বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ও বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন,আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচন করে, তবে একটি প্রতিদ্বন্দ্বী দল হিসেবে নির্বাচন করবে। তাতে বিএনপির কিছু আসে যায় না। তবে আওয়ামী লীগ সরকারে থাকাকালীন অনেকে অন্যায় করেছে। যারা এ অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত আমরা তাদের বিচার চাই। 

রোববার বিকেলে পিরোজপুরের টাউন ক্লাবের হলরুমে বিএনপির আহবায়ক কমিটির সঙ্গে বরিশাল বিভাগের সাংগঠনিক টিমের মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শোচনীয়ভাবে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগের সাথে আমাদের কোন দ্বন্দ্ব নেই। তবে দলটি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে যে সকল লোক হত্যা, খুন, গুম ও নির্যাতনের সাথে জড়িত ছিল তাদের শাস্তি চাই। কিন্তু যারা অন্যায় করে নি, তাদের বিরুদ্ধে বিএনপির কোন অভিযোগ নেই।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সংগঠনবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে ১ হাজার ২০০ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখনও অনেকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ কিংবা জামায়াতে ইসলামী কারও সঙ্গে কোন দ্বন্দ্ব নেই। যে যার দলীয় মতাদর্শে পরিচালিত। তবে একটি সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনপি দলকে সুসংগঠিত করছে এবং সেই লক্ষ্যে দলটি সর্বত্র সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
 
পিরোজপুর জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যক্ষ মো.

আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব গাজী ওয়াহিদুজ্জামান লাভলুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, মাহাবুবুল হক নান্নু।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ