সমন্বয় ছাড়া আর্থিক খাতের সংস্কার টেকসই হবে না

নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় ছাড়া আর্থিক খাতের সংস্কার টেকসই হবে না। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নিয়মিত সভা করে বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি পুঁজির জোগান ও ব্যাংকের মূলধন কীভাবে বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে রূপরেখা তৈরি করে বাস্তবায়ন করতে হবে। মূলধন জোগান দেওয়া ছাড়া শুধু সংকটে পড়া ব্যাংক নয়, ভালো ব্যাংকগুলোকেও ভুগতে হতে পারে।

‘বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে আস্থা পুনরুদ্ধার: মূলধন এখন কেন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এমন অভিমত উঠে আসে। পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী, ব্যাংকার, পুঁজিবাজারের অংশীজনেরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সঞ্চালনা করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ।

বক্তারা বলেন, ব্যাংকে পর্যাপ্ত মূলধন হলো আর্থিক স্থিতিশীলতার ভিত্তি, যা আমানতকারীদের সুরক্ষা দেয়, তারল্য বজায় রাখে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা টিকিয়ে রাখে।

এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘আমাদের জাতীয় বিনিয়োগ কৌশল নেই। ফলে বিনিয়োগ বাড়াতে যেসব বাধা রয়েছে, সেগুলোর সমাধান হচ্ছে না। বিনিয়োগ বাড়াতে নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোও বিভিন্ন বাধা তৈরি করে রেখেছে। এসব দূর করা জরুরি। ব্যাংক থেকে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ বন্ধ করে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ তুলতে হবে। ব্যাংকের মূলধন বাড়াতে আন্তর্জাতিক চর্চা অনুযায়ী নতুন পথের সন্ধান করতে হবে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, আর্থিক স্থিতিশীলতা ও আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য মূলধন বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুর্বল পরিচালন ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে ব্যাংক খাতে ঝুঁকি বেড়ে গেছে। গত বছরের ৫ আগস্টের পর প্রকৃত চিত্র বের হয়ে আসছে। আগে যে ভুল হয়েছে, তা শোধরাতে হবে। এ জন্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় খুবই জরুরি। তবে সব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।

প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হাসান ও. রশিদ বলেন, ব্যাংকের শেয়ারধারণে ২ শতাংশ কোনো ইস্যু নয়। সমস্যা হলো সুশাসন ছিল না। একটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে এক পরিবার থেকে একজনের বেশি পরিচালক না দিলেই হয়। খেলাপি ঋণ আদায়ে আইনি কাঠামো শক্তিশালী করা দরকার। ব্যাংকের মূলধন বাড়াতে আর বন্ড নয়, শেয়ারবাজার থেকে টাকা তুলতে হবে। এ জন্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোকে এক টেবিলে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে।

আল–আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর মধ্যে যে শীতল যুদ্ধ চলে, তার অবসান হওয়া দরকার। এনআই অ্যাক্টে মামলা হলে শুনানির তারিখ পেতে এক বছর পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে। এতে খেলাপি ঋণ আদায়ে সমস্যা হচ্ছে। ব্যাংকের মূলধনে বাড়াতে দেশের পাশাপাশি বিদেশি তহবিলের দিকেও নজর দিতে হবে। বিদেশ থেকে এখনো কম খরচে তহবিল পাওয়া সম্ভব। এ জন্য সরকারকে ভূমিকা রাখতে হবে।

সিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আগে অনেক ভালো নিয়মকানুন ছিল। আমরা ধীরে ধীরে তা থেকে সরে এসেছি। সুদের হারে ৬/৯–এর মতো তত্ত্ব চালু করে আমরা সারা বিশ্বকে শিখিয়েছি। এর প্রতিদান এখন আমরা পাচ্ছি। এ জন্য আন্তর্জাতিক চর্চা মেনে চলতে হবে। যেসব ব্যাংকে মূলধন জোগান দিয়েও ঠিক করা যাবে না, সেগুলোতে টাকা ঢালা ঠিক হবে না। যেসব ব্যাংক ঠিক হওয়া সম্ভব সেগুলোর এবং ভালো ব্যাংকগুলোর মূলধন বাড়াতে হবে।’ নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাধার কারণ দেশে নতুন আর্থিক পণ্য চালু করা যায় না বলে জানান তিনি।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, মূলধন বাড়াতে সরকারের গ্যারান্টি–নির্ভর বন্ড চালু করতে হবে। তবে দেশের মানুষের বন্ডে বিনিয়োগের অভিজ্ঞতা ভালো না। ১৯৯৫ সালে চালু হওয়া বন্ডের টাকা এখনো ফেরত পাওয়া যায়নি। ব্যাংকগুলোর বন্ড এখন ক্লাব নির্ভর হয়ে গেছে। এক ব্যাংকের বন্ড অন্য ব্যাংক কিনছে। বন্ডে বিনিয়োগে ৩০ শতাংশ উদ্যোক্তাদের কিনতে বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে তাদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

হোদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানির সিনিয়র পার্টনার এ এফ নেছারউদ্দিন বলেন, ব্যাংক খাতে এই দুরবস্থার জন্য প্রধানত দায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক একীভূতকরণই যথেষ্ট নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে টেকসই হওয়াটা নিশ্চিত করতে সময়োপযোগী সংস্কার, স্বচ্ছ প্রতিবেদন প্রকাশ, স্বতন্ত্র মূল্যায়ন এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য মূলধন পুনর্গঠন কাঠামো দরকার।

সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের ব্যবস্থাপনা অংশীদার সৈয়দ আফজাল হাসান উদ্দিন বলেন, ধীর আইনি প্রক্রিয়া বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষুণ্ন করছে। খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধার এবং বাংলাদেশের আর্থিক ব্যবস্থায় বিনিয়োগকারীদের শক্তিশালী আস্থা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকরী বাণিজ্যিক আদালত দরকার। যারা অর্থ তছরুপ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে দেওয়ানি মামলা দেওয়া হচ্ছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও খেলাপির মামলা দিয়ে শেয়ার বাজেয়াপ্ত করলে কিছুটা ফলাফল পাওয়া যেত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ