ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূমের বাসিন্দা দানিশ শেখ। তাঁর স্ত্রী সোনালি খাতুন ও ছেলে সাবিরকে বাংলাদেশে পুশইন করা হয়েছে। অভিযোগ উঠছে ভারতীয় নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও কেবল মুসলিম ও বাংলাভাষী হওয়ায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এমন পদক্ষেপ নিয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস।

কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘এই সময়’ অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের শুরুতে বলা হয়, ‘কোনো খোঁজ নেই দানিশ শেখের। ২৬ বছরের যুবক ভারতের রাজধানী দিল্লিতে কাগজ কুড়ানোর কাজ করতেন। খোঁজ নেই তাঁর স্ত্রী সোনালি খাতুন (২৫) এবং তাদের ৯ বছরের ছেলে সাবিরেরও। সোনালিও দিল্লিতে দানিশের সঙ্গে কাজ করতেন। খোঁজ নিতে গিয়ে উঠে এসেছে ভয়াবহ তথ্য। দিল্লি পুলিশের সন্দেহ হয়, দানিশ বাংলাদেশি। এ কারণে সপরিবার তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বাংলাদেশে।’

পরিবারের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের মুরারইয়ে পাকুড় থানা এলাকায় দানিশদের বংশানুক্রমিক বাস। ভিটেমাটি ছেড়ে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে দানিশ দিল্লিতে থাকেন। যে বস্তিতে থাকতেন, কিছুদিন আগে সেখানে বিধ্বংসী আগুনে দানিশের ভোটার কার্ড পুড়ে যায়।

দানিশের শ্যালক রকি শেখ জানান, দানিশের আধার কার্ড তো ছিল। সেটা দেখানো হয়েছিল। কিন্তু লাভ হয়নি। রকির অভিযোগ, গত ২৬ জুন দানিশ, তাঁর বোন সোনালি ও ভাগনেকে দিল্লি পুলিশ বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। তাদের আর কোনো খোঁজ নেই। তাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। সুইচ অফ বলছে।

অভিযোগ উঠছে, বাংলায় কথা বলা মুসলিমদের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ধরে ধরে বাংলাদেশি তকমা দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে। এদের প্রায় সবাই পশ্চিমবঙ্গের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা। প্রমাণপত্র দেখিয়েও লাভ হচ্ছে না। গত রোববার তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এক্সে জানানো হয়, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, নেতাজি ও বিবেকানন্দের ভাষায় (বাংলা) কথা বলাও এখন নরেন্দ্র মোদির দেশে অপরাধ।

রকি জানান, সোনালি তাঁর মামাতো বোন। মামা বহুদিন দিল্লিতে। আরেক মামাতো বোন করিশমাও সেখানে। করিশমাই ফোন করে জানান, দানিশদের পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। রকি জানান, দিল্লিতে করিশমা উকিলেরও ব্যবস্থা করেন। সোনালির আধার কার্ড সেই উকিলকে দেওয়া হয়। গত ২৬ তারিখ উকিল জানান, আর কিছু করার নেই। দানিশদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ অবস্থায় দানিশের পরিবার তৃণমূলের রাজ্যসভার সদস্য সামিরুল ইসলামের দ্বারস্থ হয়েছে। এ সংসদ সদস্য জানান, দানিশ ও তাঁর পরিবারকে দ্রুত ভারতে ফেরানোর দাবিতে তিনি আদালতে যাবেন। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

এসএসসির ফল পেয়ে ভিকারুননিসায় নেচে–গেয়ে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস

এবারের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় ফল প্রকাশের পর রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। কাঙ্ক্ষিত ফল পেয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে নেচে-গেয়ে আনন্দ ও উদ্‌যাপনে মাতে শিক্ষার্থীরা।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটার পর থেকে শিক্ষার্থীরা অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে স্কুল প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকে। সবার মুখেই ছিল উদ্বেগ আর অপেক্ষা। বেলা দুইটার দিকে মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হলে মুহূর্তে বদলে যায় দৃশ্যপট।

এ সময় ভিকারুননিসার শিক্ষার্থীরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে। কেউ ঢাকঢোল বাজিয়ে, কেউবা চোখের জল ফেলে, কেউ সহপাঠী–বন্ধুকে জড়িয়ে ধরে প্রকাশ করে অনুভূতি। নেচে-গেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা।

স্কুলের মাঠের একপাশে বাবার হাত ধরে দাঁড়িয়ে ছিল জান্নাতুল ফেরদৌস। এগিয়ে গিয়ে কথা বলতেই জানাল, এ প্লাস পেয়েছে সে। পাশে দাঁড়ানো বাবা ইমদাদুল হক বলেন, ‘মেয়ে এ প্লাস পেয়েছে। ১০ বছরের সাধনার ফল। মেয়েটার জন্য দোয়া করবেন, যেন উচ্চশিক্ষায় যেতে পারে।’

দারুণ আবেগে বন্ধুকে জড়িয়ে ধরে জীবনের প্রথম বড় সাফল্যের আনন্দ উদযাপন করছে তারা। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে

সম্পর্কিত নিবন্ধ