জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপনে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সন্তানদের নিয়ে আসছেন অভিভাবকেরা। সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পরিবার নিয়ে আসছেন। 

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুর সোয়া বারোটায় সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় ৩৬ জুলাই উদযাপনের দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বনানী থেকে সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে অনুষ্ঠানে এসেছেন ব্যবসায়ী মোমিনুর রহমান। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘‘আমি এবং আমার স্ত্রী একসঙ্গে রাজধানীর বনানীতে স্বৈরাচারকে দেশ থেকে তাড়ানোর জন্য আন্দোলন করেছি। আজ পরিবারের সবাইকে নিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বছরপূর্তি উদযাপন করতে আসলাম। গত বছর এই দিনে স্বৈরাচার পালানোর কথা শুনে যেমন আনন্দ পেয়েছিলাম, আজ এখানে এসে ঠিক তেমনই মনে হচ্ছে।’’

‘‘আমরা যে আশা নিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিলাম সেই প্রত্যাশা এখনো পূরণ হয়নি। সরকারকে বলব, সব রাজনৈত দলের সঙ্গে আলোচনা করে দেশ ও জনগণের স্বার্থে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে।’’ বলেন মোমিনুর রহমান। 

আয়রা ও আজোয়া দুই সন্তানকে নিয়ে অনুষ্ঠানে এসেছেন সামিয়া আক্তার। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘‘আমার যমজ কন্যাদের নিয়ে আসছি প্রিয় শিল্পীদের গান শুনতে। আমরা গত বছর ফার্মগেটে আন্দোলন করেছিলাম। আগামী বাংলাদেশ শিশুদের জন্য নিরাপদ হোক আমরা সেই প্রত্যাশা করি।’’

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সোমবার (৪ আগস্ট) রাত থেকেই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। এখানে বিকাল ৫টায় ঐতিহাসিক জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে। রাত ৮টায় সর্বশেষ আয়োজনে থাকছে আর্টসেল-এর গান। অনুষ্ঠানের আয়োজক সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। সহযোগিতায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়।

দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে ‘ফ্যাসিস্টের পলায়ন ক্ষণ’ উদযাপন করা হবে। ‘পলায়ন ক্ষণ’ উদযাপনের পর পুনরায় শুরু হবে কনসার্ট। একে একে পারফর্ম করবেন সায়ান, ইথুন বাবু ও মৌসুমি, সোলস এবং ওয়ারফেজ। সন্ধ্যায় সংসদ ভবনের সামনে লাখো কণ্ঠে জুলাইয়ের গান ‘কতো বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙা.

..’ গাওয়া হবে।

জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠের পর আবারও শুরু হবে কনসার্ট। একে একে পারফর্ম করবেন বেসিক গিটার লারনিং স্কুল, এফ মাইনর এবং পারশা। মাগরিবের নামাজের বিরতির পর পারফর্ম করবেন এলিটা করিম। তার পারফরম্যান্সের পর অনুষ্ঠিত হবে স্পেশাল ড্রোন ড্রামা। ড্রোন শো-এর পর সংগীত পরিবেশন করবে জনপ্রিয় ব্যান্ড আর্টসেল। 

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ ছাড়াও মানিক মিয়াজুড়ে দিনভর থাকছে উৎসবমুখর নানা আয়োজন। 

ঢাকা/রায়হান

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ল ই গণঅভ য ত থ ন অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার প্রধান উপদেষ্টার

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। আজ বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য (এমইপি) মুনির সাতোরির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিনিধিদলকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করেছি। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ফেব্রুয়ারির শুরুতে, রমজানের ঠিক আগে।’ তিনি উল্লেখ করেন, জনসাধারণ, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে নির্বাচনী উৎসাহ বাড়ছে। কারণ, দীর্ঘদিন পর কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দশকের বেশি সময় পর ছাত্র সংসদ নির্বাচন আবার শুরু হয়েছে।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর।’ তিনি বলেন, কিছু শক্তি এখনো নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে, তবে অন্তর্বর্তী সরকার নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, তরুণ ভোটাররা এবার রেকর্ড সংখ্যায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। কারণ, ১৫ বছরের বেশি সময় পর অনেকেই প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন। তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য এক নতুন সূচনা বয়ে আনবে। এটি আমাদের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে—জাতির জন্য এক নতুন যাত্রা।’

ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা ও ইউরোপীয় আইনপ্রণেতারা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অব্যাহত সমর্থন ও চলমান রোহিঙ্গা মানবিক সংকট নিয়ে মতবিনিময় করেন।

আগামী নির্বাচন বাংলাদেশে এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন ইউরোপীয় আইনপ্রণেতারা। এক আইনপ্রণেতা প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সরকারের গত ১৪ মাসের ‘অসাধারণ’ প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।

এক ডাচ আইনপ্রণেতা মন্তব্য করেন, বাংলাদেশ কতিপয় দেশের মধ্যে অন্যতম, যেখানে ‘ঘটনাগুলো সঠিক পথে এগোচ্ছে।’

প্রধান উপদেষ্টা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য বাড়তি তহবিল প্রদানের আহ্বান জানান।

বিশেষ করে সম্প্রতি অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্কুলগুলো আবার চালু করতে সহায়তা প্রদানের অনুরোধ জানান প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ শ্রম সংস্কারগুলো তুলে ধরে বলেন, এসব পদক্ষেপ বাংলাদেশ–ইইউ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচনের চেষ্টা হলে আরেকটি গণঅভ্যুত্থান হবে’
  • উৎসবমুখর পরিবেশে হবে দুর্গাপূজা: ডিএমপি কমিশনার
  • গকসু: ৩২ একরে ‘নান্দনিক’ ব্যালট যুদ্ধ
  • উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে রাকসু নির্বাচনের প্রচার
  • অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার প্রধান উপদেষ্টার
  • ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার প্রধান উপদেষ্টার