Samakal:
2025-06-16@17:14:32 GMT

নীল পাখি

Published: 7th, February 2025 GMT

নীল পাখি

নিকারাগুয়ার কবি রুবেন দারিও (১৮ জানুয়ারি ১৮৬৭ - ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯১৬)। একাধারে তিনি সাংবাদিক, কূটনীতিক, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক ও গল্পকার। দারিওকে বলা হয় ‘স্প্যানিশ আধুনিকতার জনক’, বলা হয় ‘দ্য ডিভাইন পোয়েট’। দারিও একসময় বুয়েনস আইরেসে কলম্বিয়ান কনসাল হিসেবে কাজ করেছেন, কাজ করেছেন আর্জেন্টিনার সংবাদপত্র ‘লা নাসিওন’-এর সংবাদদাতা হিসেবেও। ভ্রমণ করেছেন বহু দেশ।

দারিওর চেহারা যদি কেউ চেনে তাহলে তাকে দেখতে পাবে নিকারাগুয়ার সর্বত্র– মুদ্রা, ডাকটিকিট, চুরুট, প্রেসিডেন্ট ভবন, মানাগুয়ার বিমানবন্দর, চিনানদেগার কফিশপ, জাদুঘর, পাঠাগার, পার্ক, হোটেলের প্রবেশপথ, জাতীয় থিয়েটার, এমনকি মানাগুয়ায় একটি সাঁজোয়া ট্রাকেও তার প্রতিকৃতি, ম্যুরাল বা ভাস্কর্য দেখা যেতে পারে। তার প্রতিকৃতি ঝোলানো অবস্থায় দেখা যায় গ্রানাদার অনেক রেস্তোরাঁয়ও।

রুবেন দারিওর পুরো নাম ফেলিক্স রুবেন গার্সিয়া সারমিয়েন্তো। জন্ম নিকারাগুয়ার মেটাপায়। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন, পরিচিত হয়ে ওঠেন ‘বালক কবি’ হিসেবে। তাঁর উল্লেখযোগ্য বইগুলো হলো– ‘আজুল’, ‘পোয়েটিক অ্যান্থলজি’, ‘সংস অব লাইফ অ্যান্ড হোপ’, ‘মার্গারিটা’ ইত্যাদি। ভাষা রক্ষায় নিকারাগুয়ার সরকার তাঁকে ‘জাতীয় বীর’-এর মর্যাদা দিয়েছে। হিস্পানিক ‘সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার নায়ক’ হিসেবে পরিচিত এ কবির জন্মদিন প্রতিবছর রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন করে দেশটি।

‘আজুল’ (নীল) দারিওর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রচনা। গল্প ও কবিতার এই সংকলনটি প্রকাশিত হয় ১৮৮৮ সালের ৩০ জুলাই, চিলিতে। এর একটি গল্প ‘ইল পাখারো আজুল’ (নীল পাখি)। মূল স্প্যানিশ থেকে গল্পটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন হোসে হিডালগো, সেখানে থেকে এটি বাংলায় ভাষান্তরের চেষ্টা করা হলো।

*

প্যারিস এমন এক শহর, যেখানে হাস্যরস ও বিষণ্নতা অদ্ভুতভাবে মিশে থাকে। এ শহরেরই একটি আড্ডার জায়গা ছিল ‘প্লম্বিয়ে ক্যাফে’। আড্ডার নিয়মিত সদস্যরা ছিল তরুণ ও সাহসী। সবাই নিজেদের শিল্পকর্ম নিয়ে প্রাণপণ সংগ্রাম করে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে কে নেই! আছে চিত্রশিল্পী, ভাস্কর ও লেখক। কবি! হ্যাঁ, তা তো আছেই।
তবে সবার প্রিয় ছিল গারসিন। সে একটু বিষণ্ন প্রকৃতির, অ্যাবসিন্থের মতো তেতো মদের বোতল সব সময় তার সঙ্গী। কিন্তু গারসিন কখনও মাতাল হতো না, শুধুই স্বপ্নে মগ্ন এক নায়ক ছিল সে। নিখুঁত বোহেমিয়ান এবং অসম্ভব সৃজনশীল। ছিল অসাধারণ এক তাৎক্ষণিক কবিতা রচয়িতা।

প্লম্বিয়ে ক্যাফের সেই ভাঙাচোরা ঘরটিতে আমাদের উচ্ছল আড্ডা হতো নিয়মিত। অগোছালো ছোট্ট সে ঘরের দেয়ালের প্লাস্টার ধুলোয় ভরে থাকত। সে দেয়ালে ছিল ভবিষ্যতের ধ্রুপদি শিল্পকর্মের আঁচড়, নানা অঙ্গভঙ্গির স্কেচ, পরিকল্পনার খসড়া, হিজিবিজি রেখা আর একের পর এক কবিতার ছত্র– সবই ছিল আমাদের প্রিয় গারসিনের বাঁকা হাতে লেখা।

আসলে গারসিনই ছিল আমাদের নীল পাখি। তোমরা কি জানো না, কেন তাকে এই নামে ডাকা হতো? আমরা সবাই মিলে তাকে এই নাম দিয়েছিলাম। শুধু খামখেয়ালি করে দেওয়া নাম নয়, উপযুক্ত কারণও ছিল।

গারসিন ছিল অন্তর্মুখী, গভীর চিন্তা ও বিষণ্নতায় নিমগ্ন এক কবি। যখন আমরা সবাই হাস্যরসে মেতে উঠতাম, তাকে জিজ্ঞেস করতাম, কেন সে দুঃখী? তখন সে ভ্রুকুটি করত। মাথা তুলে ছাদের দিকে তাকিয়ে কষ্টসাধ্য এক হাসি দিয়ে বলত, “বন্ধুরা, তোমরা জানো কি? আমার মস্তিষ্কে একটি নীল পাখি বন্দি, তাই।”

বসন্ত এলেই গারসিন প্যারিসের নতুন নতুন গ্রামের দিকে ঘুরতে যেতে ভালোবাসত। তার মতে, উদ্যানের পরিবেশ শরীরের জন্য ভালো। বনভূমির বাতাস তার ফুসফুসে স্বস্তি দিত, কবি এসে আমাদের তা বলত। 

ভ্রমণে গেলে সে বেগুনি ফুল ও কবিতার নোটবুক নিয়ে ফিরত। এগুলো ছিল পাতার মৃদু ঝরে পড়ার আওয়াজে লেখা, আকাশে মেঘহীন বিস্তৃতির মতো। বেগুনি ফুলগুলো ছিল তার প্রতিবেশী নিনির জন্য– সে এক গোলাপি গালওয়ালা সুন্দরী, যার চোখ ছিল গভীর নীল।

আর কবিতাগুলো ছিল আমাদের জন্য। আমরা সেগুলো পড়ে তার প্রশংসা করতাম। গারসিন ছিল প্রকৃত প্রতিভাবান। আমরা বিশ্বাস করতাম, একদিন তার সময় আসবে। গারসিন তার নতুন কবিতা আওড়ে যেত, “ওহ, নীল পাখি উড়ে যাবে অনেক উঁচুতে!” আমরা বলতাম, “বাহ! অসাধারণ! ছেলেটি আসলেই এক বিস্ময়!” সবাই তাকে ভালোবাসত, সবাই প্রশংসা করত।

গারসিনের বিশ্বাস ছিল: 
ফুলের মধ্যে সেরা যার রং সুন্দর নীল। 
রত্নের মধ্যে সেরা নীলপাথর। 
বিশ্বের মধ্যে সেরা আকাশ ও ভালোবাসা– এটা ছিল নিনির চোখের মণি। যেমন সে বলত, “মূর্খতার চেয়ে স্নায়ুজনিত ব্যাধি অনেক ভালো।” 

তবে মাঝে মাঝে গারসিন আরও বিষণ্ন হয়ে পড়ত। শহরের মোড়ে মোড়ে ঘুরে বেড়াত, কিন্তু কোনো বিলাসবহুল গাড়ি বা সুন্দরী নারীর দিকে তার দৃষ্টি থাকত না। গাড়িগুলো উদাসীনভাবে চলে যেত, অভিজাত ব্যক্তিরা হেঁটে যেত, অপরূপা নারীরা তার দিকে চেয়ে ঠোঁট চেপে হাসত।

কখনও সে কোনো গহনার দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে হাসত। কিন্তু যখন কোনো বইয়ের দোকানের কাছ দিয়ে যেত, তখন থেমে থাকত। কাচের জানালায় তাকিয়ে বইয়ের ঝলমলে মলাট দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলত। হতাশায় সে আকাশের দিকে মুখ তুলত, ছুটে আসত আমাদের কাছে ক্যাফেতে। উত্তেজিত ও প্রায় অশ্রুসজল হয়ে বলত, “হ্যাঁ, আমার মস্তিষ্কে একটি নীল পাখি বন্দি, এবং সেই পাখিটি মুক্তি চায়।’

এমন সময় একদিন শহরের কিছু মানুষ ভাবতে শুরু করল যে, গারসিনের মানসিক অবস্থা ভালো নয়। একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞকে ঘটনাটি জানানো হলো, তিনিও বিষয়টিকে মানসিক অসংগতি বলে চিহ্নিত করলেন। তার বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ নিয়ে সন্দেহ করার মতো প্যারিসে কেউ ছিল না। স্নায়ুবিজ্ঞানের সব পরীক্ষার পর, সবাই মেনে নিতে বাধ্য হলো যে গারসিন সত্যিই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। অবশেষে, হতভাগা গারসিনকে ‘পাগল’ বলে ঘোষণা করা হলো।

গারসিনের বাবা ছিলেন নরম্যান্ডির এক বৃদ্ধ কাপড় ব্যবসায়ী। একদিন তিনি তাকে একটি চিঠি পাঠালেন: 

“আমি তোমার প্যারিসের পাগলামির কথা সব শুনেছি। যতদিন তুমি এই অবস্থায় থাকবে, আমি তোমাকে এক পয়সাও পাঠাব না। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। এসো, আমার দোকানের হিসাবপত্র দেখো, আর তোমার সেই নির্বুদ্ধিতার পাণ্ডুলিপিগুলো পুড়িয়ে ফেলো। তবেই আমি তোমাকে টাকা দেব।”

সেদিন আমরা প্লম্বিয়ে ক্যাফেতে বসে ছিলাম। চিঠিটি সবার সামনে দাঁড়িয়ে শোনানো হলো। কেউ কেউ হাতে নিয়েও দেখতে চাইল, আবার পড়া হলো:

“তুমি কি যাবে?”
“তুমি কি নেবে না?”
“তুমি কি রাজি?”
“তুমি কি নাকচ করবে?”

আমাদের সবার চোখের সামনে গারসিন চিঠিটি টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলল। শাবাশ গারসিন! চিঠিটি ছিঁড়ে ফেলে কল্পনাকে মুক্তি দিয়ে সে উৎসাহের সঙ্গে কবিতা রচনা করল। কবিতায় শেষ অংশটি ছিল এমন কিছু:

“হ্যাঁ, আমি চিরকাল অলস থাকব,
আর এটাই আমি উদযাপন করি,
যতদিন না মস্তিষ্কে বন্দি থাকা নীল পাখি
মুক্তি পায়!”

তারপর থেকে গারসিন বদলে গেল। তার চরিত্রে আমূল পরিবর্তন এলো। সে কথা বলত বেশি, সব সময় উল্লাসে থাকত, নতুন পোশাক কিনল আর ‘নীল পাখি’ নামে একটি দীর্ঘ কবিতা লেখা শুরু করল। 

প্লম্বিয়ে ক্যাফেতে আমাদের প্রতিরাতের আড্ডায় গারসিন সেই কবিতা পড়ে শোনাত। ওই কবিতায় ছিল এক সুন্দর আকাশ, এক সতেজ গ্রাম এবং ফুলের মধ্যে উঁকি মারা শিশুদের মুখ। আর ছিলেন ঈশ্বর, যিনি সেইসবের ওপর এক নীল পাখি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সেই পাখিটি কবির মস্তিষ্কে আশ্রয় নেয় এবং বন্দি হয়ে পড়ে।

এই ছিল সেই কবিতা: “যখন পাখিটি গান গায়, তখন আনন্দের কবিতা সৃষ্টি হয়। কিন্তু যখন পাখিটি উড়তে চায় এবং তার ডানা ছড়িয়ে দেয়, তখন মস্তিষ্কের দেয়ালে আঘাত করে।” 

কবিতা পড়া শেষে কবি তার কপাল কুঁচকায় এবং এক গ্লাস কড়া অ্যাবসিন্থ পান করে।

একদিন গারসিন এসে বলল, “নতুন খবর! নিনি মারা গেছে। বসন্ত আসে, নিনি চলে যায়।” সেই রাতে গারসিন খুব হাসছিল, অথচ সে ছিল বিষণ্ন। গারসিন বলল, “এখনও কবিতার শেষ অংশ লেখা বাকি। নাম হবে: কীভাবে নীল পাখি উড়ে যায় নীল আকাশে।”

পরদিন সকালে গারসিনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। কোথাও না। আমরা সবাই ক্যাফেতে তাকে খুঁজছিলাম। তারপর আমরা তার ঘরে গিয়ে দেখি– সে বিছানায় শুয়ে আছে, মাথার খুলিটি গুলিতে উড়ে গেছে, রক্তে লাল হয়ে আছে বিছানার চাদর। বালিশের পাশে তার বিখ্যাত কবিতার পাণ্ডুলিপি পড়ে ছিল।

তার শেষ পৃষ্ঠায় লেখা:

“আজ, বসন্তের ফুল ফোটার দিনে, আমি খাঁচার দরজা খুলে দিচ্ছি, হতভাগা নীল পাখিটিকে মুক্ত করে দিচ্ছি।”
ওহ গারসিন! কতজনের মস্তিষ্কেই না বন্দি রয়েছে তোমার মতোই নীল পাখি! 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর ছ ন আম দ র একদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা

রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।

এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।

এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।

সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।

রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ