দেশের জনসংখ্যার ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ অর্থাৎ ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক সেবন করে।

শনিবার (৩১ মে) দুপুরে নীলফামারী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের আওতায় জেলা পর্যায়ে তামাকবিরোধী আইন বাস্তবায়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণে এ তথ্য জানানো হয়।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মামুনুর রশীদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব আহসান হাবিব বক্তব্য দেন।

আরো পড়ুন:

যবিপ্রবিতে এয়ারটেলের কনসার্টে অবাধে মাদক সেবনের অভিযোগ

খুলনায় মাদক মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন

প্রশিক্ষণে আরো জানানো জানানো হয়, ১ কোটি ৯২ লাখ মানুষ সরাসরি ধুমপান করেন এবং ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন করে।

আরো জানানো হয়, দেশে প্রতি বছর ১ কোটি ৬১ হাজারেরও অধিক মানুষ তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এছাড়া দেশের ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে শতকরা ৪৬ ভাগ তামাক ব্যবহারকারী।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুস সামাদ শিকদারের সঞ্চালনায় প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে তামাকের ক্ষতিকরণ দিক উপস্থাপন করেন নীলফামারী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা.

সারওয়ার হোসেন।

অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোহসিন, সিভিল সার্জন ডা. আব্দুর রাজ্জাক, সহকারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ, নীলফামারী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নূর আলম বক্তব্য দেন। 
 

ঢাকা/সিথুন/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক স বন

এছাড়াও পড়ুন:

কাজের আনন্দই জীবনের সার্থকতা

জন্মদিনের অনুষ্ঠান নয়, তবে অনানুষ্ঠানিক আয়োজনটি ছিল সে উপলক্ষেই। আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষাবিদ ও সুবক্তা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জন্মদিন ছিল গত ২৫ জুলাই। তাঁর অগণিত অনুরাগীরা চেয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মিলিত হতে। উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের যে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেছে, তারপর আর জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে কিছুতেই সম্মত হননি তিনি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ষষ্ঠতলায় কেন্দ্রের প্রাক্তনী ও তাঁর কিছু ঘনিষ্ঠজন আলাপচারিতার এক ঘরোয়া আয়োজন করেছিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে নিয়ে। সেখানে তিনি বললেন, কাজের মধ্য দিয়ে জীবনে যে আনন্দ পেয়েছেন, সেটিই জীবনের সার্থকতা। এই আনন্দই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে, শক্তি জোগায়।

এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। তিনি তাঁর চিরপরিচিত সরস অথচ বুদ্ধিদীপ্ত গভীর তাৎপর্যময় কথায় উত্তর দিয়েছেন। কবিতা, সাহিত্য, শিল্প থেকে শিক্ষা, ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংগঠন, প্রেম–ভালোবাসা—সবকিছু উঠে আসে প্রশ্নোত্তরভিত্তিক কথোপকথনে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে শুরু করে বিশ্বসাহিত্যের বহু কালজয়ী লেখকের রচনা থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি দিয়েছেন তিনি। এক অন্তরঙ্গ প্রাণবন্ত আবহ বিরাজমান ছিল সন্ধ্যা থেকে অনেকটা রাত অবধি এই আয়োজনে।

আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় শুরুতেই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের একটি কবিতা আবৃত্তি করে জানতে চান, তিনি কবিতার চর্চা করেননি কেন? জবাবে তিনি বলেন, কবি শামসুর রাহমান একবার তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর মধ্যে কবিত্বের ঘাটতি আছে। তাঁর নিজেরও সে রকম মনে হয়েছে। তারপর সাহিত্য পত্রিকা কণ্ঠস্বর প্রকাশ ও অনেক রকম কাজ করতে গিয়ে আর কবিতা লেখা হয়ে ওঠেনি।

অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, এখন একটা কঠিন সময় যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে দেখেন, কী আশা করেন তাদের কাছে?

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘তরুণেরা কী হবে, তা তরুণদের ওপরে নির্ভর করে না। সেটা নির্ভর করে আমরা তাদের কী বানাতে চাই, তার ওপর। দেখতে হবে তরুণদের গড়ার মতো আমাদের ক্ষমতা কতটা আছে। অর্থাৎ শিক্ষক কেমন হবে, তার ওপরে নির্ভর করে তাঁর ছাত্র কেমন হবে। সক্রেটিস শিক্ষক ছিলেন বলে ছাত্র প্লেটো হয়েছেন। প্লেটোর শিক্ষা পেয়ে ছাত্র অ্যারিস্টটল হতে পেরেছেন। বড়দের যদি বড়ত্ব না থাকে, তবে ছোটরা বড় হতে পারে না। দুর্ভাগ্য যে আমরা বড়রা তাদের সামনে আদর্শ দাঁড় করাতে পারিনি। ফলে এখন বড়দেরই ছোটদের পেছনে দাঁড়াতে হচ্ছে।’

ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম জানতে চান, তিনি এত বিচিত্র ধরনের এত বিপুল কাজ করেছেন। এই প্রাণশক্তি পান কেমন করে?

উত্তর দিতে গিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘শক্তি আসে আনন্দ থেকে। কাজ করতে পারাটাই আনন্দের। আর সব সময় আশাবাদী থাকি। আশা কখনো শেষ হয় না। আশা শেষ মানে আমি শেষ।’

আলাপচারিতায় আরও অংশ নেন দুদক চেয়ারম্যান এম এ মোমেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, অভিনয়শিল্পী খায়রুল আলম সবুজ, কথাশিল্পী আনিসুল হক, ছড়াকার আমিরুল ইসলাম, উপস্থাপক আবদুন নূর তুষার, অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি, মশিউর রহমান, আলী নকী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রাক্তনী খাদিজা রহমান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ