শ্রেণিকক্ষে শিক্ষিকাকে সিঁদুর পরালেন ছাত্র
Published: 30th, January 2025 GMT
বিভাগীয় প্রধানের পরনে ছিল লাল বেনারসি, গলায় গোলাপ-রজনীগন্ধার মালা। শ্রেণিকক্ষে তাঁর সিঁথিতে সিঁদুরে পরিয়ে দিচ্ছেন প্রথম বর্ষের ছাত্র, সেখানেই হয় তাদের মালাবদল। শ্রেণিকক্ষই যেন হয়ে গেল ছাঁদনাতলা। শিক্ষিকা-ছাত্রের ‘বিয়ের’ এমন রোমঞ্চকর দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করেন ছাত্রের সহপাঠীরা। এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতের নদিয়ার হরিণঘাটার মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি বা ম্যাকাউট বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ছাত্র-শিক্ষিকার ‘বিয়ের’ সেই ভিডিও মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে নেট দুনিয়ায়। শুরু হয় শোরগোল। তবে প্রশ্ন উঠেছে, এটা কি সত্যি বিয়ে ছিল না কি অভিনয়? যদিও ‘বিয়ের’ ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ওই অধ্যাপিকা তথা অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজি বিভাগের প্রধানকে ছুটিতে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ছাত্র-শিক্ষিকার আলোড়ন তোলা ‘বিয়ের’ ঘটনা ঘটে, যার সাক্ষী ছিলেন ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীরা।
এদিকে ‘বিয়ের’ ভিডিও দেখে বিভাগীয় প্রধানকে তড়িঘড়ি ছুটিতে পাঠিয়ে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রেরও খোঁজ মিলছে না। এ নিয়ে সহপাঠীরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য তাপস চক্রবর্তী বলেন, ‘বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। শ্রেণিকক্ষে তাঁর এমন আচরণের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। মৌখিকভাবে তিনি তার জবাবও দিয়েছেন। শিক্ষিকা দাবি করেছেন, একটি প্রজেক্টের জন্য শ্রেণিকক্ষে এমন “অভিনয়” করা হয়েছিল।’
কিন্তু মালাবদল, সিঁদুরদান প্রজেক্টের অংশ হলে এবং পুরো বিষয়টিই ‘অভিনয়’ হলে বিভাগীয় প্রধানকে কেন ছুটিতে পাঠানো হল সেই ব্যাখ্যা অবশ্য দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।