বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘‘২৮ অক্টোবরে ঢাকার পল্টনের সমস্ত খুনের মাস্টার মাইন্ড শেখ হাসিনা। তার নির্দেশে লগি-বৈঠা দিয়ে ৭ জনকে সাপের মতো করে পিটিয়ে হত্যা করেছিল। তারা মৃতদেহের উপরে দাঁড়িয়ে নাচানাচি করেছিল।’’

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা ফুটবল ময়দানে তালা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর বার্ষিক কর্মী সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায় প্রকাশ্যে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের ছয় নেতাকর্মীকে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট সরকারের শেষ দিন রাজপথে দিনভর তাণ্ডব চালায় আওয়ামী লীগ। রাজপথে লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যার পর সেই লাশের ওপর নৃত্যের ঘটনা দেশের ইতিহাসে অন্যতম নৃশংস ঘটনা, যা নিয়ে দেশে-বিদেশে নিন্দার ঝড় ওঠে।

আরো পড়ুন:

সাংবাদিক তুরাব হত্যা মামলায় পুলিশ কর্মকর্তা দস্তগীর বরখাস্ত

খুবির অর্ণব হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি সতীর্থদের

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘‘খুনি হাসিনার নির্দেশ লগি-বৈঠা দিয়ে হত্যার পর বাংলাদেশ তার গণতন্ত্রের পথ হারিয়ে ফেলে।’’

গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘‘আমরা ১৭ বছর ইতিহাসের কালো যুগ পার করেছি। অর্থনৈতিক নিপীড়ন, রাজনৈতিক নির্যাতন, বিচার ব্যবস্থায় বৈষম্য করে জুলুম কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থার অচেষ্টা করা হয়। সব কিছুকে ধ্বংস করে দিয়ে এক ব্যক্তি, একদল, এক পরিবারের হাতে কর্তৃত্ববাদী শাসনের জন্য ফ্যাসিবাদ পয়দা হয়েছিল। আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল না। ভোটাধিকার ছিল না। হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে।’’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা ষড়যন্ত্র টের পাচ্ছেন? আওয়ামী লীগের লোকেরা যে ভাষায় কথা বলতেন, ঠিক সেই ভাষায় সেই আওয়ামী স্টাইলে আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু হয়ে গেছে।’’

উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মো.

মফিদুল্লাহর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্র্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ, সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমির উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, জেলা নায়েবে আমির ডা. শেখ মাহমুদুল হক প্রমুখ।
 

ঢাকা/শাহীন/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষ চিন্তা করতে পারেনি, তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘আমাদের সন্তানেরা জীবন বাজি রেখে রাস্তায় নেমেছিল, আমরাও তাদের সঙ্গে ছিলাম। তারা ফ্যাসিবাদকে বিদায় করেছে। এক বছর আগেও মানুষ চিন্তা করতে পারেনি যে তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু আজ সারা দেশের জনগণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই সর্বময় ক্ষমতার মালিক। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন এবং ইচ্ছেমতো কেড়েও নেন। তা আমরা জুলাই বিপ্লবে সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছি।’

আজ সোমবার সন্ধ্যায় খুলনার খানজাহান আলী থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘সহযোগী সদস্য সংগ্রহ অভিযান-২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কথাগুলো বলেন।

২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচন নিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘২০১৪ সালে তারা ষড়যন্ত্র করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করেছিল। কেউ নির্বাচনে যায়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল ইতিহাসের আরেক কালো অধ্যায়। যেখানে রাতেই ভোট হয়ে গিয়েছিল। আর এসব নির্বাচনে হাসিনাকে সঙ্গ দিয়েছে জাতীয় পার্টি। আমরা একটা কালো যুগ পার করেছি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার মানুষের সব অধিকার হরণ করেছিল। মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। মানুষকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে দেয়নি। তারা মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেয়নি।’ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘যারা হাত-পা হারিয়েছে, যারা নির্যাতিত হয়েছে, তারা কখনোই এসব খুনিকে ক্ষমা করবে না। খুনিদের বিচার করতে হবে এবং সব স্তরে সংস্কার করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে, যেখানে কালোটাকা ও পেশিশক্তির প্রভাব থাকবে না। নির্বাচন জনগণের অধিকার। জনগণই তাঁদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। যাঁরা নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির ব্যবহার করতে চাইবেন, জনগণ তাঁদের প্রতিহত করবেন।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতার দম্ভে মানুষের ওপর লাগামহীন জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবিলা না করে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জেল-জুলম, গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। তারা মনে করেছিল যে তাদের এমন অপশাসন ও দুঃশাসন কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী হবে। কিন্তু আল্লাহ জালিমদের ছাড় দিলেও ছেড়ে দেন না।’

ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ন্যায়বিচার থাকবে, বেকারত্ব ও চাঁদাবাজি থাকবে না। যেখানে মা-বোনেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে না। আমরা সাম্যের ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই।’

খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও বায়তুল মাল সেক্রেটারি হাফেজ আমিনুল ইসলাম। গণসংযোগের সময় স্থানীয় মার্কেটের ব্যবসায়ী, পথচারী, স্থানীয় বাসিন্দা, গাড়িচালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দাওয়াত দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানুষ চিন্তা করতে পারেনি, তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল