ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ববি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা
Published: 5th, February 2025 GMT
ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ এনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী আব্দুল কাদির সোহানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক নারী শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত সোহান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টায় ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী বাদী হয়ে বরিশাল বন্দর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে, মামলায় অভিযুক্ত আব্দুল কাদির সোহানকে গ্রেপ্তার করেছে বন্দর থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীকে প্রায়ই প্রেমের প্রস্তাব দিতেন অভিযুক্ত আব্দুল কাদির সোহান। ভুক্তভোগী গতকাল মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১ এর ষষ্ঠ তলায় সহপাঠির সঙ্গে পড়াশুনা করছিলেন। সাড়ে ৪টার দিকে অভিযুক্ত সোহান তাকে কল দিয়ে সিড়িতে নিয়ে যান। সেখান থেকে ভুক্তভোগীকে টেনে-হিঁচড়ে ষষ্ঠ তলা সিড়ির উপরের ছাদে নিয়ে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেন।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, দুজনের মধ্যে ৪ মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছে। ঘটনার সময় মেয়েটির চিৎকার শুনে অন্যান্য সহপাঠীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে সহপাঠীদের সহযোগিতায় ভুক্তভোগী নিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ও ছাত্র উপদেষ্টা কাজী মো.
এ নিয়ে দুই বিভাগের শিক্ষকদের উপস্থিতিতে কয়েক দফায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আলোচনা করেন। একপর্যায়ে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থান নেন। পরে আলোচনা শেষে প্রক্টর, দুই বিভাগের শিক্ষক ও ভুক্তভোগী থানায় এসে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেন।
মঙ্গলবার অভিযুক্ত আব্দুল কাদির সোহান ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, “তার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আমি তাকে খুঁজতে যাই। একপর্যায়ে লিফ্টের ষষ্ঠ তলায় গিয়ে তাকে পাই এবং তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা জড়িয়ে পড়ি। কিন্তু ধর্ষণচেষ্টার কোন ঘটনাই ঘটেনি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ টি এম রফিকুল ইসলাম বলেন, “ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে আলোচনা করি ও উপাচার্য জানাই। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীকে একাডেমিক শাস্তি যাতে হয়, সে বিষয়টি নিয়ে কাজ করবে। পাশাপাশি আইনি সহায়তায় মেয়েটির পাশে থাকবে।”
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটি গ্রহণ করেছি। আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/সাইফুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় যাত্রীদের বিরোধ মেটাতে গিয়ে মারধরের শিকার স্টেশনমাস্টার
যাত্রীদের বিরোধ মেটাতে গিয়ে গাইবান্ধা রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার আবুল কাশেম মারধরের শিকার হয়েছেন। ওই ঘটনার একটি ভিডিও গতকাল শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
৩৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, স্টেশনমাস্টার আবুল কাশেম ও এক ব্যক্তি পরস্পরের গেঞ্জি ও শার্টের বুকের অংশ চেপে ধরে আছেন। একপর্যায়ে স্টেশনমাস্টার মাটিতে পড়ে যান এবং তাঁকে মারধর করা হচ্ছে। দুজন ব্যক্তি এগিয়ে এসে পরিস্থিতি থামানোর চেষ্টা করলেও মারধর থামেনি। মাটিতে পড়ে যাওয়ার পর স্টেশনমাস্টার উঠে ঘুষি মারলে ওই ব্যক্তি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে ট্রেনের দিকে ঠেলে নিয়ে যান। একপর্যায়ে স্টেশনমাস্টারের গায়ে থাকা জামা ছিঁড়ে যায়।
রেলস্টেশন সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে লালমনিরহাট থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেন গাইবান্ধা স্টেশনে পৌঁছালে শীতাতপ বগিতে দুই যাত্রীর মধ্যে ওঠা–নামা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় স্টেশনমাস্টার নারী যাত্রীদের আগে নামার পরামর্শ দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এক যাত্রী উত্তেজিত হয়ে তাঁর ওপর চড়াও হন এবং মারধর শুরু করেন।
স্টেশনমাস্টার আবুল কাশেম বলেন, ‘দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এ রকম ঘটনার শিকার হব, ভাবিনি। যাত্রীদের সেবা দিতে গিয়েই এমন ঘটনা ঘটেছে।’ তিনি আরও বলেন, ট্রেন ছেড়ে দেওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে কাউকে আটক করতে পারেনি।
রেলস্টেশন সূত্র জানায়, ঈদের পরদিন থেকে আন্তনগর এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোতে ঢাকামুখী যাত্রীর অতিরিক্ত চাপ চলছে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে আন্তনগর লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেন স্টেশনে পৌঁছায়। কিছুক্ষণ পর ট্রেনের শীতাতপ বগিতে দুই যাত্রীর (তাঁদের নাম–পরিচয় জানা যায়নি) মধ্যে ওঠা–নামা নিয়ে বাগ্বিতন্ডা শুরু হয়। এ ঘটনায় রেলওয়ের বোনারপাড়া জিআরপি থানায় একটি মামলা হয়েছে। স্টেশনমাস্টার আবুল কাশেম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
গতকাল রাত আটটার দিকে বোনারপাড়া জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, মারধরের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাঁদের নাম-পরিচয় এখনই বলা যাচ্ছে না।