জুলাই গণঅভ্যুত্থাণের আলোচনা সভা শেষে ছাত্রদলের তোপের মুখে শাবিপ্রবি উপাচার্য
Published: 5th, August 2025 GMT
জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের আলোচনা শেষে তাদের তোপের মুখে পড়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম শরিফুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাভবন এর সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় উপাচার্য তাদের সঙ্গে বসার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।
এদিকে, শাবিপ্রবি প্রশাসনের বিভিন্ন অফিসিয়াল অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের একচেটিয়া সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করে শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। পরে উপাচার্যের মুখোমুখি হওযার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জুনতলায় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গোলচত্বরে একত্রিত হন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
আরো পড়ুন:
‘অ্যান্টিবায়োটিক গুরুতর হুমকি হয়ে উঠছে’
এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল শাবিপ্রবি প্রশাসন
এ সময় তারা ‘লাখো শহিদের রক্তে কেনা, দেশটা কারো বাপের না’, ‘জিয়ার সৈনিক এক হও, লড়াই করো’, ‘ভুয়া ভুয়া প্রশাসন ভুয়া’, ‘লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘জুলাইয়ের গাদ্দাররা হুশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এর আগে, শাবিপ্রবি প্রশাসন আয়োজিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভা বয়কটের ঘোষণা দেয় ছাত্রদল।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাঈম সরকার বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের আজকের আলোচনা সভায় গিয়ে দেখি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরাই অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনা করছে। তাদের একজনকে অনুষ্ঠানের সমন্বয়ে দায়িত্ব দিয়ে অনুষ্ঠান পরিচালনা করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অনুষ্ঠানের সূচনা, খাবার ব্যবস্থাপনাসহ সব কিছুতেই বৈষম্যবিরোধী নেতাকর্মীদের দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।”
তিনি আরো বলেন, “৫ অগাস্ট পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছিল সব দল-মতের ছাত্রদের ব্যানারে। কিন্তু পরে তারা যখন সরাসরি রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করে, তখন সেই ব্যানার প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। তারপরও প্রশাসন তাদের একচেটিয়া সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। গত ১ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড ব্যবহার করে তারা ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টার মাধ্যমে দলীয় কার্যক্রম চালিয়েছে।”
শাখা ছাত্রদলের সভাপতি রাহাত জামান বলেন, “আজকের প্রোগ্রামটা ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটা প্রোগ্রাম। অথচ আজকের এ প্রোগ্রামে আমাদেরকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে একজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতার মাধ্যমে। প্রশাসন তাদেরই বারবার নানা ফান্ড ও সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। জুলাই অভ্যুত্থানে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ১৫২ জনের মতো কর্মী শহীদ হয়েছিল। অথচ আমরা দেখছি, প্রশাসন একটি গোষ্ঠীকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দিয়ে ছাত্রদলের সাথে বৈষম্য করছে।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও নির্দেশনা পরিচালক ড.
তিনি বলেন, “কিন্তু ফান্ডিংসহ সব খরচও আমার অফিস থেকে হচ্ছে এবং আমি তাদের দিয়ে খরচ করিয়ে নিয়েছি, এগুলো মিথ্যা। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামে কোনো প্লাটফর্ম এখন নেই, যারা আন্দোলনে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল ও আগ্রহ দেখিয়েছে তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অন্যরা কিন্তু এভাবে আগ্রহ দেখায়নি।”
ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল জ ল ই গণঅভ য ত থ ছ ত রদল র শ ব প রব উপ চ র য অন ষ ঠ ন ন ত কর আজক র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই গণঅভ্যুত্থান: সিরাজগঞ্জে ৪ আগস্ট নিহত হয় ২৯ জন
২০২৪ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল প্রেক্ষাপটে যখন দেশ স্বপ্ন দেখছিল মুক্তির, ঠিক তার আগের দিন ৪ আগস্ট সিরাজগঞ্জের পুরো জেলায় ঘটে যায় বিভীষিকাময় ঘটনা। আন্দোলনে অংশ নেয়া নিরীহ ছাত্র-জনতাদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। সেই আন্দোলনে সিরাজগঞ্জে প্রাণ হারায় ১৫ পুলিশ সদস্যসহ ২৯ জন। এক বছর পেরিয়ে গেলেও স্বজনরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না। অভিযুক্তরা রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। উদ্ধার হয়নি হামলায় ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্রও।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৪ আগস্ট সিরাজগঞ্জ জেলা উত্তাল হয়ে ওঠে। ছাত্র-জনতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। ছাত্র-জনতার প্রতিরোধের মুখে ধীরে ধীরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পিছু হঠে। শহরের এস এস রোডে অবস্থিত আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়া আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষ শহরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গুলিতে প্রথম মারা যায় জেলা যুবদলের সহ-সম্পাদক সোহানুর রহমান রঞ্জু খান। এর কিছুক্ষণের মধ্যে ছাত্রদলকর্মী সুমন সেখ ও বিএনপিকর্মী আব্দুল লতিফের মৃত্যু হয়। এ খবর মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে ছাত্র-জনতা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। কিছু সময়ের মধ্যে এনায়েতপুরে গুলিতে শিক্ষার্থী শিহাব আহম্মেদ ও সিয়াম হোসেন এবং তাঁত শ্রমিক ইয়াহিয়া আলীসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়। এরপরই এনায়েতপুর থানায় হামলা, অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র লুট করা হয়। হামলাকারীদের মারধরে ১৫ পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়।
একই সময়ে রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়ায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালায় আন্দোলনকারীরা। নেতাকর্মীরা রায়গঞ্জ প্রেস ক্লাবে আশ্রয় নেন। সেখানে মারধরে এক সাংবাদিক ও পাঁচজন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর মৃত্যু হয়। এছাড়া এমপি হেনরীর বাসা থেকে দুই ছাত্রলীগকর্মী পৌরসভার গয়লা মহল্লার আসিফ ও জানপুরের শাহিনের পোড়া কংকাল উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
আরো পড়ুন:
চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২
আশুলিয়ায় উল্টো পথে চলা রিকশাকে চাপা দিল লরি, নিহত ৩
বিকেলে সিরাজগঞ্জ শহরের মুজিব সড়কে অবস্থিত সিরাজগঞ্জ-২ আসনের এমপি ড. জান্নাত আরা হেনরী ও স্টেশন রোডে অবস্থিত একই আসনের সাবেক এমপি অধ্যাপক হাবিবে মিল্লাত মুন্নার বাসায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। একই সময়ে হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানায় হামলা ও অস্ত্র লুটসহ আওয়ামী লীগের কার্যালয়, দুটি রেলওয়ে স্টেশন, বসতবাড়ি, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান এবং বেশকিছু বসতবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
থানা ও কোর্ট পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জেলায় মোট ৯টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় ৪টি, এনায়েতপুর থানায় আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় ৩টি এবং ১৫ পুলিশ হত্যা ও থানায় হামলা এবং অস্ত্র লুটের ঘটনায় ১টি এবং উল্লাপাড়া থানায় ১টি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া হাটিকুমরুল থানায় হামলা ও অস্ত্র লুটের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় এজাহারভুক্ত আসামির সংখ্যা ৬৭২। অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা ৫ থেকে ৬ হাজার।
এর বাইরে অতীতের ঘটনার জেরে এবং গত এক বছরে নানা সময়ের ঘটনা মিলে জেলায় মোট ২৯টি রাজনৈতিক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় এ পর্যন্ত সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, সাবেক এমপি ড. জান্নাত আরা হেনরী, সাবেক এমপি তানভীর ইমাম, সাবেক এমপি চয়ন ইসলাম, সাবেক এমপি ডা. আব্দুল আজিজ, জেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবু ও উল্লাপাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সেলিনা মির্জা মুক্তি ও সিরাজগঞ্জ বারের সাবেক পিপি অ্যাড. আব্দুর রহমানসহ ১৬৩ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ পর্যন্ত কাজিপুর ও সলঙ্গা থানায় দায়ের হওয়া দুটি মারামারি মামলার তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। এনায়েতপুরে গুলিতে নিহত ৩ জনের পরিবারের আপত্তির কারণে তাদের ময়নাতদন্ত হয়নি।
জেলায় জুলাই যোদ্ধা হিসেবে শহীদদের তালিকাভুক্ত হয়েছেন ১৩ জন। তাদের মধ্যে ৬ জনের ঢাকায় এবং সিরাজগঞ্জে ৭ জনের মৃত্যু হয়। জেলায় আহতদের মধ্যে জুলাই যোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন ৫২৪ জন।
এনায়েতপুর থানায় নিহত ১৫ পুলিশ সদস্যরা হলেন, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক, এস.আই রইস উদ্দিন খান, তহছেনুজ্জামান, প্রনবেশ কুমার বিশ্বাস, নাজমুল হোসাইন, আনিসুর রহমান মোল্লা, এএসআই ওবায়দুর রহমান, কনস্টেবল আব্দুস সালেক, হাফিজুর ইসলাম, রবিউল আলম শাহ, হুমায়ন কবির, আরিফুল ইসলাম, রিয়াজুল ইসলাম, শাহিন উদ্দিন ও হানিফ আলী।
জেলায় ১৩ জন জুলাই যোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তরা হলেন, সিরাজগঞ্জের আন্দোলনে নিহত জেলা যুবদলের যুগ্ম-সম্পাদক সোহানুর রহমান রঞ্জু খান, ছাত্র সুমন সেখ, চা বিক্রেতা আব্দুল লতিফ, ভ্যান চালক শিহাব উদ্দিন, ছাত্র শিহাব আহম্মেদ, ছাত্র সিয়াম হোসেন ও তাঁত শ্রমিক ইয়াহিয়া আলী প্রামানিক। এ ছাড়াও সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাসকারীদের ঢাকায় আন্দোলনে শহীদরা হলেন ব্যবসায়ী সুজন মাহমুদ, ছাত্র অন্তর ইসলাম, স্যানেটারি মিস্ত্রি জাহাঙ্গীর হোসেন, রিকশাচালক মো. লেবু, নৌ বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান ও পোশাককর্মী নজরুল ইসলাম।
রায়গঞ্জ উপজেলায় নিহত ৬ জন হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সরওয়ার লিটন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মেহেদি হাসান ইলিয়াস, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন সরকার, ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন টিটু, রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও চান্দাইকোনা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম এবং রায়গঞ্জ প্রেস ক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কমিউনিস্ট পার্টির নেতা প্রদীপ কুমার ভৌমিক। এই ৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
এনায়েতপুর ও হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে এখনো ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়নি। এ দুটি মামলায় এ পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই দুটি থানার কার্যক্রম বর্তমানে ভাড়া করা ভবনে চলছে।
এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনারুল ইসলাম জানান, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট এনায়েতপুর থানায় হামলা, ভাঙচুর, অস্ত্র লুট ও ১৫ পুলিশ সদস্য হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লুট হওয়া অস্ত্রের মধ্যে ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ জানান, ৪ আগস্ট থানায় হামলা, ভাঙছুর ও ২৫টি বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র লুট করা হয়। এরমধ্যে ১৭টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হলেও এখনো ৮টি আগ্নেয়ান্ত্র উদ্ধার হয়নি। এই মামলায় ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন ও জুলাই অভ্যুত্থান ২০২৪ হতাহতদের তালিকা যাচাই-বাছাই জেলা কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. নুরুল আমিন জানান, এ পর্যন্ত জেলায় বসবাসকারী ১৩ জন জুলাই শহীদ ও ৫২৪ জন জুলাই যোদ্ধার নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৩ জন শহীদ ও ৪৪৮ জন জুলাই যোদ্ধার নাম ইতিমধ্যে সরকারি গেজেটভুক্ত হয়েছে। বাকিরা অপেক্ষমাণ রয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে কাজিপুর ও সলঙ্গা থানায় দায়ের হওয়া দুটি মারামারি মামলার চার্জশিট হয়েছে। বাকিগুলোর তদন্ত চলছে।
পুলিশ আরও বলেন, নিহত পুলিশ সদস্যদের চাকরিতে কর্মরত অবস্থায় মারা গেলে সরকারি বিধান মতে প্রাপ্ত অনুদান ১৪ পুলিশ সদস্যকে প্রদান করা হয়েছে। বাকি একজনের অনুদান ওয়ারিশ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এখনো দেওয়া হয়নি। তবে তিনিও অনুদান পাবেন।
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, ইতিমধ্যেই মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জুলাই শহীদরা ১০ লাখ টাকা করে সঞ্চয়পত্র পেয়েছেন। কিছু জুলাই যোদ্ধাদের ১ লাখ টাকা করে চেক দেওয়া হয়েছে। বাকিরা পরবর্তীতে পাবেন। এছাড়াও জেলা পরিষদের মাধ্যমে প্রতিজন শহীদ পরিবারকে দুই লাখ ও আহতদের ৫ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শহীদ সুমনের বাবাকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি অটোরিকশা সহায়তা করা হয়েছে। শহরের বাজার স্টেশন মুক্তির সোপানে ১৩ শহীদের নামে একটি করে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে।
জেলায় প্রথম জুলাই শহীদ জেলা যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক সোহানুর রহমান রঞ্জু খানের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেছে জেলা বিএনপি। গত (১ আগস্ট) দুপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু পৌরসভার মাছুমপুর মহল্লার সরুত মোড়ে শহীদ রঞ্জু খানের বাড়ির পাশে স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন করেছেন।
ঢাকা/রাসেল/বকুল